তিনি ছিলেন মহান বক্তা ও কবি, জেনে নিন বাজপেয়ীর কিছু উদ্ধৃতি যা আপনাকে অনুপ্রাণিত করবে
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী ছিলেন একজন মহান বক্তা ও কবি। এখানে তার কিছু অনুপ্রেরণীয় এবং স্মরণীয় উদ্ধৃতি উল্লেখ করা হল।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী একাধারে ছিলেন অসাধারণ বক্তা ও মহান কবি। ভারতীয় রাজনীতি হোক কি বিশ্বরাজনীতি, বিভিন্ন সময়ে তাঁর করা কিছু উদ্ধৃতি চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছে। 'ধর্মনিরপেক্ষ না হলে ভারত রাষ্ট্রটিই থাকবে না' বা আপনি বন্ধু বাছতে পারেন, প্রতিবেশী বাছাই করা যায় না'- এর মতো উক্তিগুলি ভবিষ্যতকে পথ দেখায়।
বৃহস্পতিবার তাঁর প্রয়াণে শেষ হল একটি যুগের। এই সময়ে আরও একবার ফিরে দেখা যাক বিভিন্ন সময়ে দেশবাসীকে কী বার্তা দিয়ে গিয়েছেন এই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।
অমর হয়ে আছে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়ে করা তাঁর একটি উক্তি। তিনি বলেন, 'আপনি বন্ধু বদলাতে পারেন কিন্তু প্রতিবেশী বদলাতে পারেন না।' তাই তিনি প্রতিবেশীদের সঙ্গেই বন্ধুত্ব করার কথা বলেছিলেন।
তাঁর এক কবিতার লাইনে উঠে এসেছে তিনি বরাবর মাটির কাছাকাছি থাকতে চেয়েছেন - 'হে প্রভু, আমাকে এত উঁচুতে উঠতে দিও না যে আমি অন্য কাউকে আলিঙ্গন করতে পারব না, আমাকে এমন অহংকার থেকে রক্ষা কোরো।'
বিশ্বের দেশগুলিকে তিনি ক্ষুদ্রস্বার্থ থেকে বেরোবার ডাক দিয়েছিলেন - 'আমরা আশা করি বিশ্ব আলোকিত স্বার্থপরতার মেজাজে কাজ করবে।'
একুশ শতকের অর্থনীতি নিয়ে তাঁর অমোঘ উদ্ধৃতি - 'বিশ্বব্যপী পারস্পরিক নির্ভরতা মানে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে অর্থনৈতিক দুর্যোগ উন্নত দেশগুলিতেও প্রভাব ফেলতে পারে'।
ভারতের পরমাণু অস্ত্র গবেষণা নিয়ে তিনি বলেছিলেন, 'আমাদের পরমাণু অস্ত্রগুলি সম্পূর্ণরূপে কোনও প্রতিপক্ষের পরমাণু আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধক হিসাবে তৈরি।'
পাক সেনাবাহিনীর সন্ত্রাসবাদীদের মদত দেওয়া নিয়ে বলেছিলেন, 'সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী জোটে এমন কাউকে সামিল করা উচিত নয় যারা সন্ত্রাসবাদকে সহায়তা, এবং পৃষ্ঠপোষকতা চালিয়ে যায়।'
জীব বৈচিত্র্য কনভেনশনকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, 'জীব বৈচিত্র্য কনভেনশন বিশ্বের দরিদ্রদের জন্য কোন প্রত্যক্ষ সুবিধা দেয়নি।'
রাষ্ট্রসঙ্ঘের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন বাজপেয়ী, 'ঠান্ডা যুদ্ধের পর রাষ্ট্রসঙ্ঘের রমরমার মধ্যে, একটি ভুল ধারণা তৈরি হয়েছিল যে রাষ্ট্রসংঘ যো কোনও জায়গায় সব সমস্যার সমাধান করতে পারে। বাস্তবে রাষ্ট্রসঙ্ঘের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি কেবল ততটাই কার্যকর হতে পারে যতটা এর সদস্যরা এদের হতে দেবে।'
[আরও পড়ুন: শুধু রাজনৈতিক গাম্ভীর্য নয়, শিশুর সারল্যও ছিল অটল বিহারী বাজপেয়ীর, দেখুন নাচের ভিডিও]
নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রসঙ্ঘের ৫৮তম সাধারণ পরিষদে গ্লোবালাইজেশন কীভাবে দারিদ্র্য বিমোচনে সাহায্য করতে পারে তা বোঝাতে গিয়ে বলেছিলেন, 'দারিদ্র বহুমাত্রিক। অর্থের উপার্জনের বাইরেও শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ এবং সাংস্কৃতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের অগ্রগতির উপর দারিদ্রের প্রভাব পড়ে।'
মার্কিন লেখক জেমস লাইন-এর লেখা শিবাজী: হিন্দু কিং ইন ইসলামিক ইন্ডিয়া বইটি নিষিদ্ধ করাতে তাঁর সম্মতি ছিল না জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, 'কোনও বই আপনার ভাল না লাগলে তা নিয়ে বসে আলোচনা করুন। বইটি নিষিদ্ধ করাটা কোনও সমাধান নয়।'
[আরও পড়ুন:অটল বিহারীর প্রয়াণে সবচেয়ে কাছের বন্ধু লালকৃষ্ণ আডবাণী কী বললেন ]