মহাত্মা গান্ধী হত্যাকাণ্ডে আজও উত্তর নেই বহু প্রশ্নের, চতুর্থ গুলি কে চালাল, প্রশ্ন সেখানেও
মহাত্মা গান্ধীকে যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়, সেই ব্যারেটো পিস্তল নিয়ে আজও ধোঁয়াশা রয়েছে, মেলেনি চতুর্থ বুলেটের উত্তরও
জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর ১৪৮তম জন্মদিনে তাঁর মৃত্যু নিয়ে আরও বেশ কিছু রহস্য তুলে ধরলেন কন্সপিরেসি থিওরিস্টরা। সেইসঙ্গে উঠে এল তাঁর হত্যা নিয়েও বেশ কয়েকটি অজানা তথ্য। মহাত্মা গান্ধীকে যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়, সেই বেরেটা পিস্তল নিয়ে আজও ধোঁয়াশা রয়েছে।
১৯৪৮ সালের পুলিশের নথি থেকে জানা গিয়েছে, গোয়ালিয়রের দত্তাত্রেয় পারশুরে যাঁর বেরেটা পিস্তল দিয়েই নাথুরাম গডসে মহাত্মা গান্ধীকে খুন করা হয়, তাঁর আরও একটি বেরেটা পিস্তল ছিল। কিন্তু অদ্ভূতভাবে তাঁর দ্বিতীয় বেরেটার রেজিস্ট্রেশন নম্বর ও গোয়ালিয়রের বাসিন্দা উদয় চাঁদের বেরেটা পিস্তলের রেজিস্ট্রেশন একই। যে পিস্তল দিয়ে মহাত্মা গান্ধীকে হত্যা করা হয়, সেটার রেজিস্ট্রেশন নম্বর ছিল ৬০৬৮২৪। এই পিস্তলই নাথুরাম গডসের হাতে পারশুরে তুলে দিয়েছিলেন। পুলিশ অবশ্য পারশুরের দ্বিতীয় বেরেটা পিস্তলটিকেও বাজেয়াপ্ত করে। কিন্তু একই একই শহরের দুই ব্যক্তির দুটি পৃথক আগ্নেয়াস্ত্রর রেজিস্ট্রেশন নম্বর কীভাবে এক হল তার উত্তর নেই।
গবেষণায় উঠে এসেছে বেরেটা পিস্তলটি ইটালি থেকে ভারতে আসার পর অনেক হাত ঘুরে গোয়ালিয়র পৌঁছয়। দত্তাত্রেয় পারশুরের কাছ থেকে পিস্তলটি যায় জগদীশ প্রসাদ গোয়েলের কাছে, গোয়েল থেকে বন্দুকটি হাতবদল হয়ে যায় গঙ্গাধর দান্দাভাটের কাছে। এই গঙ্গাধরই পিস্তলটি নাথুরাম গডসের হাতে তুলে দিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। অবশ্য পিস্তলটি কীভাবে জগদীশপ্রসাদ গোয়েলের কাছে যায় তারও উত্তর আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। বেরেটা সংস্থার কাছেও ওই সিরিয়াল নম্বরের পিস্তলের মালিকানা নিয়ে কোনও জবাব পাওয়া যায়নি। মহাত্মা গান্ধীর হত্য়াকাণ্ডে গঙ্গাধার দান্দাভাটেকে ফেরার ঘোষণা করা হয়, বেকসুর খালাস করা হয় দত্তাত্রেয় পারশুরেকে এবং জগদীশপ্রসাদ গোয়েলকে অভিযুক্ত হিসেবে দেখানোই হয়নি।
রহস্যের এখানেই শেষ নয়। মহাত্মা গান্ধীর শরীর থেকে যে বুলেট মেলে তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। পঙ্কজ ফড়নিশ নামে এক বীর সাভারকর ভক্ত সুপ্রিমকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছেন। তাঁর দাবি, ৩টি নয়, মহাত্মা গান্ধীকে ৪বার গুলি করা হয়েছিল, এবং চতুর্থ বুলেটই তাঁর প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল। কিন্তু এই চতুর্থ বুলেট কোথা থেকে এল তা আজও রহস্য। হত্যার সময়ে মহাত্মা গান্ধীর প্রপৌত্রী মনুবেন তাঁর পাশেই ছিলেন। তাঁর ডায়েরির পাতা থেকে কয়েকটি লাইন উদ্ধৃত করে পঙ্কজ ফড়নিশে দাবি, মহাত্মার মৃত্যুর পর তাঁর রক্তমাখা শাল থেকে আরও একটি বুলেট পাওয়া যায়। সেই বুলেট কোথা থেকে এল তা নিয়ে নতুন করে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি।