করোনাকালে উদ্বেগজনক ভাবে বাড়ছে চোরাচালান-জালিয়াতি, আর্থিক সঙ্কটই কি মূল কারণ?
গোটা দেশের পাশাপাশি করোনা মন্দার নাগপাশে জর্জরিত বাংলার। যার জেরে পড়েছে আম-আদমির জীবনমান। এমনকী অর্থ সঙ্কট মানুষের জীবনকে রোজই দুর্বিষহ করে তুলেছে। কাজ হারিয়ে সবথেকে বেশি ফাঁপড়ে পড়েছে দেশের অস্থায়ী কর্মী, পরিযায়ী শ্রমিকেরা। দুবেলা পরিবারের মুখে ভাত জোটাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন একমাত্র রোজগেরে সদস্যটিও। আর এই সামাজিক অবনমনের কারণেই বেড়েছে বিভিন্ন সামাজিক অপরাধ।


উদ্বেগজনক ভাবে বাড়ছে চোরাচালান
এই প্রসঙ্গে বুধবার পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের এডিজি (প্রশিক্ষণ) দেবাশীষ রায় বলেন, " প্রতারণা ঠেকাতে বিভিন্ন কৌশল যেমন পুলিশি অভিযান, একাধিক প্রযুক্তির ব্যবহার, উপভোক্তাদের সচেতনতা বৃদ্ধি, একাধিক সরকারি সংস্থা নিয়ে একযোগে কাজ করার পরেও চোরাচালান ও জালিয়াতির ঝুঁকি আগের থেকে অনেকটাই বাড়ছে।" পাশাপাশি তিনি এও বলেন "বিভিন্ন বেআইনি জিনিস যেমন সিগারেট, অ্যালকোহল, ড্রাগ ইত্যাদির চোরাচালানকারীদের ডেরায় প্রায়শই চলছে পুলিশি অভিযান। কিন্তু এই সমস্ত অবৈধ পেশার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের অর্থনৈতিক অবস্থ আগের থেকে অনেক খারাপ হয়েছে।"

আর্থিক সঙ্কটে বাধ্য হয়েই যোগ অবৈধ পেশায়
এমনকী দেশজোড়া মন্দাদশার মধ্যে এই সমস্ত অবৈধ চোরাচালান বাজেয়াপ্ত করায় চাপে পড়ছে ছোট চোরাচালানকারী ও অসাধু ব্যবসায়ীরা। যদিও মূল মালিকপক্ষের বিশেষ ক্ষতি হচ্ছে না তাতে। কিন্তু রুটি-রোজগারে টান পড়ছে তৃণমূল স্তরের চোরচালানকারীদের। যাদের মধ্যে অনেকেরই আবার এই পেশায় সদ্য হাতেখড়ি হয়েছে। এমনকী পারিবারিক অনটনের কারে একপ্রকার বাধ্য হয়েই আয়ের জন্য অসাধু পন্থা অবলম্বনে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে।

কি বলছেন ফিকি ক্যাসকেডের চেয়ারম্যান
বুধবার ফিকি ক্যাসকেডের তরফে 'জালিয়াতি ও চোরাচালান প্রতিরোধ' (অর্থনীতি ধ্বংসকারী চোরাচালান ও জালিয়াতি কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কমিটি) বিষয়ক একটি সক্ষমতা নির্মাণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। সেথানেই নিজের পর্যবেক্ষন জানান পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের এডিজি (প্রশিক্ষণ) দেবাশীষ রায়। এদিকে ফিকি ক্যাসকেডের চেয়ারম্যান অনিল রাজপুত বলেন, "পুলিশ বিভাগ আমাদের দেশের প্রাথমিক আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বৈধ ব্যবসার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে পুলিশই। বর্তমানে চোরাচালানের বাড়বাড়ন্তের যুগে পুলিশ বিনা সঠিক উপায়ে ব্যবসা পরিচালনা করা কার্যত অসম্ভব।"

কোন ধরণের অপরাধের প্রবণতা সবথেকে বেশি বাড়ছে
এদিকে পরিসংখ্যান বলছে করোনাকালে ধর্ষণ, ছিনতাই, জুলুমবাজি, ভয় দেখানো, বেআইনি দখল সহ একাধিক সামাজিক অবরাধের পরিমাণ অনেকাংশে বেড়েছে। এমনকী অসভ্য বর্বর আচরণ করছে আপাত সুশীল সমাজ৷ তবে নারী ও শিশু ধর্ষণের ঘটনা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি এবং বিকৃত যৌনাচারের ঘটনাই পুলিশকে সর্বাধিক ভাবিয়ে তুলেছে। অন্যদিকে জালিয়াতি ও চোরাচালানের ঘটনাও নজর কাড়ছে গোটা বিশ্বের।