দিল্লিতে হিংসায় ব্যবহৃত অস্ত্র পাচার হয়েছে কোথা থেকে!রাজধানীতে গুণ্ডা প্রবেশ নিয়ে চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট
গত কয়েকদিনে দিল্লি দেখেছে একের পর এক মৃতদেহ। হিংসা বিধ্বস্ত রাজধানীর বহু রাস্তায় একাধিক তরুণের হাতে বন্দুক দেখেছে শহর। কিন্তু এই পরিমাণ, অস্ত্রশস্ত্র রাজধানীর বুকে আচমকা ঢুকে গেল? বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেছেন, 'এই পাত্র গত ২ মাস ধরে উত্তপ্ত হচ্ছিল'। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, 'হিংসায় জড়িতরা বহিরাগত'। এমন মন্তব্যের পর প্রশ্ন উঠছে কিভাবে দিল্লির বুকে এত অস্ত্র, এত বহিরাগত গুণ্ডা ঢুকতে পেরেছে? গোয়েন্দাদের কাছে কোন খবর ছিল? তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। আর এই সমস্ত উত্তর দিচ্ছে একটি সাম্প্রতিক প্রকাশিত রিপোর্ট। যা তুলে ধরেছে সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যম।
কোথা থেকে আনানো হয় 'গুণ্ডা' দের!
তদন্ত রিপোর্ট বলছে, দিল্লির পার্শ্ববর্তী হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশ থেকে গুণ্ডাদের নিয়ে আসা হয়েছে। বেশিরভাগ গণ্ডাই উত্তরপ্রদেশের লোনি, গাজিয়াবাদ, বাগপেট থেতে এসেছে বলে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবারই দিল্লি পুলিশ গোটা মামলা হস্তান্তর করেছে ক্রাইম ব্রাঞ্চকে। দুটি এসাইটি গঠিত হয়েছে। আর তার তদন্তেই উঠছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
দিনের আলোয় পর পর হত্যাকাণ্ড
২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে জ্বলছে দিল্লি। উত্তরপূর্ব দিল্লির পথে একের পর এক মানুষের মৃতদেহ লুটিয়ে পড়তে দেখেছেন স্থানীয়রা। কোনও ভয়ডর ছাড়াই পুলিশের সামনে বন্দুক উঁচিয়ে হত্যাকারীরা একে অপরের দিকে তেড়ে যায়। মুহূর্তে ১০ জনের মৃত্যু হয় ঘটনাস্থলেই। যে বিষয়টিও নজরে রাখছেন তদন্তকারীরা।
পিস্তলের ব্যবহার ও তদন্তকারীরা যা জানতে পারছেন..
জানা গিয়েছে, দিল্লি হিংসায় পিস্তলের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি হয়েছে। হরিয়ানা ও উত্তরপূর্ব উত্তরপ্রদেশ থেকে এই সমস্ত অস্ত্র ধীরে ধীরে ঢুকেছে রাজধানীর বুকে। জানা গিয়েছে, মধ্যপ্রদেশ, বিহারের মুঙ্গেরের মতো জায়গায় একাধিক অবৈধ অস্ত্র কারখানার পর্দা ফাঁস হওয়ার পর অস্ত্র ব্যবসায়ীরা দিল্লি সংলগ্ন এলাকায় ডেরা পেতে বসে। আর তাতেই উস্কানি পায় হিংসা।
৩ হাজার টাকায় মিলেছে পিস্তল!
হিংসার ঘটনায় ধৃতদের তরফে একজন জানিয়েছে , সে ৩ হাজার টাকায় পিস্তল কিনেছিল। শুধু তাই নয় দেড় থেকে ১০ হাজারের মধ্যেও সহজে মিলেছে বন্দুক। এদিকে দিল্লি পুলিশ প্রায় ৬০ টি স্বয়ংক্রিয় বন্দুক উদ্ধার করেছে দাঙ্গাপ্রবণ এলাকা থেকে। এমন অবৈধ বন্দুকের রাজধানী প্রবেশ ভালোভাবে দেখছেন না গোয়েন্দারা।
বহিরাগতদের সঙ্গে দিল্লি যোগ !
কেন উত্তরপ্রদেশ থেকে বহিরাগতরা ঢুকেছে? কতদিন ধরে অমন চলেছে? কে বা কারা তাদের মদত দেয় এমন হিংসায় যোগ দিতে? এই প্রশ্ন সামনে নিয়েই তদন্ত এগিয়ে যাচ্ছে। বহিরাগতদের সঙ্গে সিএএ বিক্ষোভের সময় সীলামপুরের হিংসার ঘটনার যোগও দিল্লি পুলিশ উড়িয়ে দিচ্ছে না। পুলিশি তদন্ত বলছে, স্থানীয়দের সঙ্গে মিশে গিয়েছিল বহিরাগতরা। তারপরই লাঠি, পাথরের ব্যবস্থা সম্পন্ন হয়। এলাকার জনগণ সম্পর্কে খুব ভালোভাবে রেইকি করেছে এমন বহিরাগতরা।