ধীরে হলেও দেশে করোনা আক্রান্ত–মৃত্যুর সংখ্যাটা বেড়ে চলেছে, শীর্ষে মহারাষ্ট্র, গুজরাত ও রাজস্থান
ধীরে হলেও দেশে করোনা আক্রান্ত–মৃত্যুর সংখ্যাটা বেড়ে চলেছে, শীর্ষে মহারাষ্ট্র, গুজরাত ও রাজস্থান
দেশে করোনা ভাইরাসে সংক্রমণের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক জানিয়েছে যে গত দু’দিনে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০,৪৭১–এ। বুধবার সন্ধ্যায় মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এই তথ্য জানানো হয়। আগের ৪৮ ঘণ্টার সঙ্গে তুলনা করলে এই হার ধীরগতিতে বেড়েছে, যেখানে ১৯ শতাংশ বেড়ে সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ১৭,৬৫৬–এ।
ধীরগতিতে হলেও ভারতে বাড়ছে সংক্রমণ–মৃত্যুর হার
এ পর্যন্ত এ সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা ২৭ শতাংশ বেড়েছে (রবিবার সন্ধ্যা থেকে বুধবার সন্ধ্যার মধ্যে)। এটি আগের তিন দিনের তুলনায় কিছুটা দ্রুত, যেখানে নিশ্চিত কেসের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ২৬ শতাংশ। যদিও গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভারতের কোভিড-১৯ হার সামান্য কমে গিয়েছে, জাপান, ইন্দোনেশিয়া এবং পাকিস্তানের মতো এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলি ভারতের তুলনায় অনেক বেশি এগিয়ে রয়েছে। অন্যদিকে অন্যান্য দেশের তুলনায় সিঙ্গাপুরে আক্রান্তের সংখ্যা বেশ অনেকটাই বেশি। তবে পাশ্চাত্য দেশগুলির সঙ্গে যদি তুলনা করা যায় যেখানে করোনায় প্রাণঘাতীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, যদিও ভারত সহ এশিয়ান দেশগুলিতে মৃত্যুর হার অনেকটাই সমতলে রয়েছে।
ন'দিন আগে ভারতে যে কেসের সংখ্যা ছিল তা এখন দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। যদিও প্রত্যেক চারদিন অন্তর সংক্রমণের সংখ্যা দ্বিগুণ হলেও এপ্রিলের প্রথম দিকের তুলনায় এই হার অনেকটাই ধীরগতিতে এগোচ্ছে। ভারতের মৃত্যুর হারও অনেকটাই কম। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ভারতে মৃত্যুর হার ছিল ৬৫২, যা ন'দিন আগের তুলনায় দ্বিগুণ। এখনও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে তা দেখে মনে হচ্ছে পরবর্তী চারদিনে তা ৩০ হাজারে পৌঁছাবে।
মহারাষ্ট্রের পর গুজরাত–রাজস্থানে বাড়ছে করোনা কেস
কোভিড-১৯-এ সক্রিয় কেসের শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র, এই রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৪,২৪৮ জন আক্রান্ত। মৃত্যু ও সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যা সহ আক্রান্ত মিলিয়ে। বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। গুজরাত দ্বিতীয় নম্বরে রয়েছে (২,০৩৩), রাজস্থান (১,৫৪৬)। ১,৪৯৮ সক্রিয় কেস নিয়ে দিল্লি চতুর্থ নম্বরে রয়েছে, দিল্লির পরই তালিকায় নাম রয়েছে মধ্যপ্রদেশের (১,৩৬৪)। শীর্ষে পাঁচটি রাজ্যকে মিলিয়ে দেশে করোনা আক্রান্তের হার ৬৭% এবং শীর্ষ দশটি রাজ্য মিলিয়ে দেশে ৯২% কেস রয়েছে।
সাতদিনে করোনা কেস বেড়েছে তিন রাজ্যে
বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশে সক্রিয় কেসের সংখা ছিল ১৫,৮৫৯টি। এটা প্রথমের সময়ের আক্রান্তের সংখ্যা যা আগামী দিনে রাজ্যজুড়ে পরিবর্তন হতে চলেছে। বলা হয়েছে যে রাজ্যজুড়ে পরীক্ষার ফল অসম এবং যদি সঠিকভাবে করোনার টেস্ট করা হয় তবে আসল সংখ্যাটা পাওয়া যাবে যেটা অনেকটাই বেশি বলে জানা গিয়েছে। গত সাত দিনে মহারাষ্ট্র, গুজরাত ও মধ্যপ্রদেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। এই সময়ে এই তিনটি রাজ্যে নতুন সক্রিয় কেসের হার ৬৭ শতাংশ। আবার ওই একই সময়ে মৃত্যুর হারও বেড়েছে এই তিন রাজ্যে। গত সাতদিনে এই রাজ্যগুলিতে ৬৩ শতাংশ মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
গত দু’দিনে করোনা আক্রান্ত বেড়েছে পাঁচ জেলায়
এখনও পর্যন্ত ৪৩২টি রাজ্যে নিশ্চিত আক্রান্তের সংখ্যা পাওয়া গিয়েছে। গত দু'দিনে মুম্বই, পুনে, আহমেদাবাদ, সুরাত ও জয়পুর জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি পাওয়া গিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে এই পাঁচটি রাজ্যে মোট ৫১ শতাংশ নতুন কেসের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। জেলাগুলির মধ্যে মুম্বই (৩,৭৪৬)-এ সবচেয়ে বেশি সংখ্যক করোনা কেস, এরপরই গুজরাতের আহমেদাবাদ (১,৫০১), মহারাষ্ট্রের পুনে (৯৪৫), মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর (৯২৩) ও রাজস্থানের জয়পুর (৭২০)। পাঁচটি শীর্ষ রাজ্য মিলিয়ে দেশজুড়ে করোনার হার মোট ৩৭ শতাংশ। এছাড়াও অন্যান্য উচ্চ করোনা জেলাগুলি হল দিল্লি (৪৮৪), তেলেঙ্গানার হায়দরাবাদ (৪৭৯), মহারাষ্ট্রের থানে (৪৭৭), গুজরাতের সুরাত (৪১৫) ও তামিলনাড়ুর চেন্নাই (৩৭৮)। শীর্ষ এই দশ জেলা মিলিয়ে দেশজুড়ে ৪৭ শতাংশ নিশ্চিত কেস রয়েছে। ভারতের বেশিরভাগ হটস্পট হলে শহরের সমৃদ্ধ জেলাগুলি, এই অঞ্চলগুলিতেই সবচেয়ে বেশি আঘাত হেনেছে করোনা।
প্রতীকী ছবি
লকডাউন শিথিল হতেই অফিসে যাওয়ার হিড়িক, বেঙ্গালুরুর রাস্তায় জাম!