ঝাড়খন্ডে কিশোরীকে গণধর্ষণ ও হত্যা মামলায় গ্রেফতার ১৬ জন, এখনও পলাতক মূল অভিযুক্তরা
ঝাড়খণ্ডের ছাতরার এক ১৬ বছর কিশোরীকে গনধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে ওই কিশোরীকে তার বাড়িতে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়।
ঝাড়খণ্ডের ছাতরার এক ১৬ বছর কিশোরীকে গনধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে ওই কিশোরীকে তার বাড়িতে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়। তার আগের রাতে চারজন মিলে তাকে ধর্ষণ করেছিল।
ঝাড়খন্ড পুলিশ জানিয়েছে, মোট ২০ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে চারজনের এখনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। জানা যাচ্ছে এই চারজনই গনধর্ষণে সরাসরি জড়িত ছিল। পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, 'মূল অভিযুক্তরা পলাতক। এই মামলার তদন্তের জন্য একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে'।
কিশোরীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে বৃহস্পতিবার রাতে চারজন দুষ্কৃতী মেয়েটিকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়। দুষ্কৃতীরা প্রত্যেকেই মদ্যপ অবস্থায় ছিল। সেই সময় পরিবারের বাকি সদস্যরা এক আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে মেয়েটির বাবা ঘটনার কথা জানতে পেরে পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে অভিযোগ জানান। প্রধান ও পঞ্চায়েতের বাকি সদস্যরা ওই পরিবারকে ব্যাপারটি মিটিয়ে নেওয়ার কথা বলে। ধর্ষকের শাস্তি নির্ধারণ করা হয় কানধরে একশো বার ওঠবোস এবং ৫০,০০০ টাকা জরিমানা!
পঞ্চায়েতে অভিযোগ জানানোতেই এই পরিবারের ওপর চটে যায় অভিযুক্তরা। ধর্ষিতার বাবা-মা'কে বেধারক মারধর করে। মারের হাত থেকে বাঁচতে তাঁরা পালিয়ে গেলে মেয়েটির ওপর চড়াও হয় অভিযুক্তরা এবং তাকে ঘরের মধ্যেই জীবন্ত জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
মেয়েটির বাবা জানিয়েছেন, মেয়ের মুখ থেকে ধর্ষণের কথা জানতে পেরে রাতেই তাঁরা গ্রামের মাতব্বরদের কাছে গিয়েছিলেন। তাঁদের শুক্রবার সকালে আসতে বলে পঞ্চায়েত। সকালে পঞ্চায়েত জরিমানার কথা বলতেই অভিযুক্ত ব্যক্তি ও তার সঙ্গীরা রেগে গিয়ে ধর্ষিতার পরিবারের লোকজনদের মারতে শুরু করে। প্রাণ বাঁচাতে তাঁরা ছুটে পালিয়ে যান। আধঘণ্টা পরে বাড়িতে ফিরে দেখেন, ঘরের মধ্যে মেয়ের দগ্ধ মৃতদেহ পড়ে আছে।
মূল অভিযুক্তদের এখনও ধরা না গেলেও পুলিশ পঞ্চায়েত প্রধান সহ ঘটনাটির সঙ্গে জড়িত ১৬ জনকে গ্রেফতার করেছে। তারা জানিয়েছে, এই গুরুতর ঘটনাটিকে লঘু করে দেখানোর জন্য গ্রামের পঞ্চায়েতের নেতাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা প্রশাসন মেয়েটির পরিবারকে ২.৫ লক্ষ টাকার আর্থিক সহায়তা দেবে বলে ঘোষণা করেছে।
নাবালিকা ধর্ষণের আইন বদলাতে সংশোধনী বিল পেশ করেছে সরকার। ১৬ বছরের বেশি বয়সী মেয়েদের ধর্ষণের জন্য ন্যূনতম কারাবাসের মেয়াদ বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়েছে। আর ধর্ষিতার বয়স ১৬ বছরের কম হলে অভিযুক্তদের ন্যূনতম ২০ বছরের কারাবাস হবে। কিন্তু এতকিছুর পরেও কোনওভাবেই দেশে ধর্ষণের মতো নৃশংস ঘটনার ছবির কোনও বদল নেই।