আনিস হত্যাকাণ্ডে নয়া মোড়, খুন হননি ছাত্র নেতা, জানাল সিট
এতদিন প্রতিবাদ হচ্ছিল এই বলে যে ছাত্রনেতা আনিস খানকে হত্যা করা হয়েছে। তবে সিটের রিপোর্ট পুরো বিষয়টিকে নতুন রূপ দিয়েছে। বলা হচ্ছে খুন হননি আনিস খান।
আনিস খানের পরিবার দাবি করেছিল যে তাঁদের ছেলেকে খুন করা হয়েছে। তা বদলে গেল সিটের রিপোর্টে। আনিসকে হত্যা করা হয়েছে এই তত্ত্ব খারিজ করে সিটের চার্জশিটে বলেছে যে এটা খুনের ঘটনা নয়। আনিস-কাণ্ডে তদন্তকারীদের চার্জশিট জমা দেওয়া হয় উলুবেড়িয়া আদালতে। আমতা থানার তৎকালীন ওসি-র চার্জশিটে নাম রয়েছে । চার্জশিটে নাম রয়েছে তৎকালীন ওসি দেবব্রত চক্রবর্তীর। এক এএসআই, এক হোমগার্ড ও দুই সিভিক ভলান্টিয়ারের চার্জশিটে নাম রয়েছে।
সিটই চার্জশিট পেশ করবে আনিস খানের মৃত্যুর তদন্ত মামলা কার হাতে যাবে, তা নিয়ে রায় দিতে গিয়ে সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি রাজশেখর মান্থা বলেছেন, এখনও পর্যন্ত তদন্তের যা গতি প্রকৃতি তাতে তিনি মনে করছেন না, তদন্তভার সিবিআই-এর হাতে যাওয়া উচিত। এক্ষেত্রে সিটই চার্জশিট জমা দিক এবং পরবর্তী তদন্ত চালিয়ে যাক।আনিস খানের বাবা সালেন খান বলেছিলেন, এই রায় দিয়েছে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। তারা এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যাবেন। সেখানেো না হলে তাঁরা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্তও যাবেন বলে বলেছিলেন সালেম খান।
প্রসঙ্গত আনিস খানের মৃত্যু তদন্ত চালাতে গিয়ে সিট হোমগার্ড কাশীনাথ বেরা এবং সিভিক ভলান্টিয়ার প্রীতম ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করে। এছাড়াও সাসপেন্ড করা হয়েছিল আমতা থানার দুই পুলিশকর্মীকে। বসিয়ে দেওয়া হয় এক হোমগার্ডকে। যাঁরা ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে টহলদারিতে ছিলেন। গত এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে হাইকোর্টে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট পেশ করে সিট। আদালতে সরকার পক্ষের আইনজীবী জানান, পড়ে গিয়ে আনিস খানের মৃত্যু হয়েছে। আদালতে অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন পুলিশি তল্লাশি আইন মেনে করা হয়নি। পাল্টা আনিস খানের আইনজীবী অভিযোগ করেন, সিট মূল অভিযুক্তদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে।
ঘটনাটি ঘটে ১৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার গভীর রাতে। তাঁর বাবা সালেম খানের অভিযোগ, রাতে পুলিশের পোশাক পরে ৪ জন বাড়িতে আসে। তার আগে ওইদিন স্থানীয় এক জলসায় গিয়েছিলেন। গভীর রাতে বাড়িতে আসেন। বাড়িতে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই রাত প্রায় ১ টা নাগাদ ৪ জন তাঁদের বাড়িতে যান। চারজনের মধ্যে একজনের পুলিশের পোশাক আর বাকি তিনজনের জলপাই রঙের পোশার পরা ছিল। সালেম খানের অভিযোগ এরাই আনিসকে তিনতলায় নিয়ে যায়। এবং সেখান থেকে ফেলে দেয়। এই মৃত্যুর ঘটনার পরেই উত্তাল হয় রাজ্য রাজনীতি। তদন্তের জন্য সিট গঠনের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।