ভারতকে চাপে রাখতে পারমাণবিক অস্ত্রে আধুনিকরণ আনছে চিন, দাবি রিপোর্টে
ভারতকে চাপে রাখতে পারমাণবিক অস্ত্রে আধুনিকরণ আনছে চিন, দাবি রিপোর্টে
গত কয়েক বছরে ভারতে প্রতিরক্ষা বিভাগ অনেক উন্নত হয়েছে। নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে সামরিক বিভাগে। পাশাপাশি অত্যাধুনিক সরঞ্জামে ভারতের সেনাবাহিনী সেজে উঠেছে। কিন্তু তার পরেও দুশ্চিন্তা পিছু ছাড়ছে না ভারতের। নয়াদিল্লির চিন্তার পারদ বেশ খানিকটা বাড়িয়ে পরামাণবিক অস্ত্রকে সামনে রেখে চিন ক্রমেই নিজের ক্ষমতা বাড়িয়ে চলছে। বর্তমানে চিনের কাছে ৩৫০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে। যা ভারতের দ্বিগুন। বিশ্বের অন্যতম দুই শক্তিশালী দেশ রাশিয়া ও আমেরিকার থেকে এই সংখ্যাটা বেশ খানিকটা বেশি। এমনটাই সুইডেনের একটি সংস্থা তাদের রিপোর্টে দাবি করেছে।
সুইডেনের অস্ত্র ব্যবসা ও নিরস্ত্রীকরণ ট্র্যাকিং ওয়াচডগ স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট বা সিপ্রি সোমবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত কয়েক বছরে আন্তর্জাতিক সমীকরণগুলো পাল্টাতে শুরু করেছে। যার জেরে চিন নিজেদের সামরিক দিক থেকে আরও শক্তিশালী করে তোলার ওপর জোর দেয়। মূলত পারমাণবিক প্রতিরোধ ও পাল্টা হামলার ওপর চিনের প্রশাসন জোর দিয়েছে। সিপ্রি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০২১ সাল থেকে চিনের ওয়ারহেড মজুদের সংখ্যা পরিবর্তন হতে থাকে। এই ওয়ারহেডগুলো ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বা পারমাণবিক অস্ত্র বহন করতে পারা বিমানের সাহায্যে ব্যবহার করা যাবে।
সিপ্রি তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, এক দশক আগে পর্যন্ত চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি মূলত তরল জ্বালানিযুক্ত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ওপর নির্ভর করত। এই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো মূল স্থলভাগ থেকে উৎক্ষেপণ করা সম্ভব হতো। তবে কয়েকটি সমুদ্র ভিত্তিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র চিনের ছিল। তবে ২০১৭ সাল থেকে আন্তর্জাতিক সমীকরণগুলো পাল্টাতে থাকে। আমেরিকার সঙ্গে সরাসরি বাণিজ্যিক যুদ্ধে নামে চিন। তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে পাশাপাশি একাধিক বিদেশি হুমকির মুখে পড়তে হয় চিনকে। এরপরেই গত পাঁচ বছর ধরে চিন নিজেদের সামরিক বিভাগকে ঢেলে সাজাতে শুরু করে। বিশেষ করে অত্যাধুনিক পরমাণু অস্ত্রের ওপর চিন জোর দিতে থাকে।
সিঙ্গাপুরে সম্প্রতি শাংরি লা নামের একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন হয়। সেখানে চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়েই ফেংহে দেশের পারমাণবিক অস্ত্র বৃদ্ধি করার কথা স্বীকার করে নেন। তিনি বলেন, চিন যেভাবে পারমাণবিক হামলা প্রতিরোধে নিজেদের প্রযুক্তিগত দিক থেকে উন্নত করেছে, তা প্রশংসার যোগ্য। চিনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর এই বিবৃতির একদিন পরেই সিপ্রির প্রতিবেদনটি প্রকাশ পায়।
অঙ্কে দুর্বল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়ারা! গড় নম্বর ৪০ শতাংশের নিচে, রিপোর্ট এআইসিটিই-এর
সিঙ্গাপুরের সম্মেলনে ফেংহে বলেন, গত পাঁচ দশক ধরে চেষ্টার জেরে চিন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় এই উচ্চতায় পৌঁচেছে। তবে চিনের নিজস্ব নীতি রয়েছে। তিনি দাবি করেছেন, চিন পারমাণবিক অস্ত্রের দিক থেকে নিজেদের ক্ষমতা বাড়ালেও তা আত্মরক্ষার জন্য। চিন কোনওদিন প্রথমেই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে না বলেও তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। জানান, কঠোর পরি্শ্রমের জন্যই চিন সামরিক দিক থেকে এখানে পৌঁছতে পেরেছে। তাঁর দাবি, শুধুমাত্র চিনের জনগণকে পারমাণবিক হামলার হাত থেকে রক্ষা করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল এবং তা কার্যকর করা হয়েছে।