করোনার আঁচ বিমানে, জ্বালানির দাম বাড়তে থাকায় আশঙ্কায় বিমান সংস্থা থেকে যাত্রী প্রত্যেকেই
করোনার আঁচ বিমানে, জ্বালানির দাম বাড়তে থাকায় আশঙ্কায় বিমান সংস্থা থেকে যাত্রী প্রত্যেকেই
বিশ্বজুড়ে মহামারীর তান্ডবে সঙ্কটে অর্থনীতি। তবে অপরিশোধিত তেলের দাম কমলেও, এভিয়েশন টারবাইন ফুয়েল(এটিএফ)-এর দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। এদিকে বিমান সংস্থার মোট খরচের ৩৫%-৫০% এটিএফের জন্য ধার্য থাকে। ফলত রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে উড়ান সংস্থাগুলি এবং স্বাভাবিকভাবেই এর আঁচ পড়তে চলেছে বিমানযাত্রীদের উপর।
খরচ কমাতে অসমর্থ হলে উড়ানের সংখ্যা কমার ইঙ্গিত
প্রায় দু'মাস বন্ধ থাকার ফলে ২৫শে মে থেকে বিমান সংস্থাগুলি দেশের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল চালু করে। একটি বেসরকারি বিমান সংস্থার আধিকারিকের মতে, "এতদিন বন্ধ থাকার পর বিমান চলাচল সবে শুরু হয়েছে। এদিকে জুন মাস থেকে যেভাবে এটিএফের মূল্যবৃদ্ধি শুরু হয়েছে, তাতে বিমান চলাচল স্বাভাবিক রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ছে।"
জুনে পরপর দু'বার এটিএফের মূল্যবৃদ্ধিতে সমস্যায় বিমানসংস্থাগুলি
ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন লিমিটেড(আইওসিএল)-এর তথ্যানুযায়ী, লকডাউনের মধ্যে এটিএফের রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধি ঘটে ১লা জুন, রাজধানী দিল্লিতে মূল্য বাড়ে প্রায় ৫৬.৫%। পুনরায় গত সপ্তাহে দিল্লিতে এটিএফের মূল্য প্রতি কিলোমিটারে ১৬.৩% বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯,০৬৯.৮৭ টাকা। অন্যদিকে ব্লুমবার্গের তথ্যানুযায়ী, গত ১২ মাসে অশোধিত তেলের মূল্য কমেছে প্রায় ৩৫.২৯%। এক বিমান আধিকারিকের মতে, করোনা আতঙ্কে পাল্লা দিয়ে কমেছে যাত্রীসংখ্যা, ফলত আসনের মূল্য বাড়িয়েও অতিরিক্ত ব্যয়বহন করা সম্ভব নয়। তিনি আরও জানান, "এটিএফের ক্ষেত্রে ভারতীয় বিমানসংস্থাগুলি আন্তর্জাতিক উড়ানসংস্থাগুলির থেকে ৪০%-৫০% বেশি খরচ করে। কিন্তু আন্তর্জাতিক লেনদেন বন্ধ থাকায় বিদেশ থেকে কম দামে এটিএফ আমদানি বর্তমানে সম্ভব নয়।"
সরকারি নির্দেশ ও জ্বালানির বর্ধিত মূল্যের সাঁড়াশি আক্রমণে জেরবার উড়ান সংস্থাগুলি
সূত্রের খবর অনুসারে, মে মাসের শেষ সপ্তাহে উড়ান চালু হওয়ার পর থেকে ৩৩%-এরও কম আসন ভর্তি হচ্ছে। এক সিনিয়র আধিকারিকের মতে, "আগামী মাসে হয়তো সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী উড়ান সংস্থাগুলিকে ৫০-৫৫% পর্যন্ত যাত্রী ধারণক্ষমতা বাড়াতে হতে পারে। তবে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি ও কম যাত্রীর দরুণ কতদূর বিমানের সংখ্যা বাড়ানো সম্ভব হবে, তা এখনই বলা দুষ্কর।" এদিকে ধারণক্ষমতা বাড়ানোর প্রসঙ্গে ইন্ডিগো,স্পাইসজেট, গোএয়ার, এয়ার এশিয়া এবং এয়ার ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে কেউই কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
আন্তর্জাতিক উড়ান চলাচলের অপেক্ষায় বিমান সংস্থাগুলি
ভিসতারার এক আধিকারিকের মতে, "যেকোনো বিমান সংস্থার মোট খরচের অধিকাংশ ব্যয় হয় এটিএফের কারণে। এদিকে বিমানে ওঠার চাহিদাও কম। ফলে আমরা বাড়তি সমস্তরকমের খরচা ছেঁটে ফেলে সবকিছু স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি।" রাজ্যের আওতায় থাকা একটি তেল মার্কেটিং সংস্থার আধিকারিকের মতে, "শুধুমাত্র অভ্যন্তরীণ বিমান চালু বলেই সমস্যা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক উড়ান চলাচল স্বাভাবিক হলে আশা করি অবস্থা পুনরায় আগের ঠিক হবে।"
যাত্রীদের উপর চাপতে পারে অতিরিক্ত খরচের বোঝা
মার্টিন কনসাল্টিং এলএলসির প্রধান কার্যনির্বাহী অধিকর্তা মার্ক মার্টিন জানিয়েছেন, "যাত্রীদেরই হয়তো এই অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধির বোঝা বইতে হবে, কারণ উড়ানসংস্থাগুলির কাছে বিমান চলাচল স্বাভাবিক রাখার এটাই একমাত্র পন্থা।" উড়ান বিশেষজ্ঞ মার্ক আরও জানান, "এটা অন্তত স্পষ্ট যে, অশোধিত তেলের দাম কমার কোনোরকম সুবিধা সরকার যাত্রীদের দেবে না। ফলত এটিএফকে জিএসটির আওতায় আনার কাজটি হয়তো তাড়াতাড়ি শুরু হবে। ফলে আসনের মূল্য বাড়বে লাফিয়ে।"
চিনের বাজার কিছু দিনের জন্য ত্যাগ করতে পারে বলিউড