পরিচিতি গোপন রাখতে শ্রদ্ধার মুখও পুড়িয়ে দেয়, পুলিশি জেরায় স্বীকার অভিযুক্ত আফতাবের
দিল্লির পাশবিক হত্যাকাণ্ডে প্রতিদিনই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে উঠে আসছে। যা শুনলে শিরশিরিয়ে উঠছে শরীর। গত ১৮ মে লিভ-ইন পার্টনার শ্রদ্ধা ওয়াকারকে খুন করে ৩৫টি টুকরো করার পর তা ১৮ দিন ধরে লোপাট করেছে অভিযুক্ত আফতাব পুনাওয়ালা। ধৃত আফতাবকে জেরা করছে তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা। সাম্প্রতিক জেরায় অভিযুক্ত আফতাব জানিয়েছে যে শ্রদ্ধা ওয়াকারের দেহ টুকরো টুকরো করার পর সে তাঁর পরিচিতি লোকানোর জন্য শ্রদ্ধার মুখও পুড়িয়ে দেয়।
শ্রদ্ধাকে ২৮ বছরের আফতাব এই বছরের মে মাসে শ্বাসরোধ করে খুন করে এবং এরপর তাঁর দেহ ৩৫ টুকরোয় কেটে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে ফ্রিজে রেখে দেয়। দক্ষিণ দিল্লির মেহুরুলির বাড়িতে এই কাণ্ড ঘটানোর পর একাধিক দিন ধরে মাঝরাতে বেরিযে আফতাব শ্রদ্ধার দেহাংশ শহরজুড়ে ফেলতে থাকে। তবে এত কাণ্ড ঘটানোর পরও পুলিশের হাত থেকে রেহাই পেল না আফতাব। দিল্লি পুলিশের সূত্রের খবর, আফতাব জেরায় এও স্বীকার করেছে যে খুনের পর কীভাবে দেহ লোপাট করতে হয় তা সে ইন্টারনেটে সার্চ করে দেখেছে।
সূত্র মারফৎ এও জানা গিয়েছে যে তদন্তে দিল্লি পুলিশ নতুন তথ্য পেয়েছে। পুলিশ অভিযুক্ত আফতাবের বাড়ি থেকে বকেয়া জলের বিল পেয়েছে, যেখানে সরকার দিল্লিকে ২০ হাজার লিটার জল বিনামূল্যে দিয়ে থাকে।
সূত্রের খবর এও যে পুলিশ প্রতিবেশীদের কাছ থেকে জানতে পারে যে আফতাবের ৩০০ টাকা বকেয়া জলের বিল রয়েছে। সরকার ২০ হাজার লিটার জল বিনামূল্যে দেওয়া সত্ত্বেও কেন জলের বিল বাকি আছে এই দিক থেকে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। আফতাবের ফ্ল্যাটের ওপরে থাকা দুই প্রতিবেশী পুলিশকে জানান যে আফতাবের ৩০০ টাকা বকেয়া জলের বিল বাদে তাঁদের সকলের জলের বিল শূন্য আসে। যা পুলিশের সন্দেহকে বাড়িয়ে তোলে। সূত্রের খবর, 'খুনের পর, আফতাব রক্তের দাগ ধোওয়ার জন্য অতিরিক্ত জল ব্যবহার করেন যার ফলে এই বকেয়া বিল আসে। প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছেন যে আফতাব নিয়মিতভাবে ছাদে গিয়ে বিল্ডিংয়ের জলের ট্যাঙ্ক পরীক্ষা করে আসত।'
প্রসঙ্গত, বিয়ের জন্য ক্রমাগত চাপ দেওয়ার কারণে আফতাব শ্রদ্ধাকে খুন করেছে বলে জেরায় জানিয়েছে। ২০১৯ সালে একটি ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে এদের পরিচয় হয় এবং মুম্বইতে একসঙ্গে একই কলসেন্টারে কর্মরত ছিল। কিন্তু দু'জনেই ভিন্ন ধর্মের হওয়ায় তাদের সম্পর্ক নিয়ে শ্রদ্ধা ও আফতাব দুই পরিবারের তীব্র আপত্তি ছিল। যে কারণে শ্রদ্ধা ও আফতাব মে মাসেই দিল্লি চলে আসে। ১৫ মে তারা ভাড়া বাড়িতে থাকতে শুরু করে এবং ১৮ মে এই নৃশংস ঘটনা ঘটে।