মহারাষ্ট্রের রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে কী বলতে চলেছেন সেনা প্রতিনিধিরা?
মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে তরজার মাঝে বেড়ে ছলেছে রাজনৈতিক চাপানউতর। বিজেপির সঙ্গে ক্রমশই বাড়ছে শিবসেনার দূরত্ব। এরকম পরিস্থিতিতে আজ মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারির সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছে শিবসেনা।
ফলাফল প্রকাশের দশ দিন পরেও সরকার গঠন করা সম্ভব হয়নি মহারাষ্ট্রে। মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে তরজার মাঝে বেড়ে ছলেছে রাজনৈতিক চাপানউতর। বিজেপির সঙ্গে ক্রমশই বাড়ছে শিবসেনার দূরত্ব। এরকম পরিস্থিতিতে আজ মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারির সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছে শিবসেনার প্রতিনিধি দল।
সেনার দাবি ১৭০ বিধায়কের সমর্থন আছে তাদের কাছে
গতকাল শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত দাবি করেন যে তাদের সঙ্গে ১৭০ জন বিধায়কের সমর্থন আছে। সেই সংখ্যাটা ১৭৫-ও হয়ে যেতে পাড়ে। এই পরিস্থিতে মুখ্যমন্ত্রী তাদের দলের হবে বলেই দাবি করেন তিনি। তিনি আরও জানান, রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে বিধানসভার একক বৃহত্তম দলকে সরকার গঠনের সুযোগ দেওয়ার কথা বলবেন রাউত। তবে পরে তারা সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ না করতে পারলে যেন বাকিদের সুযোগ দেওয়া হয়।
সরাকার গঠনের সমীকরণ
সদ্যপ্রকাশিত মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি পেয়েছে ১০৫টি আসন, শিবসেনার ঝুলিতে এসেছে ৫৬টি আসন। ২৮৮ আসন বিশিষ্ট মহারাষ্ট্র বিধানসভায় সরকার গড়তে প্রয়োজন ১৪৫টি আসন। দুই দলের সম্মিলিত সংখ্যা খুব সহজেই ম্যাজিক ফিগার অতিক্রম করেছে। কিন্তু সরকার গঠনের ক্ষেত্রে বাধ সেধেছে সেনার মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবি। ফলপ্রকাশের পরেই সেনা ফিফটি-ফিফটি ফর্মুলা নিয়ে সরব হয়। তবে এই বিষয়ে প্রথমে উচ্চবাচ্য না করলেও বিজেপি ঘুর পথে বুঝিয়ে দেয় যে মুখ্যমন্ত্রিত্বের কুর্সি ছাড়বে না তারা। এই রেষারেষির মধ্যেই ঘোষণা করা হয় দেবেন্দ্র ফড়নবিশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণের দিন। এদিকে সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে কংগ্রেসের ঝুলিতে এসেছে ৪৪টি ও এনসিপি-র ঝুলিতে রয়েছে ৫৪টি। এদের সঙ্গে সেনার ৫৬টি আসন যোগ করলে খাতায় কলমে সরকার গঠন সম্ভব।
বিজেপি-সেনা মনোমালিন্যের মাঝেই ময়দানে শরদ পাওয়ার
এদিকে বিজেপ-সেনা মনোমালিন্যর মধ্যেই ময়দানে নামেন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার। দিওয়ালির পরে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন সেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত। পরে সেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গেও কথা হয় পাওয়ারের। এই পরিস্থিতে আজ দিল্লিতে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করে সম্ভাব্য জোট গঠনের বিষয়ে আলোচনা করতে পারেন পাওয়ার। যাপরিস্থিতি সামনে এসেছে, তাতে সরকার গঠনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন তিনি।
সেনা-বিজেপি দূরত্ব বাড়ছে
এদিকে সেনা-বিজেপির দূরত্ব সামনে এসেছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে সরকারের ভূমিকায় অশন্তোষ প্রকাশ করেছেন সেনা প্রধান। এর আগে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশের কড়া সমালোচনা করেছিলেন সেনা প্রধান। দিওয়ালির সময় গণমাধ্যমের সামনে কথা বলার সময় ফড়নবিশ বলেছিলেন, "শিবসেনাও পাঁচ বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবি করতে পারে। তবে দাবি করা আর পাওয়ার মধ্যে ফারাক আছে। দুটো সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। ফিফটি-ফিফটি ফর্মুলায় মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে কোনও চুক্তি হয়নি আমাদের মধ্যে। তাদের কোনও দাবি থাকলে তারা এসে আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসুক। আমরা তাদের দাবির যৌক্তিকতা বিচার করে সিদ্ধান্ত নেব।" এই বক্তব্যর নিন্দা করেছিলেন তিনি।
বিজেপিকে কটাক্ষ সেনা প্রধানের
এছাড়া গত সপ্তাহে সেই রাজ্যে বিজেপির অর্থমন্ত্রী দাবি করেন, ৭ নভেম্বের মধ্যে স্থিতিশীল সরকার গড়া সম্ভব না হলে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হবে। এই মন্তব্যেরও কড়া সমালোচনা করে সেনা প্রধান পাল্টা তো দেগেছিলেন বিজেপির বিরুদ্ধে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, "রাষ্ট্রপতি কী বিজেপি-র পকেটে থাকেন?"