মহারাষ্ট্রের মসনদে বসা শিবসেনার পোস্টারে একইসঙ্গে বালাসাহেব ও ইন্দিরা গান্ধী!
ঠাকরে পরিবার থেকে আজ প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিতে চলেছেন উদ্ধব ঠাকরে। ৩০ বছরের শরিকি সমপর্কে ছেদ ঘটিয়ে প্রথমবার কংগ্রেস-এনসিপির হাত ধরে মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন করতে চলেছে শিবসেনা। অনেক বিশেষজ্ঞের মতেই এই জোটের টেকার সম্ভাবনা ক্ষীণ, কারণ এই দলগুলির মতাদর্শগত বিরোধ। তবে সেই আশঙঅকাকে দূর করতে নতুন উদ্যোগ শিবসেনার। আজ শিবাজি পার্কে উদ্ধবের শপথগ্রহণের আগেই ঠাকরে বাসভবন মাতোশ্রীর বাইরে দেখা গেল এক পোস্টার যাতে বাল ঠাকরে ও ইন্দিরা গান্ধীকে একসঙ্গে দেখা যাচ্ছে।
বালাসাহেরের স্বপ্ন পূরণ
বহু বছর আগের এক ছবিকে শিবসেনা তাদের পোস্টারে জুড়ে দিয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে হাতজোড় করে ইন্দিরা গান্ধীকে স্বাগত জানাচ্ছেন বাল ঠাকরে। পোস্টারের নিচে লেখা, "বালাসাহেব ঠাকরের স্বপ্ন পূরণ। শিবসেনা থেকে হচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।"
ইন্দিরা র বেশ কিছু পদক্ষেপের সমর্থনে ছিলেন বালাসাহেব
ইতিহাসবিদদের মত, বালাসাহেব কংগ্রেস বিরোধী হলেও ইন্দিরা গান্ধীর বেশ কিছু পদক্ষেপের সমর্থনে ছিলেন। এই সব ক্ষেত্রে বহুবার শিবসেনাকে কংগ্রেসকে সমর্থন দিতে দেখাও গিয়েছে। ১৯৭৫ সালে ইন্দিরা গান্ধীর লাগু করা জরুরি অবস্থাকেও সমর্থন করেছিলেন বালাসাহেব। সেই সময় ভারতের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এই সিদ্ধান্তের কঠোর বিরোধিতা করলেও নিজের সমর্থনের হাত ইন্দিরার দিকে বাড়িয়ে দিয়েছিলেন ঠাকরে সিনিয়র।
'বালাসাহেবকে ব্যবহার করেছে বিজেপি'
বুধবার শিবসেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেন, "২৫ বছর ধরে মহারাষ্ট্র ও উত্তরপ্রদেশে নির্বাচনে জিততে কংগ্রেস বালাসাহেবের ছবির সাহায্য নিয়েছে।" এরপর তিনি বলেন উদ্ধবের মুখ্যন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণের মাধ্যমে তাঁরা বালাসাহেবের ইচ্ছে পূরণ করছেন।
১৯৬৬ সালে তৈরি হয় শিবসেনা
১৯৬৬ সালে শিবসেনা তৈরি করেছিলেন বালাসাহেব ঠাকরে। মূলত মারাঠা রাজনীতি ও কর্মক্ষেত্রে মারাঠিদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়া কট্টর হিন্দুত্ববাদী মতবাদ নিয়েই তৈরি হয়েছিল এই দলটি। পাশাপাশি মারাঠি ভাষায় সামনা নামক সংবাদপত্রটিও চালু করেছিলেন তিনি। ২০১২ সালে ১৭ নভেম্বর তিনি মারা যান।
আপাতত ইতি মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক নাটক
এদিকে গত একমাসেরও বেশি সময় যাবত মহারাষ্ট্রে চলেছে চূড়ান্ত রাজনৈতিক নাটক। মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সির দাবিতে ৩০ বছর পুরোনো শরিকি সমপর্ক ছেদ করে শিবসেনা। বিজেপি-শিবসেনার প্রাক্ নির্বাচনী জোট মহারাষ্ট্রের ম্যজিক ফিগার অনায়াসে পার করলেও দুই দলের মুখ্যমন্ত্রিত্বের পদ ছাড়া নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। এর জেরে এনসিপি ও কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলান উদ্ধব। এরই মাঝে অজিত পাওয়ার বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে তিন দিনের জন্য উপমখ্যমন্ত্রী থাকলেও মঙ্গলবার তিনি পদত্যাগ করেন। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেন বিজেপির দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। এর মাঝেও রাষঅট্রপতি শাসন নিয়ে এক প্রস্তর নাটক হয় এই রাজ্য়ে। তবে সব শেষে আজ মহা বিকাশ আঘাড়ি জোটের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিতে চলেছেন উদ্ধব ঠাকরে।