কৃষি বিল অজুহাত মাত্র, বিজেপির উপর আগে থেকেই খাপ্পা ছিল অকালি দল!
খাতায় কলমে পাঞ্জাব নির্বাচনের আরও দেরি রয়েছে। আরও দুই বছর পর সেই রাজ্যে ভোট নির্ঘণ্ট বাজার কথা। তবে সেরাজ্যে গদি ফিরে পাওয়ার বিষয়ে ছক কষতে শুরু করেছিল সুখবীর সিং বাদ, অমিত শাহরা। তবে সেই ক্ষেত্রে, সিনিয়র শরিক অকালিকে যথেষ্ট সম্মান দেওয়া হচ্ছে না, এই অভিযোগ উঠছিল বরাবরই। আর সেই আবহে কৃষি বিল যেন অজুহাত হিসাবে উঠে এল অকালির এনডিএ বিদায় পর্বে।
অমিত শাহর পরিকল্পনায় জল
অকালির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার দখলের ছক কষছিলেন অমিত শাহরা। তবে এনডিএ থেকে সুখবীর সিং বাদলের বিদায় সেই আশা আকাঙ্খায় জল ঢেলে দিল। আর এর পাশাপাশি পাঞ্জাবে বিজেপির অস্তিত্বের সংকট দেখা দেওয়ার এক প্রবল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি বজায় থাকলে আগামী দিনে ত্রিমুখী লড়াই হতে চলেছে পঞ্জাবে। তবে তাতে এগিয়ে থাকবে কংগ্রেস ও শিরোমণি অকালি দল। ভালো অবস্থায় থাকবে আম আদমি পার্টিও। কিন্তু বিজেপির দেখা মেলা ভার হতে পারে।
বাদল-বিরোধী অকালি নেতাদের ভাঙাতে চেয়েছিল বিজেপি
অকালি দল যখন এনডিএতে ছিল, তখন বাদল-বিরোধী কিছু বিক্ষুব্ধ অকালি নেতা বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলছিলেন বলে খবর। কিন্তু এখন সেই বিক্ষুব্ধদেরও পাশে পাওয়া যাবে না বলে ধরে নিয়েছে বিজেপি। যদিও এই শরিক দল থেকে নেতা ভাঙানোর বিষয়টি মোটেও ভালো চেখে দেখেনি অকালি দল।
দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনেও সরে দাঁড়ায় অকালি
এর আগে দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিকে জোর ধাক্কা দিয়েছিল অকালি দল। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিজেপির সঙ্গে তাদের মতপার্থক্যের কথা জানিয়ে দিল্লির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল তাঁরা। সেই সময় সুখবীর সিং বাদল নাগরিকত্ব আইনে সকল ধর্মের লোককে অন্তর্ভুক্ত করার আর্জি জানিয়ে সরব হয়েছিলেন।
আসন ভাগাভাগি নিয়ে দর কষাকষি
তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মত, আসন ভাগাভাগি নিয়ে দর কষাকষিতে হেরে গিয়েই একটি অজুহাত দেখিয়েছিল অকালি দল। শিরোমণি অকালি দলের সঙ্গে আসন বন্টণ নিয়ে দীর্ঘ টালবাহানা দেখা গিয়েছিল পদ্ম শিবিরে। যার প্রভাব পরে জোটের উপর।
পাঞ্জাবকে বোঝার মতো কোনও নেতাই নেই বিজেপিতে
এদিকে বর্তমান পরিস্থিতিতে বিজেপি নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, শিরোমণি পুরনো শরিক ঠিকই, কিন্তু বিজেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ক্ষমতায় রয়েছে। সরকার চালানোয় হস্তক্ষেপ মানা হবে না। যদিও এনডিএ থেকে বেরিয়ে এসে বাদলের গলায় শোনা যায় মোদী বিরোধিতা। অকালি নেতার অভিযোগ, বিজেপির সঙ্গে অকালির চার দশকের সম্পর্ক। কিন্তু এখন বাজপেয়ী জমানার মতো শরিকদের কথা আর গুরুত্ব দিয়ে শোনা হয় না। অরুণ জেটলি চলে যাওয়ার পরে পাঞ্জাবকে বোঝার মতো কোনও নেতাই নেই বিজেপিতে।
বিজেপির আধিপত্যেই ভাঙন জোটে
বিজেপির তরফে বরাবর বলা হয়ে আসছে, বিলগুলি কৃষিক্ষেত্রে বড়-সড় আকারের সংস্কার নিয়ে আসবে। অকালি দল শুরুতে এই বিলের সমর্থনেই ছিল। কিন্তু পাঞ্জাবে বাড়তে থাকা প্রতিবাদের জেরে বিলটি আপাতত স্থগিত রাখার জন্য কেন্দ্রকে আবেদন করেছিল অকালি দল। কিন্তু কেন্দ্র সংসদে এই বিলগুলি পেশ করার সিদ্ধান্ত থেকে পিছপা হয় না। এরপরই মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন হরসিমরত। তবে তখনও জোট ছেড়ে বেরিয়ে আসেননি অকালি দলের সুপ্রিমো সুখবীর সিং। বলা হয়েছিল, বাইরে থেকেই সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাবে তাঁদের দল। তবে শেষমেষ জোট ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিল অকালি।