সিএএ, কাশ্মীর ও বাবরি সমজিদ নিয়ে মিথ্যাচার চালিয়ে মুসলিমদের উস্কাচ্ছিল শারজিল!
সিএএ নিয়ে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছিল রাষ্ট্রদোহিতার দায়ে ধৃত জেএনইউ ছাত্র শারজিল ইমাম। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে পুলিশের তদন্তে। পুলিশ জানাচ্ছে যে জামিয়া কাণ্ডের আগের দিনই সিএএ নিয়ে মিথ্যা প্রচার চালাতে মসজিদে মসজিদে প্যামফ্লেট বিলি করছিল শারজিল।
মসজিদ ও কাশ্মীর নিয়ে লিফলেট বিলি করে শারজিল
এছাড়াও জানা গিয়েছে যে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বাবরি মসজিদ ও কাশ্মীর নিয়েও প্যামফ্লেট বিলি করে শারজিল। এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়ার নজর কাড়তে দিল্লি জুড়ে ব্যাপক অশান্তি ছড়ানোর পরিকল্পনা করেছিল। অসমে মুসলমানদের আটক করে শিবিরে রাখা হয়েছে এবং তাদের হত্যা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে ইমাম লোকদের উস্কে দেওয়ার চেষ্টাও করছিলেন।
মুসলিমদের ভুল বোঝায় শারজিল
শারজিল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকদেরকে বলেছিলেন যে সরকার দেশ থেকে মুসলিমদের বিতাড়িত করার জন্যে চিহ্নিত করছে। বাবরি মসজিদ ধ্বংস, এবং জম্মু ও কাশ্মীরের বিষয়গুলিতুলে ধরেও তাদের উস্কাচ্ছিল। ১৪ ডিসেম্বর এই সব প্যামফ্লেট বিলি করেছিল শারজিল। আর তার পরের দিনই জামিয়াতে অশান্তির ঘটনা ঘটে।
কী লেখা ছিল শারজিলের বিলি করা লিফলেটে?
প্যামফ্লেটে লেখা ছিল, 'নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল গত সপ্তাহে পাস হয়েছে। এই আইনটি অসাংবিধানিক এবং মুসলিমদের প্রতি বৈষম্যমূলক। এই আইন ব্যবহার করে তাদের আটক করে শিবিরে রাখা হবে। এটি অসমে শুরু হয়েছে এবং অন্য জায়গাতেও করা হবে। ভারতজুড়ে মুসলমানদের অবশ্যই এক কণ্ঠে এনআরসি এবং সিএবি প্রত্যাখ্যান করতে হবে। কাশ্মীর, বাবরি এবং এখন সিএবি, ভারতজুড়ে মুসলমানদের তীব্র প্রতিক্রিয়ার যথেষ্ট ভিত্তি রয়েছে। অসম জ্বলতে শুরু করেছে এবং সেখানে মানুষ মরছে। তবে এই পরিস্থিতিতে আমাদের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের ভূমিকা হতাশাব্যঞ্জক। হাজার হাজার মুসলিম যুবক দিল্লিকে ব্যাহত করতে প্রস্তুত, যা আমাদের ইস্যুতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার শিক্ষার্থীরা জামিয়া জামে মসজিদ থেকে একটি প্রতিবাদ ডাক দিয়েছে। আমরা জেএনইউর মুসলিম শিক্ষার্থীরা, আপনাদেরকে এই প্রতিবাদে যোগ দেওয়ার ও চাকা জ্যামের পরিকল্পনা করার জন্য অনুরোধ করছি।'
এই লিফলেট বিলির পরদিনই ঝামেলা হয় জামিয়াতে
এই প্যামফ্লেট বিলির পরদিন ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা। এই বিক্ষোভকে ছত্রভঙ্গ করতে দিল্লির জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে পড়ে দিল্লি পুলিশ বাহিনী। পুলিশ বাহিনী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে ও লাঠি চার্জ করে। তার আগে সরাই জুলেইনা ও মথুরা রোডে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল। পুলিশের বক্তব্য চারটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা।
ছাত্রছাত্রীদের উপরে পুলিশের মারধরের অভিযোগ ওঠে
এরপর বেশ কিছু ভাইরাল ভিডিওয় উঠে এসেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঢুকে ছাত্রছাত্রীদের উপরে পুলিশের মারধরের কিছু দৃশ্য। যদিও সেই ভিডিওগুলির সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। এই উত্তেজনার জেরে সোমবার সন্ধ্যা থেকে প্রগতি ময়দান, দিল্লি গেট, আইটিও এবং আইআইটি মেট্রো স্টেশনের ঢোকা ও বেরোনোর গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
শেষ পর্যন্ত গ্রেফতার হয় শারজিল
গত মঙ্গলবার বিহারের জেহানাবাদ থেকে গ্রেফতার করার পর ট্রানজিট রিমান্ডে দিল্লিতে নিয়ে আসা হয়। তাঁকে ধরার জন্য টানা দুদিন জেহানাবাদে বসেছিল দিল্লি পুলিস। ২৭ জানুয়ারি বিজেপির পক্ষ থেকে শারজিলের একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছিল। তাতে দেখা গিয়েছিল শারজিল মুসলিমদের একটি সভায় অসমকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করার কথা বলছেন। শুধু সেই ভিডিও নয় একাধিক ভাষণের ভিডিওতে এই একই বক্তব্য পাওয়া গিয়েছে। শারজিলের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪ এ, ১৫৩ এ ও ৫০৫ ধারায় প্ররোচনামূলক বক্তব্য ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ ছড়ানোর অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহিতা মামলা রুজু হয়।