'সেক্স এডুকেশন' প্রয়োজন, কিন্তু অশ্লীলতা ছাড়া : ভোল পাল্টে জানালেন হর্ষ বর্ধন
স্কুলে 'সেক্স এডুকেশন' নিষিদ্ধ হওয়া উচিত, মন্তব্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধণের
নয়াদিল্লি, ২৭ জুন : ফের নিজের মন্তব্যে বিতর্ক সৃষ্টি করলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। এবার অবশ্য এইডস বা কন্ডোম নয়, স্কুলে তথাকথিত 'সেক্স এডুকেশন' নিষিদ্ধ করা উচিত। তাঁর বদলে বরং যোগ ব্যায়াম শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা উচিত স্কুলগুলোয়।
দিল্লির স্কুলগুলি নিয়ে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি ব্যক্ত করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। আর সেই মন্তব্যেই বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এবিষয়ে অবশ্য স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি, এই মন্তব্য হর্ষ বর্ধনের ব্যক্তিগত। অন্যদিকে হর্ষ বর্ধনের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় দিল্লির বিজেপি এক নেতা জানিয়েছেন, দলের মধ্যে এবিষয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। তাই এবিষয়ে কোনও মন্তব্য আমরা করব না।
এই প্রথমবার নয়, সম্প্রতি কন্ডোম নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে বিপাকে পড়েন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এইডস রোধে কন্ডোম ব্যবহার করার প্রচারই যথেষ্ট নয়। এমনকী ভারতীয় সংস্কৃতির অঙ্গ হিসাবে স্বামী-স্ত্রীর যৌন সম্পর্ককেই তুলে ধরা উচিত।
একইসঙ্গে তিনি এও জানিয়েছিলেন, এইডস বিরোধী প্রচারকে শুধুমাত্র কন্ডোম ব্যবহারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা উচিৎ নয়। এতে মানুষের মধ্যে ভুল বার্তা পৌঁছায়। এই প্রচারের মাধ্যমে বোঝায় কন্ডোম ব্যবহার করলেই যেকোনও অবৈধ সম্পর্কের ছাড়পত্র পাওয়া যায়।
যৌন শিক্ষার বদলে যোগ শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা উচিত, বললেন হর্ষ বর্ধন
কিন্তু পরে অবশ্য এই বিতর্কের দায় মিডিয়ার ঘাড়ে ঠেলে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। জানিয়েছিলেন, সংবাদমাধ্যম তাঁর মন্তব্যের অপব্যাখ্যা করেছেন। ইএনটি বিশেষজ্ঞ হর্ষ বর্ধনের কথায়, কন্ডোম আসলে ১০০ শতাংশ প্রতিরোধক নয়। অনেকসময়ই ঠিকমতো কাজ করে না এই জন্ম প্রতিরোধক। তাই সরকারি স্তরের প্রচারে নিরাপদ যৌনতার সঙ্গে সঠিক যৌনসঙ্গীর ধারণাকেও স্পষ্ট করে তুলে ধরা উচিত। এই বিষয়টিই বোঝাতে চেয়েছিলাম।
এদিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর 'সেক্স এডুকেশন' নিষিদ্ধ করার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন একাধিক সমাজকর্মী। একাংশের দাবি, সংঘ পরিবারের দৃষ্টিভঙ্গিই তুলে ধরণের স্বাস্থ্যমন্ত্রী। অনেকে আবার স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে যুক্তির অভাব দেখছেন। কারও কথায়, একজন চিকিৎসক হয়েও এমন অপরিপক্ক মন্তব্য কী করে করতে পারেন হর্ষ বর্ধন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসকের কথায়, ছোটদের ক্ষেত্রে আজকাল বয়ঃসন্ধি অনেক অল্প বয়সেই হয়ে যায়। ১২-১৩ বছর বয়সেই যৌনগত দিক থেকে পরিপক্ক হয়ে ওঠে শিশুরা। অনেকে যৌনগতভাবে সক্রিয় হয়ে যায় অল্প বয়সেই। এই চরম পরিস্থিতিতে চোখ বন্ধ করে রাখাটা মূর্খতা ছাড়া আর কিছুই না। যৌন বিষয় নিয়ে শিশুদের যথাযথ ধারণা দেওয়াটা শুধু বাবা-মারই নয় স্কুলেরও দায়িত্ব বটে। কারণ, স্কুলেই ছাত্রীছাত্রীরা দিনের অধিকাংশ সময়টা কাটায়। যৌনশিক্ষার ক্ষেত্রের গর্ভধারণ, জন্মনিরোধক, এবং যৌন রোগ সম্পর্কে বয়ঃসন্ধির দোরগোড়ায় দাড়িয়ে থাকা তরুণ-তরুণীদের অবশ্যই জানানো উচিত।