''একজন মুখ্যসচিব কখনই মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত স্টাফ হিসেবে কাজ করতে পারেন না'', বার্তা সরকারি আধিকারিকের
মুখ্যসচিব পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন! কিন্তু রাজ্য-রাজনীতিতে আলোচ্য বিষয় আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু রাজ্যের রাজনীতিতেই নয়, জাতীয় রাজনীতিতেও আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ইস্যুতে ক্রমশ চড়ছে উত্তাপ। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এত সহজে দিল
মুখ্যসচিব পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন! কিন্তু রাজ্য-রাজনীতিতে আলোচ্য বিষয় আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু রাজ্যের রাজনীতিতেই নয়, জাতীয় রাজনীতিতেও আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ইস্যুতে ক্রমশ চড়ছে উত্তাপ। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এত সহজে দিল্লি বিষয়টি নাও ছাড়তে পারে। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে আলাপণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শোকজের জবাবের উপর।
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবারই শেষ হচ্ছে সময়সীমা। আইনজীবীদের পরামর্শে জবাব দিতে পারেন তিনি। তবে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজে আমলা পদের অমর্যাদা করা হয়েছে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় সরকার।
সঠিক আচরণ করেননি আলাপন
আলাপন ইস্যুতে সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলেছেণ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি আধিকারিক। তিনি জানাচ্ছেন, প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে না থেকে মোটেই সঠিক আচরণ করেননি আলাপন। ওই আধিকারিকের দাবি, 'একজন মুখ্যসচিব কখনই মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত স্টাফ হিসেবে কাজ করতে পারেন না। তিনি যতই সিনিয়র হোন, তিনি রাজ্যের মুখ্যসচিব, মুখ্যমন্ত্রীর নয়।' পরবর্তীকালে আলাপনকে অনুসরণ করে অন্য কোনও মুখ্য সচিব এ ভাবে বৈঠক এড়িয়ে গেলে দেশের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো ভেঙে পড়বে বলেও দাবি করা হয়েছে।
আচরণ দেশের আইএএস পদের সম্মানে আঘাত
আইএএস পদের একটা সম্মান আছে। দেশের তাবড় তাবড় মন্ত্রীরা এই পদকে স্যালুট করে। সেখানে দাঁড়িয়ে ওই সরকারি আধিকারিকের দাবি, আলাপনের আচরণ দেশের আইএএস পদের সম্মানে আঘাত করেছে। । সরকারি ওই সূত্রের প্রশ্ন, 'আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই আচরণ কি ঠিক ছিল? রাজ্যের একজন অভিজ্ঞ অফিসারের কি ওই ব্যবহার করা উচিৎ হয়েছে?' অবসরের পর মমতার কাছ থেকে কোনও পুরষ্কার মিলবে বলেই আলাপন মমতাকে তোয়াজ করে চলছিলেন? এমন প্রশ্নও সামনে এসেছে। সব মিলিয়ে দিল্লির রাজনীতিতে আলাপন ইস্যু এখন সবথেকে চর্চিত বিষয়।
নিয়ম না মেনেই উক্ত বদলি করা হয়েছে
অন্যদিকে আলাপন ইস্যুতে জনস্বার্থ মামলা কলকাতা হাইকোর্টে। মামলাকারী আইনজীবী তাঁর আবেদনে একাধিক বিষয় উল্লেখ করেছেন। একাধিক বদলির প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন মামলাকারী। তাঁর অভিযোগ, আইনে বদলির যে নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে, সেই নিয়ম না মেনেই উক্ত বদলি করা হয়েছে। মামলায় প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্রের দিল্লিতে তলবের প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন তিনি। এই তলবের ক্ষেত্রে আইএএস ক্যাডার রুলের ৬(১) ধারা মানা হয়নি বলে আবেদনকারী তাঁর মামলায় আবেদন করেছেন। যেখানে স্পষ্ট হলা হয়েছে, রাজ্যের কোনও অফিসারকে কেন্দ্র ডেপুটেশনে চাইলে, সেই রাজ্যের সম্মতির প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে যদি মতান্তর হয়, তখন কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত প্রাধান্য পাবে। কিন্তু আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ইস্যুতে রাজ্যের মতামত নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বিষয়টিকেই সামনে রাখা হয়েছে।
প্রস্তুতি নিচ্ছেন আলাপনও!
খুব শিঘ্রই কেন্দ্রের শোকজের জবাব দেবেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনদিনের চূড়ান্ত সময়সীমা শেষ হচ্ছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার। মনে করা হচ্ছে বৃহস্পতিবারের মধ্যেই শোকজের জবাব দেবেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে জবাব দেওয়ার আগে আইন জীবীদের পরামর্শ নিচ্ছেন তিনি। এমনটাই সূত্রের খবর। আইনজীবীদের পরামর্শ মেনেই কেন্দ্রকে শোকজের জবাব দিতে চলেছেন তিনি। আইনি আটঘাট বেঁধেই কেন্দ্রকে কড়া জবাব আলাপনবাবি দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।