নির্ভয়া কাণ্ডের সাতবছর পরও মুর্নিকা বাসস্ট্যান্ড মহিলাদের জন্য অসুরক্ষিত
নির্ভয়া কাণ্ডের সাতবছর পরও মুর্নিকা বাসস্ট্যান্ড মহিলাদের জন্য অসুরক্ষিত
সাতবছর আগে ২০১২ সালে নির্ভয়া কাণ্ড সারা দেশকে শিহরিত করে তুলেছিল। কিন্তু এতবছর পরও পরিস্থিতি কিছুই বদলায়নি। দক্ষিণ দিল্লির যে বাসস্ট্যান্ড থেকে ২৩ বছরের তরুণী ওই অভিশপ্ত বাসে উঠেছিলেন, সেই বাসস্ট্যান্ডটি দিল্লির বুকে একটি কালো দাগ। যেখানে আজও মেয়েদেরকে কটুক্তি করা হয় এবং লালসাভরা দৃষ্টিতে তাকাতে তাকাতে রোমিওরা যায়।
২০১২ সালের ১৬–১৭ ডিসেম্বরের মধ্যরাতে নির্ভয়া তাঁর বন্ধুর সঙ্গে মুনির্কা বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসে ওঠেন। এরপরই চলন্ত বাসটি গোটা দিল্লি ঘোরে এবং বাসের মধ্যেই এক কিশোর সহ ছ’জন মিলে ওই তরুণীকে গণধর্ষণ করে এবং তার ওপর পাশবিক অত্যাচার চালায়। তরুণীর বন্ধুকেও মারধর করা হয়। এরপর দু’জনকেই বাস থেকে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়। এই ঘটনার পর গোটা দেশ প্রতিশোধের আগুনে জ্বলে ওঠে। ধর্ষকদের উপযুক্ত শাস্তি ও মহিলাদের সুরক্ষার দাবি নিয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে দেশ। ওই বছরের ২৯ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেশ হাসপাতালে মারা যান ওই তরুণী। পুলিশ অভিযুক্ত ছ’জনকেই গ্রেফতার করে। যার মধ্যে একজম আত্মহত্যা করে জেলের মধ্যে ও কিশোর যে ছিল সে তিনবছর হোমে থাকার পর ছাড়া পেয়ে যায়। বাকি চারজনের ফাঁসির সাজা হয়। যা খুব শীঘ্রই হবে বলে জানা গিয়েছে।
রোজকার মহিলা যাত্রীরা জানান, মুর্নিকা বাস স্ট্যান্ড এখন অবৈধ পার্কিং এলাকা হয়ে গিয়েছে। রাত ন’টার পর মহিলারা ওই বাসস্ট্যান্ডের সামনে দিয়ে গেলে তাঁদের প্রায় রোজই কটুক্তি শুনতে হয়, সঙ্গে লালসাভরা চোখের চাহনিও সহ্য করতে হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ২৪ বছরের তরুণী জানান, গণধর্ষণের পর সরকার যে সুরক্ষা ব্যবস্থা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা দিনের আলোতেও দেখা যায় না। তিনি বলেন, 'প্রত্যেকদিনই খবরে শুনতে পাই যে নির্ভয়া কাণ্ডের দোষীদের শীঘ্রই ফাঁসি দেওয়া হবে, কিন্তু কিছুই হয় না। ওই বাসস্টপে সিসি ক্যামেরা বসানোর কথা ছিল এবং বাসগুলিতে জিপিএস পদ্ধতি। কিন্তু তারপরও মুর্নিকা বাসস্ট্যান্ড ভুতুড়ে জায়গা হয়ে রয়েছে।’ ওই তরুণী বলেন, 'আমায় কাজের জন্য দিল্লিতে আসতে হয় কিন্তু আমি থাকি মুর্নিকা গ্রামে। আমি অন্য জায়গায় গেলে মা–বাবা অতটা উদ্বিগ্ন হন না যতটা আমি দিল্লিতে গেলে হন। আমি মুর্নিকাতে নামলে আমায় কেউ না কেউ নিতে আসে।’ ২৭ বছরের রাণি কুমার, যিনি গ্রিণ পার্কে বিউটিসিয়ানের কাজ করেন তিনি জানান প্রত্যেকদিন রাত ন’টার পর এটি অবৈধ পার্কিং এরিয়া হয়ে যায় এবং এই বাসস্ট্যান্ডে জমায়েত অসভ্য ব্যক্তিদের এড়িয়ে যাওয়াই খুব বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, 'সবচেয়ে বাজে ব্যাপার হল অটো চালকদের কেউই যেতে চায় না, তারা দিনের বেলায় সব কাজ শেষ করে ফেলে। যদিও তারা বাজে মন্তব্য করতে বা আপনাকে অনুসরণ করতে ক্লান্ত হয় না।
সাহস থাকলে সরকার ফেলুন, চ্যালেঞ্জ মমতার! প্রতিবাদ চলবে রাস্তা থেকে, বললেন তৃণমূল নেত্রী