হাতের উল্কিকে ৭৮৬! হরিয়ানায় কাজ খুঁজতে আসা মুসলিম যুবককে বেধড়ক মারধর, কাটা পড়ল হাত
চলতি সপ্তাহেই জয় শ্রী রাম বলতে আপত্তি করায় দুষ্কৃতিদের হামলার কবলে পড়েছিলেন নয়ডার এক ক্যাব চালক। রাস্তাতেই তাকে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ ওঠে দুই অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতির বিরুদ্ধে। ফের ধর্মীয় পরিচয় জানতে চেয়ে বেধরক মারধর করা হয় উত্তরপ্রদেশের এক যুবককে। এমনকী তার হাত কেটে নেওয়ার অভিযোগও সামনে আসছে।

ঘটনাটা ঘটেছে হরিয়ানার পানিপথে। কাজের খোঁজে গত ২৩শে অগাস্ট দুই পরিচিতের সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুর থেকে হরিয়ানা যাচ্ছিলেন বছর ২৮-র ইখলাখ সলমানি। দীর্ঘযাত্রাপথে পানিপথে পৌঁছে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন খানিক সময়। সেই সময়ই কিছু যুবক এসে তাঁকে তাঁর নাম ধাম জিজ্ঞেস করেন। নাম বলতেই শুরু হয় বেধরক মারধর।
পেশায় নাপিতের কাজ করেন ইখলাখ। কিন্তু করোনা মহামারীর জেরে দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকার কারণেই অন্যত্র কাজের খোঁজে যাচ্ছিলেন তিনি। প্রায় ৩৩ কিলোমিটার চলার কোথাও ঠাঁই না পেয়ে ওই দিন রাতে পানিপথে একটি পার্কে আশ্রয় নেন তিনি। তখনই ঘটে এই নারকীয় ঘটনা। ওই এলাকারই দুই উগ্রবাদী যুবকের খপ্পরে পড়েন তিনি।
নাম বলার সাথে সাথেই চলে নৃশংসভাবে শারীরিক অত্যাচার চালাতে শুরু করে দুষ্কৃতিরা। প্রাণভিক্ষা চেয়েও কোনও লাভ হয়নি। একটানা মারধরের সময়েই তাদের চোখে পড়ে ইখলাখের হাতে ৭৮৬ লেখা ট্যাটু। ৭৮৬ অর্থাৎ বিসমিল্লা মানে আল্লার সাঙ্কেতিক চিহ্ন ছিল। তা দেখেই ওই দুই যুবক জানান ইখলাখের হাত ওই ৭৮৬ উল্কিটি রাখা চলবে না। বলেই করাত দিয়ে হাত কেটে দিয়ে তাঁকে কিষাণপুর রেল লাইনের ধারে ফেলে রাখা হয়।
একজন পথচারী দেখতে পেয়ে তাঁর বাড়িতে খবর দেন। আপাতত ইখলাখ বাড়িতে সুস্থ হবার চেষ্টা করছেন। এদিকে এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই পানিপথের চাঁদনি বাগ স্টেশনে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। মূল অভিযুক্তর বক্তব্য, তার ভাইপোকে শারীরিক নিগ্রহ করার সময় ইখলাখকে হাতেনাতে তাকে ধরেন তিনি।
এদিকে ইখলাখকে মারধর করার কথা মেনে নিলেও হাতকাটার কথা অস্বীকার করেন মূল অভিযুক্ত ব্যক্তি। এদিকে ৭ই সেপ্টেম্বর ইখলাখের বিরুদ্ধেও পসকো ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে। যদি সত্যিই ইখলাখ এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতো তবে তার ব্যাপারে তখনই ওই ব্যক্তি পুলিশে জানালেন না কেন তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। এদিকে ইখলাখের সাথে হওয়া বর্বরোচিত ঘটনার সুবিচার চেয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে তার পরিবার।