ক্ষমতার অপব্যবহার, টু-জি মামলা থেকে সিবিআই ডিরেক্টরকে সরাল সুপ্রিম কোর্ট
ইউপিএ আমলে হওয়া টু-জি কেলেঙ্কারি নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা দেশকে। বিভিন্ন টেলি যোগাযোগ সংস্থাকে লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছিল। সিবিআইকে এর তদন্তভার দেওয়া হয়। তৎকালীন টেলিকম মন্ত্রী অন্দিমুতু রাজাকে এ কারণে জেলেও যেতে হয়। কিন্তু অভিযোগ ওঠে, টু-জি মামলায় আরও অনেক রাঘববোয়াল রয়েছে। এরা বাঁচার জন্য ব্যক্তিগতভাবে এসে দেখা করেছে সিবিআই ডিরেক্টর রঞ্জিত সিনহার সঙ্গে। তিনি পদের অপব্যবহার করে অভিযুক্তদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন।
এই অভিযোগ তুলে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, সেন্টার ফর পাবলিক ইন্টারেস্ট লিটিগেশন দ্বারস্থ হয় সুপ্রিম কোর্টের। আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ তাদের পক্ষ নিয়ে মামলা লড়েন। তারা রঞ্জিত সিনহাকে সংশ্লিষ্ট মামলা থেকে সরানোর আর্জি জানিয়েছিল।
বৃহস্পতিবার দীর্ঘ শুনানি চলে। প্রশান্ত ভূষণ সওয়াল করেন যে, সিবিআই ডিরেক্টর তাঁর দায়িত্ব পালন করেননি। এর ফলে দেশের মানুষের বিশ্বাস হারিয়েছেন তিনি। রঞ্জিত সিনহা ঠিক কাজ করেননি, এ কথা মেনে নেন বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি আনন্দ গ্রোভার-ও।
সওয়াল-জবাবের পর প্রধান বিচারপতি এইচ এল দত্তু, বিচারপতি এম বি লোকুর এবং বিচারপতি এ কে সিক্রি বলেন, "আমাদের মনে হচ্ছে, সব কিছু ঠিক নেই। প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণ থেকে মনে হচ্ছে, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির আবেদনে সারবত্তা রয়েছে। তাই টু-জি মামলার তদন্ত থেকে অব্যাহতি নিন রঞ্জিত সিনহা।"
এ দিন রঞ্জিত সিনহার সঙ্গে এজলাসে হাজির ছিলেন অন্তত দশজন সিবিআই অফিসার। এতজন একসঙ্গে এজলাসে কী করছেন, সেই প্রশ্ন তুলেও অসন্তোষ ব্যক্ত করে সর্বোচ্চ আদালত।
এদিকে, সিবিআই ডিআইজি সন্তোষ রাস্তোগির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছিলেন রঞ্জিত সিনহা, তাও খারিজ করে দেয় আদালত। তিনি বলেছিলেন, সন্তোষ রাস্তোগি মামলাকারীদের গোপনে তাঁর বিরুদ্ধে তথ্য সরবরাহ করেছে। কিন্তু বিচারপতিদের উপযুক্ত প্রমাণ দিতে পারেননি তিনি। আগামী ২ ডিসেম্বর অবসর নিচ্ছেন রঞ্জিত সিনহা। তার আগে শীর্ষ আদালতের রায় নিঃসন্দেহে তাঁর কাছে বড় ধাক্কা।