অযোধ্যা রায়ে এএসআই এর রিপোর্ট কেন এত গুরুত্ব পেল
অযোধ্যা মামলার রায়দানে প্রত্নতত্ব বিভাগের রিপোর্টের উপর ভীষণ ভাবে ভরসা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সেকারণেই রায় ঘোষণা আগে প্রধান বিচারপতিরর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানায়
অযোধ্যা মামলার রায়দানে প্রত্নতত্ব বিভাগের রিপোর্টের উপর ভীষণ ভাবে ভরসা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সেকারণেই রায় ঘোষণা আগে প্রধান বিচারপতিরর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানায়, বিতর্কিত জমির মাটি খুঁড়ে যে ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গিয়েছে তাতে ইসলাম স্থাপত্যের নিদর্শন নেই। তারপরেই চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করে শীর্ষ আদালত। হিন্দুদের দেওয়া হয় বিতর্কিত জমি। পরিবর্তে ৫ একর জমি মসজিদ তৈরির জন্য সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে দেওয়া হয়েছে।
আর্কিওলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার গবেষকরা জানিয়েছেন বিতর্কিত জমি খুঁড়ে যে ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গিয়েছে তাতে ইসলামিক স্থাপত্যের কোনও নিদর্শন নেই। কাজেই মুসলিমরা যে দাবি জানিয়েছিল সেখানে ইদগাহ ছিল। সেটা খারিজ হয়ে গিয়েছে।
আর্কিওলজিকাল সার্ভের তদন্তেই জানাগিয়েছে, প্রাচীন স্থাপত্যের উপরেই তৈরি হয়েছিল মসজিদ। জমি খুঁড়ে প্রাচীন স্থাপত্যের নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে। কোনও খালি জমিতে বাবরি মসজিদ তৈরি হয়নি। সেখানে আগে প্রাচীন কোনও স্থাপত্য ছিল। সেটা যে ইসলামিক নয় সেটা পরীক্ষায় প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। আর্কিওলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার এই দাবিই সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা করে দিয়েছে বিচারপতিদের।
বিতর্কিত জমিতে পাওয়া প্রাচীন স্থাপত্যের নিদর্শন ইসলামিক না হলেও সেখানে যে মন্দিরই ছিল এটা সুনিশ্চিত করে জানায়নি প্রত্নতত্ব বিভাগ। সেকারণেই রায় ঘোষণার সময় সুপ্রিম কোর্ট জানায় প্রত্নতত্ব বিভাগের এই দাবি পরীক্ষিত সত্য কাজেই একে অবহেলা করা যায় না।
২০০২ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্ট আর্কিওলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়াকে অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে খনন কাজ চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশ মেনে সেখানে খোঁড়াখুঁড়ি করে বহু প্রাচীন নিদর্শন হাতে আসে এএসআইয়ের। হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি, পুরাতন স্তম্ভ, বেশ কিছু স্থাপত্য উদ্ধার করেন ঐতিহাসিকরা। তাতেই আরও স্পষ্ট হয় বাবরি মসজিদ পরে সেখানে তৈরি করা হয়েছিল।
যদিও রায়দানের সময় মুসলিম পক্ষের আইনজীবী দাবি করেছেন এএসআইয়ের রিপোর্ট একটা মতামত ছাড়া আর কিছুই নয়। এটাকে প্রমাণ ভেবে নিলে ভুল হবে। যদিও প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় এএসআইয়ের রিপোর্ট একটা প্রমাণ হিসেবে ধরেছেন তাঁরা। যেটা পরীক্ষা করা হয়েছে। সেটা মতামত বলে ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। যেহেতু রামমন্দির নিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান পাওয়া সম্ভব নয় সেকারণে পরীক্ষিত সত্যের উপরেই বিচারপতিদের ভরসা করতে হয়েছে বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।
অযোধ্যা রায় : পাঁচটি মূল সুপ্রিম নির্দেশ জেনে নিন একনজরে
কোন পথে শেষ হল কয়েক দশকের অযোধ্যা মামলা?