রাজীবের খুনিদের ফাঁসির সাজা যাবজ্জীবনে বদলে দিল আদালত

১৯৯১ সালের ২১ মে তামিলনাড়ুর শ্রীপেরুম্বুদুরে এলএলটিই-র আত্মঘাতী হামলায় মারা যান প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী। খুনের ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার দায়ে তিনজন যথা মুরুগন, শান্তন ও পেররীবালনকে ফাঁসির সাজা দিয়েছিল নিম্ন আদালত। তার পর মামলা গড়াতে গড়াতে যায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। শীর্ষ আদালতও তাঁদের ফাঁসির সাজা বহাল রাখে। এর পর ২০০৩ সালে ওই তিনজন সংবিধানের ৭২ ধারা মোতাবেক রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানান। কিন্তু ১১ বছরেও কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি রাষ্ট্রপতি ভবন। সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব হওয়ায় ওই তিনজন ফের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় প্রাণদণ্ড রদের আর্জি নিয়ে। সেই আর্জি আজ মঞ্জুর করল সুপ্রিম কোর্ট।
মঙ্গলবার তিনজনের কৌঁসুলি আদালতকে বলেন, এটা একটা অসহনীয় অবস্থা। ফাঁসি হয়ে গেলে মিটে যেত। কিন্তু, ওই তিনজন রোজ এই ভেবে ঘুমোতে যেত যে, কালই ফাঁসি কার্যকর হবে। রোজকার এই যন্ত্রণা অমানবিক। ১১ বছর ধরে এই যন্ত্রণা তারা ভোগ করছে। এবার এর অবসান ঘটাক আদালত। যদিও সরকারি পক্ষের আইনজীবী বলেছেন, এটা কোনও মানসিক যন্ত্রণা হতে পারে না। অবশেষে বিচারপতিরা সহমত হন আসামি পক্ষের আইনজীবীর সঙ্গে। ফাঁসির সাজা বদলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
এই আপিল মামলায় আইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্ধারিত হয়েছে। তা হল, আদালত বলেছে, প্রাণভিক্ষার আর্জি-সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত যদি সরকার দীর্ঘদিন ঝুলিয়ে রাখে, তা হলে নিশ্চিতভাবে আসামিকে অমানবিক মানসিক যন্ত্রণা বয়ে বেড়াতে হয়। শুধু এই কারণ দেখিয়ে ভবিষ্যতে ফাঁসির আসামির সাজা রদ করতে পারবে আদালত। সরকারের দায়িত্ব হল, বছরের পর বছর সিদ্ধান্ত ঝুলিয়ে না রেখে দ্রুত ফয়সালা করা।