ফের ব্যাঙ্ক প্রতারণা নীরব মোদীর ধাঁচে! এবার লোপাট প্রায় হাজার কোটি
সামনে এল অপর এক ব্যাঙ্ক প্রতারণার ঘটনা। গয়না বিপণনী সংস্থা কনিষ্ক গোল্ড প্রাইভেট লিমিটেডের তরফে প্রায় ৮৪২.১৫ কোটি টাকা প্রতারণা করা হয়েছে। জানুয়ারিতেই এবিষয়ে সিবিআই-এর সাহায্য চেয়েছে এসবিআই।
সামনে এল অপর এক ব্যাঙ্ক প্রতারণার ঘটনা। গয়না বিপণনী সংস্থা কনিষ্ক গোল্ড প্রাইভেট লিমিটেডের তরফে প্রায় ৮৪২.১৫ কোটি টাকা প্রতারণা করা হয়েছে। জানুয়ারিতেই এবিষয়ে সিবিআই-এর সাহায্য চেয়েছে এসবিআই কর্তৃপক্ষ।
কনিষ্ক গোল্ড প্রাইভেট লিমিটেড। যার রেজিস্টার্ড অফিস চেন্নাইয়ের টি নগরে। এর প্রমোটর এবং ডায়রেক্টর হলেন ভুপেশকুমার জৈন এবং তাঁর স্ত্রী নীতি জৈন। ব্যাঙ্কারদের তরফে সিবিআইকে জানানো হয়েছে তাদের তরফে জৈন দম্পতির সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। কেননা তাঁরা দেশ ছেড়ে সম্ভবত মরিশাসে আশ্রয় নিয়েছেন। ঘটনাটি নিয়ে সিবিআই-এর তরফে এখনও এফআইআর দায়ের করা হয়নি।
১৪ টি রাষ্ট্রায়ত্ত এবং প্রাইভেট ব্যাঙ্কের কনসর্টিয়ামের তরফে কনিষ্ককে টাকা ধার দেওয়া হয়েছিল। এক্ষেত্রে সব থেকে বেশি ঋণ দিয়েছিল এসবিআই। ২০১৮-র ২৫ জানুয়ারি সিবিআই-এর কাছে পাঠানো চিঠিতে এসবিআই-এর তরফে কনিষ্কের বিরুদ্ধে রেকর্ডে অদলবদল এবং রাতারাতি দোকান বন্ধ করার অভিযোগ করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে ধারের পরিমাণ ৮২৪ কোটি টাকা হলেও, সুদ নিয়ে ব্যাঙ্কগুলির ক্ষতির পরিমাণ প্রায় হাজার কোটি টাকা।
এসবিআই-ই প্রথম ব্যাঙ্ক যারা সব থেকে আগে ২০১৭-র ১১ নভেম্বর প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত অ্যাকাউন্টের তথ্য জানিয়েছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে। অন্যদিকে জানুয়ারিতে বাকি ব্যাঙ্কগুলি তাদের প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত অ্যাকাউন্টের তথ্য জানিয়েছে সর্বোচ্চ ব্যাঙ্ককে।
এসবিআই জানিয়েছে, কনিষ্কের তরফে ২০১৭-র মার্চে প্রথমবার আটটি ব্যাঙ্কে তাদের সুদ মেটাতে ব্যর্থ হয়। ঠিক পরের মাসেই ১৪ টি ব্যাঙ্কে সুদ মেটানো বন্ধ করে দেয়। ব্যাঙ্কগুলির তরফে প্রমোটরের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানানো হয়েছে।
২০১৭-র ২৫ মে যখন ব্যাঙ্কাররা কনিষ্কের কর্পোরেট অফিস, ফ্যাক্টরি এবং শোরুমে হানা দেওয়া হয়, সেখানে কিছুই পাওয়া যায়নি। একই দিনে ব্যাঙ্কারদের কাছে দেওয়া চিঠিতে প্রমোটর ভুপেশ জৈন রেকর্ডে প্রতারণার কথা স্বীকার করে নেন। ব্যাঙ্কারদের তরফে আলাদা করে বাকি শোরুমগুলিতেও হানা দেওয়া হলেও, তা ছিল বন্ধ।
এসবিআই-এর দেওয়া চিঠি থেকে জানা যাচ্ছে ২০০৭ সাল থেকে কনিষ্ক গোল্ডকে ঋণ দেওয়া শুরু হয়েছে। বছর যাওয়ার পর থেকেই ব্যাঙ্কগুলির তরফে ঋণের পরিমাণ বাড়ানো হয়। ২০০৮ সালে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের থেকে এসবিআই পুরো ঋণ নিয়ে নেয়। সেই সময় সংস্থার ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল লোন ছিল ৫০ কোটি এবং টার্ম লোন ছিল ১০ কোটি। ২০১১-র মার্চ থেকে ঋণদান প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয় পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক এবং ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া।
কনিষ্ককে দেওয়া ঋণের মধ্যে রয়েছে এসবিআই ২১৫ কোটি, পিএনবি ১১৫ কোটি, ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ৫০ কোটি, সিন্ডিকেট ব্যাঙ্ক ৫০ কোটি, ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ৪৫ কোটি, আইডিবিআই ব্যাঙ্ক ৪৫ কোটি, ইউকো ব্যাঙ্ক ৪০ কোটি, টামিল্যান্ড মার্চেন্টাইল ব্যাঙ্ক ৩৭ কোটি, অন্ধ্র ব্যাঙ্ক ৩০ কোটি, ব্যাঙ্ক অফ বরোদা ৩০ কোটি, এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক ২৫ কোটি, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক ২৫ কোটি, সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ২০ কোটি এবং কর্পোরেশন ব্যাঙ্ক ২০ কোটি টাকা।