করোনা প্রকোপে ভারতের জিডিপি ঠেকবে কোন তলানিতে? জানিয়ে দিল এসবিআই
খাদের কিনারায় ঝুলে রয়েছে অর্থনীতি। সৌজন্যে ভারতে বাড়তে থাকা করোনা সংক্রমণের প্রকোপ। গত কয়েক সপ্তাহে প্রায় প্রতিদিনই নিয়ম করে শেয়ারবাজারে ধস নামছে বিনিয়োগকারীদের আশঙ্কার জেরে। এই পরিস্থিতিতে দেশের আর্থিক প্রবৃদ্ধির হার যে কমবে তা একপ্রকার জানা কথা ছিল। আর সেই বিষয়ের উপরই রিপোর্ট পেশ করল দেশের বৃহত্তম ব্যাঙ্ক এসবিআই।
ভারতের জিডিপিতে কাটছাঁট করল এসবিআই
বর্তমান পরিস্থিতির নিরিখে আগের পূর্বাভাস থেকে ফের ভারতের জিডিপিতে কাটছাঁট করল এসবিআই। এর আগে এক রিপোর্ট পেশ করে মুডিজ জানিয়েছিল, ২০২০-২০২১ অর্থবর্ষে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার ৫.৪ শতাংশ থাকবে। তবে সেই হারকে কমিয়ে মাত্র ২.৬ শতাংশ করে দিল এসবিআই। পাশাপাশি জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের ত্রৈমাসিকে ভআরতের প্রবৃদ্ধির হার ২.৫ শতাংশ হবে বলে জানিয়েছে এসবিআই।
করোনা ভাইরাসের জেরে বিশ্বজুড়ে মন্দা
করোনা ভাইরাসের জেরে বিশ্বজুড়ে মন্দা লক্ষ্য করা যাচ্ছিল বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই। এর প্রভাব প্রথমে পরোক্ষ ভাবে পড়লেও পরে তা প্রত্যক্ষ ভাবেই পড়তে শুরু করে ভারতের উপর। আর জেরে দেশের বাণিজ্য ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন।
করোনার জেরে ভারতের বাণিজ্য প্রভাবিত
বিশ্বজুড়ে করোনা প্রাদুর্ভাব দেখা দিতেই ভারতের ৫৩ শতাংশ বাণিজ্য প্রভাবিত হয়েছিল। সেই পরিমাণ এখন ৭৩ শতাংশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এর জেরে দেশের ৫০ শতাংশ কোম্পানিতে অর্ডার পাওয়ার ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
নগদ প্রবাহে টান পড়েছে
এদিকে করোনার জেরে নগদ প্রবাহ কমে গিয়েছে। দেশের ৮০ শতাংশ সংস্থার নগদ প্রবাহে টান পড়েছে। কাচা মাল ও উৎপাদন নিয়ে চাপে পড়েছে কম বেশি সব সংস্থা। চাহিদার অভাবে ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত পিছিয়ে যাচ্ছে উৎপাদনের মাত্রা। পরবর্তীতে এই উৎপাদন আরও পিছিয়ে যাবে বলেই ধরে নেওয়া যায়।
বাণিজ্য একপ্রকার শিথিল হয়ে গিয়েছে
করোনার ধাক্কায় বিদ্ধস্ত গোটা বিশ্ব। তার প্রভাব ভারতেও পড়েছে। এখনও পর্যন্ত দেশে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪৭০০ জনেরও বেশি। এদের মধ্যে অন্তত ১১৭ জনের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শেয়ার বাজারে প্রায় প্রতিদিনই রেকর্ড হারে পতন দেখা যায় সেনসেক্স ও নিফটির। ব্যবসা বাণিজ্য একপ্রকার শিথিল হয়ে গিয়েছে। পর্যটন খাত পুরোপুরি বন্ধ, বিমান শিল্পও প্রায় বন্ধের মুখে। এই পরিস্থিতিতে অর্থনীতিতে প্রয়োজনীয় বুস্ট নেই।
চিন-আমেরিকার অর্থনীতি কোন পথে?
অবশ্য শুধু ভারত নয় করোনা দাপটে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ। চিন, আমেরিকা সহ একাধিক দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার কমে গিয়েছে এই করোনার প্রকোপে। চিনের আর্থিক বৃদ্ধির হার ৫.২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪.৮ শতাংশ করেছে। অন্যদিকে আমেরিকার আর্থিক বৃদ্ধির হার ১.৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১.৫ শতাংশ করা হয়েছে।
লকডাউন ও করোনার প্রভাবে দেশের অর্থনীতি
লকডাউন ও করোনার প্রভাবে দেশের অর্থনীতির হাল হকিকত নিয়ে মুখ খোলেন আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রের তরফে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। তার একদিনে মাথায় আরবিআই গভর্নরের সাংবাদিক বৈঠকের উপর নজর ছিল বণিক মহল ও মধ্যবিত্তের। সেখানে অর্থনীতিতে নগদের প্রবাহ বাড়াতে রেপো রেট কমানোর কথা ঘোষণা করে আরবিআই। পাশাপাশি দেশের ব্যাঙ্কগুলিকে ৩.৭৪ লক্ষ কোটি টাকা দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছিলেন শক্তিকান্ত দাস।