হিন্দু ধর্মকে আশ্রয় করে রাজনীতির দিকে ঝুঁকছে আপ, লাভবান হচ্ছে আরএসএস
হিন্দু ধর্মকে আশ্রয় করে রাজনীতির দিকে ঝুঁকছে আপ, লাভবান হচ্ছে আরএসএস
২০২০ সালে বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী ভারতীয় নোটে লক্ষী ও গণেশের ছবি ছাপানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। এই প্রেক্ষিতে তিনি ইন্দোনেশিয়ার উদাহরণ এনেছিলেন। ইন্দোনেশিয়ার ২০,০০০ টাকার নোটে গণেশের ছবি রয়েছে। দীপাবলিতে একই ধরনের কথা শুনতে পাওয়া যায় অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গলায়। অনেকেই মনে করতেন, এই ধরনের কুসংস্কার থেকে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন কেজরিওয়াল। কিন্তু কেজরিওয়ালের সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়ে অনেকেই দ্বিধায় রয়েছেন।
হিন্দু ধর্মকে আশ্রয় আপের
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন করে আম আদমি পার্টির জন্ম হচ্ছে বলা যেতে পারে। বা পরিবর্তিত আম আদমি পার্টির উত্থান শুরু হয়েছে। কেজরিওয়ালের বুধবারের মন্তব্যের অনেক আগে থেকেই আপের বেশ কিছু পরিবর্তন বোঝাচ্ছে, রাজনৈতিক দলটি হিন্দু ধর্মকে আশ্রয় করে এগিয়ে যেতে চাইছে। তবে তার অর্থ আপ মুসলিম, খ্রিস্টান বা অন্যান্য সংখ্যালঘু ধর্ম বিরোধী নয়। হিন্দু ধর্মকে আশ্রয় করে আপ এগিয়ে যেতে চাইলেও এখানেই আপের সঙ্গে বিজেপির পার্থক্য।
পরিবর্তন হচ্ছে আপের নীতি
সম্প্রতি ভারতীয় মুদ্রায় দেব-দেবীর ছবি ছাপানো নিয়ে কেজরিওয়ালের মন্তব্য আপের যে একটি রাজনৈতির পদক্ষেপ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে সম্প্রতি আপের একাধিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। মূলত গুজরাত প্রচারে আপ আহ্বায়ক অরবিন্দ কেজরিওয়াল একাধিক বক্তব্য রেখেছেন হিন্দুদের গুরুত্ব দিয়ে। সেই বক্তব্য কোনওভাবেই ধর্ম নিরপেক্ষ নয়। সেই বক্তব্য একটু পর্যালোচনা করলে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের কাছ থেকে ভারতীয় নোটে হিন্দু দেব-দেবী সম্পর্কিত বক্তব্যে আশ্চর্য হতে হয় না।
হিন্দু ভোট বাড়াতে আগ্রহী আপ
সম্প্রতি গুজরাত নির্বাচনে আপের তরফে বিনামূল্যে তীর্থযাত্রার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। জন্মাষ্টমীতে কেজরিওয়ালের জন্মদিন হওয়ার নিজেকে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, ভগবান তাঁকে কংসের সন্তানের হাত থেকে গুজরাতকে বাঁচাতে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। সম্প্রতি বিজেপি মুসলিম তোষণকারী বলে আপকে নিশানা করেন। তারপর থেকেই হিন্দু ভোটব্যাঙ্ক মাথায় রেখে আপ নেতাদের বক্তব্যের অনেকটা জুড়ে হিন্দু ধর্ম থাকে।
বিজেপির হিন্দুত্ব বনাম আপের হিন্দুত্ব
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আপের বর্তমান নীতি নিয়ে নতুন করে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। এখন বিজেপির হিন্দুত্ব বনাম আপের হিন্দুত্বের একটা লড়াই দেখা দিয়েছে। তবে এক্ষেত্রে উপকার হচ্ছে আদতে আরএসএসের বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যেভাবে হিন্ধু ধর্মকে সামনে রেখে আপ গুজরাতে প্রচার চালাচ্ছে, সেক্ষেত্র আরএসএসের সামনে বিজেপির বিকল্প একটি রাজনৈতিক দল তৈরি হচ্ছে আম আদমি পার্টি।
আরএসএসের সঙ্গে আপের সম্পর্ক
হিন্দুত্ব ধীরে ধীরে নির্বাচনে ভোট ব্যাঙ্ক বাড়ানোর একটা উপায় হয়ে উঠছে। বিজেপির সঙ্গে আরএসএসের একটা দুরত্ব তৈরি হচ্ছে বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। কারণ ক্রমেই ইসলামিক দেশগুলোর সঙ্গে মোদীর ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে। আরএসএসের হিন্দুত্ব মুসলাম বিরোধী, খ্রিস্টান বিরোধী। অতীতের ঘটনা তীব্রভাবে তা প্রমাণ করে। বিজেপি ক্রমাগত সেই অবস্থান থেকে সরে আসছে। যদিও আপের হিন্দুত্ব মুসলিম বিরোধী বা খ্রিস্টান বিরোধী নয়। তবে আপ আন্না হাজারের আন্দোলন থেকে গঠিত হয়েছে। আন্না হাজারের আন্দোলনে আরএসএসের পৃষ্ঠপোষকতা ছিল। যদি আপ রাজনৈতিক দল তৈরি হওয়ার পরে ধর্মনিরপেক্ষ ও উদার মানসিকতার দিকে এগিয়ে যায়। এক্ষেত্রে নতুন করে আপের সঙ্গে আরএসএসের মেল বন্ধন হলে অবাক হতে হবে না।
২০১৬ সালের পর হঠাৎ দিদির ফোঁটা নিতে কালীঘাটে মুকুল! পঞ্চায়েতের আগে বড় দায়িত্ব?