আরএসএস-এর দাবি মেনে নয়া শিক্ষানীতিতে বদল কেন্দ্রের! কোন কোন বিষয়ে সরব বিরোধীরা?
নতুন শিক্ষানীতিতে অনুমোদন দিল নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভা৷ ৩৪ বছর পর এই প্রথম শিক্ষানীতিতে পরিবর্তন হল বলে সাংবাদিক বৈঠকে জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর ৷ এদিন শিক্ষানীতিতে পরিবর্তন আনার পাশাপাশি মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের নাম পরিবর্তন করে শিক্ষামন্ত্রক করা হয়৷ উচ্চশিক্ষা সচিব অমিত খারে জানান, এই শিক্ষানীতি নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা হয়েছে৷ উচ্চ শিক্ষাক্ষেত্রে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে৷
কী বদল নয়া শিক্ষা ব্যবস্থায়?
যে শিক্ষা ব্যবস্থা দেশ আগে দেখে এসেছে, তাতে ১০+২ ছিল শিক্ষা ব্যবস্থার কাঠামো। সেই কাঠামো পরিবর্তন হয়ে এবার হল ৫+৩+ ৩+৪। যে শিক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে ভারতে তার সঙ্গে আরও ৩ টি বছর যোগ হয়েছে। কোথাও পাঠ দানের পদ্ধতি কোথাও পাঠক্রমের ঘরানায় এবার আমূল পরিবর্তন আনতে চসেছে মোদী সরকার।
স্নাতকস্তরে বড় বদল আনল কেন্দ্র
কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, স্নাতক স্তরের সময়কাল হবে ৩-৪ বছর৷ স্নাতকোত্তর স্তরের সময়কাল হবে ১-২ বছর৷ স্নাতক ও স্নাতকোত্তরস্তর মিলিয়ে এখন থেকে ৫ বছরের কোর্স হবে৷ তবে, সেক্ষেত্রে মাল্টিপাল এনট্রি বা এগজিটের ব্যবস্থা থাকবে৷ অর্থাৎ আগে টানা তিন বছরে যে স্নাতকস্তরের কোর্স সম্পন্ন করার বিধিনিষেধ ছিল তা আর থাকছে না৷ এক জন পড়ুয়া এই তিন বছরের কোর্সের মধ্যে একাধিকবার বিরতি নিতে পারে৷
শিক্ষানীতিতে আরএসএস-এর প্রভাব
এছাড়া স্কুলে ধ্রুপদী ভাষা পড়ানো নিয়ে বড়সড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর ফলে স্কুল শিক্ষায় সংস্কৃত গুরুত্ব পেতে চলেছে। একই সঙ্গে তিনটি ভাষার ওপর স্কুলশিক্ষার আঙিনায় গুরুত্ব একটি বড় বিষয় হতে চলেছে বলে খবর। এছাড়া মাতৃভাষা পড়ানো নিয়েও নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
আরএসএস-এর সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষানীতিতে বদল!
জানা গিয়েছে আরএসএস-এর এই নীতি প্রয়োগের ক্ষেত্রে যথেষ্ট চাপ ছিল কেন্দ্রের উপর। বিজেপি শাসিত রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ও আরএসএস নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেই নয়া নীতি প্রকাশ করেছে কেন্দ্র। যা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। তবে আরএসএস নীতিকে ছুঁয়ে গিয়েও খুব সুক্ষ্মতার সঙ্গে কেন্দ্র অনেক ভালো প্রগতিশীল নীতিও এই শিক্ষা ব্যবস্থায় জুড়ে দিয়েছে। ভারতীয় সংস্কতি নিয়ে পাঠ্যক্রমে আরও বেশি বিষয় যোগ হওয়াটাও আরএসএস তুষ্ট করার জন্য, বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
নতুন নীতি ঘিরে ধোঁয়াশা
তবু নতুন নীতি ঘিরে ধোঁয়াশা আর বিক্ষোভ বিস্তর। যেমন অনেকের প্রশ্ন, সব স্কুলেই কি তবে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত স্থানীয় ভাষায় পড়ানো বাধ্যতামূলক? সেক্ষেত্রে বাংলা থেকে দক্ষিণের কোনও রাজ্যে গিয়ে বাস করা কারোর শন্তান ক্লাসের পড়া বুঝবে কী করে? স্থানীয় ভাষার নাম করে কি পরে কৌশলে ঢোকানোর চেষ্টা হবে হিন্দি? তবে আপাতত ভাষার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের উপরই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বিষয়টি।
নয়া নীতি নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ বিরোধীদের
বিরোধীদের কটাক্ষ, এক দেশ-এক ধর্ম, এক দেশ-এক ভাষার মতো এ বার এক দেশ-এক শিক্ষার বাসনা পূর্ণ করতেই রাজ্যের মতকে অগ্রাহ্য করার পথে হেঁটেছে কেন্দ্র। বিরোধীদের প্রশ্ন, তা হলে কেন অপেক্ষা করা গেল না সংসদ খোলা পর্যন্ত? রাজ্যের সঙ্গে বৈঠকেই যদি বসতে হয়, তবে নীতি চূড়ান্ত করার আগেই তা না-করার কারণ কী? তাঁরা জানাচ্ছেন, এই নীতিতে শিক্ষার বাণিজ্যকরণের রাস্তায় কতটা হাঁটা হয়েছে, কতটা খোলা হয়েছে ফি বৃদ্ধির রাস্তা, সরকারি উচ্চ শিক্ষায় গুরুত্ব কমানো হচ্ছে কি না, এই সব কিছু খতিয়ে দেখে বিশদে মুখ খুলবেন তাঁরা।
প্রবল বর্ষণ থেকে মুক্তি নেই উত্তরবঙ্গের, দক্ষিণ কবে ভিজবে! আবহাওয়ার খবর একনজরে