অযোধ্যা মামলার রায়দানের পর কীভাবে সারা হবে উৎসব? নির্দেশিকা জারি আরএসএস ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের
অযোধ্যা মামলা রায়দানের সময় যত ঘনিয়ে আসছে ততই উত্তজনা বাড়ছে। তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে ও উত্তেজনা যাতে ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য তৎপর সবপক্ষই।
অযোধ্যা মামলা রায়দানের সময় যত ঘনিয়ে আসছে ততই উত্তজনা বাড়ছে। তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে ও উত্তেজনা যাতে ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য তৎপর সবপক্ষই। সব রাজনৈতিক নেতাই শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। এই বিষয়ে তাদের কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বিশেষ নির্দেশিকা জারি করেছে আরএসএস ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। দুই দলেরই শীর্ষ স্থানীয় নেতারা তাদের কর্মীদের শান্তি বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
কী ভাবে হবে আনন্দ উদযাপন?
দুটি হিন্দু সংগঠনই তাদের কর্মীদের বলেছে যে রায়দানের পর আনন্দ করতে তারা মন্দিরে যেতে পারেন বা মিষ্টি বতরণ করতে পারেন। কিন্তু কোনও রকম স্লোগান দেওয়া থেকে তাদের বিরত থাকতে বলা হয়েছে। জানা গিয়েছে ১০ নভেম্বর থেকে ২০ নভেম্বরের মাঝে আরএসএস-এর সমস্ত পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। এর আগে আরএসএস-এর পক্ষ থেকে এক বিবৃতি জারি করে সবাইকে রায় মেনে নিতে বলা হয়েছিল। তারা জানায়, এই রায়ের জেরে দেশের শান্তি সৃঙ্খলা যাতে কোনও ভাবে বিঘ্নিত না হয়।
পরিস্থিতি শান্ত রাখতে তৎপর বিজেপি
পরিস্থিতি শান্ত রাখতে ময়দানে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের নেতা-কর্মীদের সাফ জানিয়ে দেওয়া হল, অযোধ্যা বিবাদ মামলার রায়দানের পর যতক্ষণ না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কোনও মন্তব্য করছেন, ততক্ষণ এই বিষয়ে কোনও কথা বলা যাবে না। অযোধ্যা মামলার রায়দান পরবর্তী পরিস্থিতি সংক্রান্ত আচরণ বিধি জারি করা হয়েছে দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে। তাতে স্পষ্ট করে বলা, অযোধ্যা বিবাদ মামলা নিয়ে কোনও প্রকার উত্তেজক, প্ররোচনামূলক বা উস্কানিমূলক মন্তব্য করা যাবে না। মামলার রায়দানের পর যতক্ষণ না এই নিয়ে নরেন্দ্র মোদী বা অমিত শাহ কোনও মন্তব্য করছেন, ততক্ষণ এই বিষয়ে কেউ যেন কোনও কথা না বলে।
মুসলিম নেতাদের নিয়ে মঞ্চ তৈরি বিজেপির
এদিকে অযোধ্যা মামলা পরবর্তী পরিস্থিতে শান্তি বজায় রাখতে দলের মুসলিম নেতাদের নিয়ে মঞ্চ তৈরি করেছে বিজেপি। মুসলিম রাষ্ট্রীয় মঞ্চ নামক সংগঠনটিতে রয়েছেন মোদী সরকারের মন্ত্রী মুক্তার আব্বাস নাকভি, সৈয়দ শআহনাওয়াজ হুসেন, শাজিয়া ইলমি, বিজেপির জাতীয় সংখ্যালঘু সেলের প্রধান ওব্দুল রশিদ আনসারি, সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ গাইরুল হায়াস রিজভি।
মুসলিম নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন মন্ত্রী
শান্তি বজায় রাখার আবেদন নিয়ে মঙ্গলবার মুসলিম নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী মুক্তার আব্বাস নাকভি। এর আগে আরএসএস-এর শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গেও বৈঠকে বসেছিলেন তিনি। এই বিষয়ে নাকভি বলেন, "আমাদের সুনিশ্চিত করতে হবে যাতে কোথাও জয়ী হয়ে উন্মাদের মত আনন্দোৎসব যেন না হয়। পাশাপাশি হারের দুঃখে যেন কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনাও না ঘটানো হয়।"
একতার বুনিয়াদকে শক্তিশালী করতে বদ্ধপরিকর
বৈঠকে উপস্থিত ব্যক্তিরা সকলেই বর্তমান পরিস্থিতিতে সামাজিক ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, ভ্রাতৃত্ব ও একতা বুনিয়াদকে শক্তিশালী ও সুরক্ষিত করার প্রতিশ্রুতি দেন। জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ মাদানী, চলচ্চিত্র নির্মাতা মোজাফফর আলী, অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সদস্য কমল ফারুকী, প্রাক্তন সাংসদ শহীদ সিদ্দিকী ও শিয়া ধর্মগুরু কালবে জাওয়াদ এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
যোগীর বার্তা
এদিকে, উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ মন্ত্রিসভার সদস্যদের বলেছেন, অযোধ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য থেকে দূরে থাকতে।