অযোধ্যায় রাম মন্দির আন্দোলনের পুরোধা ছিলেন যে তিনজন, সুপ্রিম-রায়ের প্রেক্ষাপটে দেখে নিন
অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের নির্দেশ জারি হল দীর্ঘ লড়াইয়ের অবসানে। ১৩৪ বছরের বিতর্কের ইতি ঘটিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ঐতিহাসিক রায় দিল।
অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের নির্দেশ জারি হল দীর্ঘ লড়াইয়ের অবসানে। ১৩৪ বছরের বিতর্কের ইতি ঘটিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ঐতিহাসিক রায় দিল। সেই রায়ে বলা হয়েছে তিন মাসের মধ্যে রাম মন্দির নির্মাণের পরিকল্পনা করতে হবে। তার আগে একবার ফিরে দেখা অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের তিন পুরোধা ব্যক্তিকে।
পরমহংস রামচন্দ্র দাস
এই
তিনজনের
মধ্যে
প্রথমজন
ছিলেন
পরমহংস
রামচন্দ্র
দাস।
তাঁর
আসল
নাম
ছিল
চন্দ্রেশ্বর
তিওয়ারি।
১৯১৩
সালে
বিহারের
একটি
গ্রামে
জন্মগ্রহণ
করেছিলেন
তিনি।
কয়েক
বছর
পরে
অযোধ্যা
চলে
এসেছিলেন।
তপস্যী
হওয়ার
পর
তাঁকে
এখন
পরমহংস
রামচন্দ্র
দাস
নামেই
সবাই
চেনে।
ঐতিহাসিক
রেকর্ড
অনুযায়ী,
১৯৪৯
সালের
২২
ও
২৩
ডিসেম্বর
অযোধ্যার
বাবরি
মসজিদের
কেন্দ্রীয়
গম্বুজের
ভিতরে
রামলাল্লার
প্রতিমা
স্থাপন
করার
সময়
ফৈজাবাদের
হিন্দু
মহাসভার
নগর
সভাপতি
ছিলেন
তিনি।
ওইদিন
ঘটনার
কয়েক
ঘন্টা
পরে
২৩
ডিসেম্বর
সকাল
9
টায়
প্রথম
এফআইআর
দায়ের
করা
হয়েছিল।
এই
ঘটনায়
রামচন্দ্র
দাসের
নাম
না
থাকলেও
এতে
অভিরাম
দাস,
রামসকল
দাস,
সুদর্শন
দাস
এবং
প্রায়
৫০
জনের
নাম
ছিল।
অভিরামও
হিন্দু
মহাসভার
সাথে
যুক্ত
ছিলেন।
পরমহংস
রামচন্দ্র
দাসকে
এই
মামলায়
কখনও
আনুষ্ঠানিকভাবে
আসামি
করা
হয়নি,
কিন্তু
বছরখানেক
পরে
তিনি
দাবি
করেছিলেন
১৯৪৯
সালের
ডিসেম্বরের
ঘটনাটিকেই
তিনি
এই
বিবাদের
অন্যতম
প্রধান
মোড়
হিসাবে
ব্যাখ্যা
করেছিলেন।
মূর্তিটি
ভিতরে
রাখার
পরেই
বাবরি
মসজিদকে
আনুষ্ঠানিকভাবে
‘বিতর্কিত'
হিসাবে
ঘোষণা
করা
হয়েছিল।
এর
পরই
প্রধান
ফটকটি
বন্ধ
করে
দেওয়া
হয়েছিল
এবং
মুসলিমদের
ওই
জায়গায়
নামাজ
পড়তে
নিষেধ
করা
হয়েছিল
এবং
হিন্দুরা
পাশের
একটি
গেট
থেকে
দর্শনের
অধিকার
পেয়েছিল।
১৯৯১
সালে
রামচন্দ্র
দাস
নিউইয়র্ক
টাইমসকে
বলেছিলেন,
আমিই
সেই
ব্যক্তি,
যিনি
এই
মূর্তিটি
মসজিদের
ভিতরে
রেখেছিলেন।
তবে,
পরবর্তী
বছরগুলিতে
তিনি
তার
ভূমিকা
নিয়ে
বেশিরভাগ
ক্ষেত্রে
নীরবতা
বজায়
রেখেছিলেন।
মন্দির
আন্দোলনকে
কেন্দ্র
করে
বিশ্ব
হিন্দু
পরিষদ
এবং
ভারতীয়
জনতা
পার্টি
বা
বিজেপির
পরিকল্পনার
সবচেয়ে
মূল্যবান
সাধক
হয়ে
উঠেছিলেন
অচিরেই।
অশোক সিঙ্ঘল
উত্তরপ্রদেশের
আগ্রা
শহরে
১৯২৬
সালে
জন্মগ্রহণ
করেন
অশোক
সিঙ্ঘল
সিংহল।
তাঁর
বাবা
একজন
সরকারী
কর্মকর্তা
ছিলেন
এবং
তাঁর
ছোট
ভাই
বিপি
সিংহল
ইউপি'র
পুলিশ
মহাপরিচালক
এবং
বিজেপির
রাজ্যসভার
সদস্য
হয়েছিলেন।
মেধাবী
ছাত্র
অশোক
সিঙ্ঘল
আইআইটি,
বেনারস
হিন্দু
বিশ্ববিদ্যালয়
থেকে
ধাতববিদ্যার
পড়াশোনা
করেছেন।
সেখানে
ডানপন্থী
মতাদর্শের
সাথে
তাঁর
প্রথম
পরিচয়
হয়েছিল
এবং
শীঘ্রই
তিনি
রাষ্ট্রীয়
স্বয়ংসেবক
সংঘের
বা
আরএসএসের
প্রচারক
হয়ে
উঠেছিলেন।
১৯৪২
সালে
তিনি
ব্রিটিশ
রাজের
বিরুদ্ধে
মহাত্মা
গান্ধীর
নেতৃত্বে
ভারত
ছাড়ো
আন্দোলন
করেছেন।
তারপর
তিনি
আরএসএসের
পুরো
সময়ের
প্রচারক
(প্রবক্তা)
হয়েছিলেন।
সংঘের
স্বেচ্ছাসেবক
হিসাবে
তিনি
ইউপি-র
বিভিন্ন
অংশে
বিভিন্ন
সক্ষমতা
নিয়ে
কাজ
করেছিলেন
এবং
সংঘের
দিল্লি
ইউনিটের
প্রান্ত
প্রচারক
(প্রাদেশিক
প্রবক্তা)ও
হয়েছিলেন।
১৯৮১
সালে,
তিনি
আরএসএসের
অন্যতম
গুরুত্বপূর্ণ
সহযোগী
ভিএইচপির
জাতীয়
যুগ্ম
সাধারণ
সম্পাদকের
পদে
চলে
আসেন।
তিন
বছর
পরে
রাম
মন্দিরের
আন্দোলনের
বিষয়ে
প্রচেষ্টা
শুরু
হয়েছিল।
রাম
জন্মভূমি-বাবরি
মসজিদ
বিরোধ
নিয়ে
আলোচনার
জন্য
ভিএইচপি
প্রথম
ধর্ম
সংসদের
আয়োজন
করেছিল।
সাধু
ও
দর্শনার্থীরা
একত্রিত
হয়ে
রাম
মন্দিরের
উদ্দেশ্যে
পাড়ি
দিয়েছিলেন।
সিংহল
অনুষ্ঠানটিকে
দুর্দান্ত
সাফল্যে
পরিণত
করতে
মুখ্য
ভূমিকা
নিয়েছিলেন।
এর
পরেই
তাঁকে
জাতীয়
দলের
সাধারণ
সম্পাদক
পদে
উন্নীত
করা
হয়।
এরপরই
রামমন্দির
আন্দোলনে
সর্বাধিক
গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা
পালন
করেছিলেন।
১৯৯২
সালে
বাবরি
মসজিদটি
ভাঙার
আন্দোলনে
নেতৃত্বে
দিয়েছিলেন
তিনি।
বাবরি
মসজিদকে
ডানপন্থী
নেতাকর্মীরা
ভেঙে
তছনছ
করে
দিয়েছিল।
এই
অভিযোগে
এফআইআর
দায়ের
করা
হয়েছিল।
সিঙ্ঘল
আসামি
হিসাবে
অন্যতম
প্রধান
ব্যক্তি
ছিলেন।
এই
ধ্বংসযজ্ঞের
পরেই
বিজেপি
যেমন
হিন্দুত্ববাদী
রাজনীতির
উত্থানের
মধ্য
দিয়ে
সুবিধাগুলি
লাভ
করেছিল
এবং
অবশেষে
কেন্দ্রে
ক্ষমতার
স্বাদ
গ্রহণ
করেছিল।
লাল কৃষ্ণ আদবানী
এই
ত্রয়ীর
মধ্যে
তৃতীয়
ব্যক্তি
হলেন
লাল
কৃষ্ণ
আডবাণী।
রাম
জন্মভূমি
আন্দোলনের
পথ
তৈরিতে
সবচেয়ে
প্রভাবশালী
রাজনীতিবিদ
তিনিই।
রাজনীতিতে
তাঁর
নিকটতম
প্রাক্তন
প্রধানমন্ত্রী
অটলবিহারী
বাজপেয়ীর
মতের
বিপরীতে
গিয়েই
আদবানি
মন্দির
আন্দোলনের
কট্টর
মুখ
হয়ে
উঠেছিলেন।
আদবানী
একেবারে
সামনে
থেকে
নেতৃত্ব
দিয়েছিলেন।
১৯২৭
সালে
বর্তমান
পাকিস্তানের
সিন্ধু
প্রদেশে
জন্মগ্রহণ
করেন
তিনি।
জীবনের
প্রথম
দিকে
আরএসএসের
সাথে
যুক্ত
হন।
১৯৪১
সালে
প্রচারক
হন।
দেশভাগের
পরে
তাঁকে
সঙ্ঘ
রাজস্থানে
প্রেরণ
করেছিল।
আরএসএসের
আদর্শ
প্রচারের
জন্য
ভারতীয়
জনসঙ্ঘকে
রাজনৈতিক
অফসুট
হিসাবে
গঠন
করার
সাথে
সাথে
১৯৫০-এর
দশকের
গোড়ার
দিকে
তাঁর
ভূমিকা
পাল্টে
যায়।
আদবানি
পুরোপুরি
রাজনৈতিক
অঙ্গনে
পা
রাখেন।
১৯৭০
সালে
রাজ্যসভার
সদস্য
হন
আদবানি।
১৯৭৭
সালে
জরুরি
অবস্থার
পরে
জনসঙ্ঘ
জনতা
পার্টিতে
মিশে
যায়
এবং
পরবর্তীতে
কেন্দ্রের
প্রথম
অ-কংগ্রেস
সরকার
গঠন
করে।
আদবানিকে
তথ্য
ও
সম্প্রচারমন্ত্রী
করা
হয়েছিল।
১৯৮০
সালে
ভারতীয়
জনতা
পার্টি
গঠিত
হয়েছিল।
বাজপেয়ী
এর
প্রথম
সভাপতি
হন।
প্রধানমন্ত্রী
ইন্দিরা
গান্ধীর
হত্যাকাণ্ডের
পর
দেশব্যাপী
ক্ষোভের
মাঝে
১৯৮৪
সালের
সাধারণ
নির্বাচনগুলিতে
এই
রাম
জন্মভূমি
ইস্যু
কোনও
উল্লেখযোগ্য
প্রভাব
ফেলতে
পারেনি।
এরপরে
বিজেপি
কট্টর
হিন্দুত্বের
রাজনীতিতে
সরে
যায়
এবং
রাম
মন্দির
ইস্যুতে
প্রতিশ্রুতিবদ্ধ
হয়ে
ওঠে।
বিজেপির
সভাপতি
হিসাবে
তাঁর
উত্থান
হয়।
তখন
থেকেই
তিনি
মন্দির
প্রচারের
জন্য
বিজেপির
সবচেয়ে
আগ্রাসী
কণ্ঠ
এবং
প্রচারক
হয়ে
ওঠেন।
১৯৯০
সালে
মন্দিরের
আন্দোলন
চূড়ান্ত
হওয়ার
সঙ্গে
আদবানি
তাঁর
রাজনৈতিক
জীবনের
সবচেয়ে
বিতর্কিত
প্রচার-প্রচারণা
চালিয়েছিলেন।
রাম
রথযাত্রা
করেছিলেন
গুজরাতের
সোমনাথ
থেকে
উত্তর
প্রদেশের
অযোধ্যা
পর্যন্ত।
বর্তমান
প্রধানমন্ত্রী
নরেন্দ্র
মোদী
ছিলেন
আদবানির
যাত্রা
পরিকল্পনার
স্থপতি।
মিছিলটি
যদিও
কখনও
অযোধ্যাতে
পৌঁছয়নি।
আদবানিকে
বিহারের
তৎকালীন
মুখ্যমন্ত্রী
লালু
প্রসাদ
যাদবের
প্রশাসন
গ্রেফতার
করেছিল।
আদবানি
রাম
মন্দিরের
কট্টর
মুখ
হিসাবে
প্রতিষ্ঠিত
হয়েছিলেন।
দু'বছর
পরে
বাবরি
মসজিদটি
কর
সেবকরা
নামিয়ে
আনেন।