আসন্ন নির্বাচনে কর্মহীন বিহারের ভাগ্য নির্ধারণে বড় ভূমিকা নিতে পারে পরিযায়ীরা
করোনা সঙ্কটের মাঝেই বিহারে ক্রমেই চড়ছে নির্বাচনী পারদ। অক্টোবর নভেম্বরে ভোটের আগের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে মাঠে নেমেছে প্রায় সমস্ত রাজনৈতিক দলই। এদিকে বন্যার ভ্রুকুটি ও পরিযায়ী সমস্যার জেরে তীব্র সঙ্কটে গোটা বিহার। সঙ্কট কাটাতে একাধিক সরকারি প্রকল্পের কথা বলা হলেও বাস্তবচিত্র কার্যত অন্য কথাই বলছে।
বাড়ছে করোনা প্রকোপ
এদিকে দন যত গড়াচ্ছে গোটা রাজ্যে ততই বাড়ছে করোনার প্রকোপ। ইতিমধ্যেই বিহারে ১ লক্ষ ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। অন্যদিকে দেশের একাধিক রাজ্যে কাজ করা পরিযায়ী শ্রমিকদের একটা বড় অংশই আবার বিহারের বাসিন্দা। মার্চ থেকে লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে কাজ হারিয়ে তাদের সিংহভাগই এখন নিদারুণ দুর্দশার মধ্যে জীবন কাটাচ্ছেন।
শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনে বাড়ি ফিরেছেন ১৫ লক্ষ পরিযায়ী
এদিকে লকডাউনের পরেই পরিযায়ী সঙ্কট কাটাতে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করতে দেখা যায় ভারতীয় রেলকে। সূত্রে খবর এই কয়েক মাসে দেশের মধ্যে সর্বাধিক পরিযায়ী শ্রমিক ঘরে ফিরেছেন বিহারের। সরকারি তথ্য মতে এই সংখ্যা প্রায় ১৫ লক্ষ। অন্যদিকে বাসের মাধ্যমে ঘরে ফিরেছেন আরও প্রায় ২ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক।
৭৫ লক্ষেরও বেশি পরিযায়ী শ্রমিকের বাস বিহারে
অন্যদিকে অপর একটি সূত্র বলছে এই সংখ্যা আরও অনেকটাই বেশি হতে পারে। পরিসংখ্যান বলছে শুধুমাত্র মে মাস পর্যন্ত রাজ্য ঘোষিত ১ হাজারের আর্থিক সহায়তার জন্য আবেদন করেছে প্রায় ২৯ লক্ষেরও বেশি পরিযায়ী শ্রমিক। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী বিহারে সেই সময় ৭৫ লক্ষেরও বেশি পরিযায়ী শ্রমিকের বাস ছিল। বিগত একদশকে তা যে আরও অনেকটাই বাড়বে তা বলাই বাহুল্য। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা আসন্ন নির্বাচনে এই বিশালাকার পরিযায়ী শ্রমিকের দল বিহারের ভাগ্য নির্ধারণে বড় ভূমিকা নিতে পারে।
কল-কারাখানাতেও কমছে শ্রমিকের সংখ্যা
অন্যদিকে ওয়াকিবহালের মতে বিগত কয়েক বছরে রাজ্যজুড়ে অনেক কলকারখানা হলেও সেখানেও কর্মসংস্থানের পরিমাণ খুবই সীমিত। উল্টে বাস্তবচিত্রে খানিক উদ্বেগের কথাই দেখা যাচ্ছে। সূত্রের খবর, ২০১১-১২ থেকে ২০১৬-১৭ সময়কালের মধ্যে রাজ্যে জুড়ে প্রতি কারখানায় পিছু গড়ে শ্রমিকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৪ থেকে ২৮। অন্যদিকে ২০১৭-১৮ সালে বিহারে বেকারত্বের পরিমাণ চরম আকার ধারণ করে। সেই সময় যখন জাতীয় বেকারত্বের গড় ছিল ৬.১ শতাংশ, বিহারে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭.২ শতাংশ।