
ভারত-ব্রিটেন সম্পর্কে পরিবর্তন আনাই লক্ষ্য! দ্বিতীয়বার সুযোগ আসবে না, জানেন সুনক
প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভুত হিসেবে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন ঋষি সুনক! যে ইংরেজরা ভারতে ২০০ বছরের শাসনে পদদলিত করেছিল, সেই ইংরেজ শাসনের ভার এখন ভারতীয় বংশোদ্ভুত এক নেতার কাঁধে। এটা কম গৌরবের নয়। একইসঙ্গে ঋষি সুনক প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রশ্ন উঠে পড়েছে, ভারত-ব্রিটেন সম্পর্কে কি পরিবর্তন আসবে? ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক কোন পথে পরিবর্তন ঘটাতে পারেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক, তা নিয়েই চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

ঋষি সুনকের ভারতীয় ঐতিহ্য এবং জাতিগত সংখ্যালঘু পটভূমিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রতিযোগিতায় অংশ নেননি। ঋষি সুনক আদ্যান্ত একজন ইংরেজম্যান ব্রিটিশ নাগরিক হিসেবে প্রধানমন্ত্রী দৌড়ে ছিলেন। অবশেষে তিনি সেই দৌড়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছেছেন। সেই ঋষি সুনক ভারত ও ব্রিটেনের সম্পর্কের পরিবর্তন করতে আগ্রহী।
ঋষি সুনক প্রধানমন্ত্রী হওয়ার এই দৌড়ে বলেছিলেন তিনি ভারত ও ব্রিটেনের সম্পর্ক পরিবর্তন করতে চান, যাতে ফের দ্বিমুখী বিনিময় শুরু হয়, তার ব্যবস্থা করতে চান তিনি। ভারত ও ব্রিটেনের মধ্যে ছাত্র ও কোম্পানিগুলির পারস্পরিক প্রবেশাধিকার খুলে দিতে চান তিনি। অগাস্টে ব্রিটিশ ইন্ডিান কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যদের এক সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার সময় ইয়র্কশায়ারের রিচমন্ডের বাসিন্দা ৪২ বছর বয়সি সুনক একথা বলেছিলেন। তিনি মুদ্রাস্ফীতির কঠিন সময়ে দেশকে উন্নত নিরাপদ ব্রিটেন গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছিলেন।
উত্তর লন্ডনে কনজার্ভেটিভ ফ্রেন্ডস অফ ইন্ডিয়া ডায়াস্পোরা সংস্থা দ্বারা আয়োজিত একটি ইভেন্টের সময় প্রাক্তন চ্যান্সেলর নমস্তে, সালাম, কেম চো এবং কিড্ডার ভারতীয় ঐতিহ্যবাহী শুভেচ্ছাসূচক শব্দ ব্যবহার করেন। সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি এভাবেই স্বাগত জানান। এমনকী তিনি হিন্দিতে বলেন, আপ সব মেরে পরিবার হো। অর্থাৎ আপনারা সবাই আমার পরিবার।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, আমি জানি ভারত ও ব্রিটেনের সম্পর্ক কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা দুই দেশের মধ্যে সেতু গড়ে তুলতে আগ্রহী। দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে তিনি একথা বলেছিলেন। এমনকী দু-দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং লেনদেন সংক্রান্ত চুক্তির বিষয়েও তিনি আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন।
সেইসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, আমি নিশ্চিত করতে চাই যে আমাদের ছাত্রদের জন্য ভারত ভ্রমণ আবশ্যক। আমাদের কোম্পানি ও ভারতীয় কোম্পানিগুলির জন্য একসঙ্গে কাজ করা দরকার। এটা শুধুমাত্র একমুখী সম্পর্ক করলে হবে না, দ্বিমুখী সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। সেই পরিবর্তন আমি দু-দেশের সম্পর্কের মধ্যে আনতে চাই।
এদিন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত হওয়ার পর ঋষি সুনক বলেন, আমাদের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্তু আমরা প্রমাণ করে দিয়েছি, আমাদের জন্য সেই প্রশ্ন অনিবার্য ছিল না। ব্রিটিশ রাজনীতিতে আমরা আস্থা ও বিশ্বাস পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করে চলেছি। আমরা তা করতে পেরেছি বলেই আমরা আজ এই জায়গায়। আমাদের কাছে সুযোগ এসেছে। আমরাই যে যোগ্য, সেটা প্রমাণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে এই সুযোগ দ্বিতীয়বার আসবে না।