মোদী অপরাজেয় নন, ডবল ইঞ্জিনের জয়রথকে বেগ দিয়ে প্রমাণ করলেন তেজস্বী যাদব
টানা ১৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলল ভোট গণনা৷ টান টান উত্তেজনা৷ দুপুর গড়িয়ে বিকেল, তখনও কোনও পরিষ্কার ইঙ্গিত নেই যে, কে আসতে চলেছে বিহারের মসনদে৷ শেষ পর্যন্ত বিজেপি-জেডিইউর এনডিএ জোট জিতলেও কড়া টক্কর দিয়ে প্রমাণ করে দিলেন মোদী ঝড়ের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা এতটাও কঠিন নয়। বিজেপির জয়রথ অপরাজেয় নয়। বিহারের মহাজোটের হার তেজস্বীর জন্যে বড় ধাক্কা হলেও জাতীয় স্তরে নিজের জন্যে একটি স্থান তৈরি করে নিয়েছেন।
একক বৃহত্তম দল আরজেডি
বিহারে একক বৃহত্তম দল হিসাবে সবথেকে বেশি আসন নিজেদের দখলে রাখন তেজস্বী যাদবের দল৷ ৭৫টি আসন পেয়েছে আরজেডি৷ বিহারে মহাজোটের পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ কংগ্রেস৷ ৯০টি আসনে নিজেদের প্রার্থী দিয়েছিল কংগ্রেস৷ তার মধ্যে শেষ পর্যন্ত ১৯টি আসন নিজেদের দখলে রাখতে পেরেছে তাঁরা৷ নির্বাচন কমিশনের হিসাব বলছে যে বিজেপির ঝুলিতে গিয়েছে ১৯.৫ শতাংশ ভোট। বিজেপির থেকে ৩.৬ শতাংশ বেশি ভোট পেয়েও মাত্র একটি আসন বেশি পায় আরজেডি।
একদিনে ১৭টি সভা করে রেকর্ড
নির্বাচনের প্রচারের সময় তেজস্বী পাশে পাননি বাবাকে। একাই একের পর এক সভা করেছেন। একদিনে ১৭টি সভা করে রেকর্ড করেছেন। মোদী-নীতীশের ডবল ইঞ্জিন-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মহাজোটকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এত কিছুর পর ক্ষমতায় আসতে না পারলেও তেজস্বী যাদবের নেতৃত্বেই বিহারে একক বৃহত্তম দল হিসেবে উঠে এসেছে আরজেডি।
বাবার ছায়া থেকে বেরিয়ে এসেছেন তেজস্বী
বাবার ছায়া থেকে বের হয়ে এসেছেন। নিজে হাতে তুলে নিয়েছেন দায়িত্ব। আর তা পালনে যে তিনি সফল তা প্রমাণ করে দিল বিহারের ফলাফল। নিঃসন্দেহে বিহার নির্বাচনের ম্যান অফ দ্য ম্যাচ তেজস্বীই। রাজ্যে ৭৫টি আসন পেয়েছে আরজেডি৷ তা সত্ত্বেও ক্ষমতায় আসার মতো আসন পায়নি মহাজোট। এরজন্য অনেকেই কংগ্রেসের পারফরম্যান্সকে দায়ি করছেন। বামেরা অপ্রত্যাশিত ভালো ফল করলেও কংগ্রেস পেয়েছে মাত্র ১৯টি আসন।
'জঙ্গলের যুবরাজ'-এর তকমা
লালু প্রসাদের শাসন কালের প্রসঙ্গ টেনে এনে বিজেপি তাঁকে বারংবার জঙ্গলের যুবরাজ বলে কটাক্ষ করুলেও তেজস্বী যাদব কিন্তু দমে যাননি। প্রচার ময়দানে মারকাটারি ইনিংস খেলেছেন এই প্রাক্তন ক্রিকেটার। বিহারের রাঘোপুর বিধানসভা কেন্দ্রে ৩৮ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন তিনি।
ব্যর্থ ক্রিকেট কেরিয়ার থেকে রাজনৈতিক উত্থান
২০১০ সালে আরজেডি-র হয়ে প্রথম প্রচারে দেখা যায় তেজস্বী যাদবকে। নীতীশ কুমারের মুখ্যমন্ত্রীত্বেই ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি। ২০১৫-র বিধানসভা নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে রাঘোপুর কেন্দ্র থেকেই ভোটে লড়েন এবং জিতেও যান। ২০০৮ সালে আইপিএল-এ দিল্লি ডেয়ারডেভিলস দলে ছিলেন। ২০১৩ সালে ক্রিকেট থেকে অবসর নেন।
ফল প্রকাশের পর চিড় এনডিএ-তে? মোদী ভক্ত 'হনুমান'-এর মন্তব্যে বাড়ছে জল্পনা