ভারতে কত সপ্তাহের লকডাউন জরুরি, জানালেন পৃথিবী বিখ্যাত মেডিক্যাল জার্নালের সম্পাদক
প্রথম দফার লকডাউন শেষ হওয়ার দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেন লকডাউন চলবে ৩ মে পর্যন্ত। অনেকেই ভাবছেন ৩ মে থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করবে।
প্রথম দফার লকডাউন শেষ হওয়ার দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেন লকডাউন চলবে ৩ মে পর্যন্ত। অনেকেই ভাবছেন ৩ মে থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করবে। আবার অনেকেই সম্ভাব্য এই প্রচেষ্টায় সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছেন। পৃথিবী বিখ্যাত মেডিক্যাল জার্নাল ল্যান্সেটের প্রধান সম্পাদক রিচার্ড হরটন বলছেন, ভারতের এখনই লকডাউন থেকে বেরিয়ে যাওয়া উচিত হবে না। তাঁর উপদেশ অন্তত ১০ সপ্তাহ লকডাউন পালন করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
লকডাউন অন্তত ১০ সপ্তাহ চলা উচিত
সর্বভারতীয় এক সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে রিচার্ড হরটন বলেছেন, কোনও দেশেই মহামারী চিরকাল থাকে না। এটা নিজে থেকেই নষ্ট হয়ে যাবে। বিভিন্ন দেশ প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করতে সঠিক পথেই চলেছে। ভারতে যদি লকডাউন সফল হয়, তাহলে মহামারী কমবে। তবে তার জন্য অন্তত ১০ সপ্তাহ সময় লাগবে। যদি এই সময় পরে ভাইরাস সংক্রমণ বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থার দিকে যেতে শুরু করবে। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক নয়, আমাদের শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। আমাদের মাস্ক পরতে হবে। পাশাপাশি ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধিতে নজর দিতে হবে।
তাড়াহুড়োর বিরোধিতা
ভারতে লকডাউন তোলার জন্য যে তাড়াহুড়ো করা হচ্ছে তার বিরোধিতা করেছেন তিনি। রিচার্ড হরটন বলছেন, তিনি বুঝতে পারছেন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের দিকে এগোতে হবে। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি নয়। যদি ভারত লকডাউন তোলার জন তাড়াহুড়ো করে এবং যদি সেকেন্ড ওয়েভ শুরু হয়, তাহলে তা ফার্স্ট ওয়েভের থেকে ভয়াবহ হবে। সেই পরিস্থিতিতে সেই লকডাউনেই ফিরে যেতে হবে। ইতিমধ্যেই ভারতবাসী লকডাউনের জন্য সময় ব্যয় করেছে। তাকে নষ্ট করা উচিত হবে না। অন্তত ১০ সপ্তাহ এই লকডাউন চালিয়ে যাওয়া উটিত বলেো মন্তব্য করেন তিনি।
চিনের উহানে পরিস্থিতি স্বাভাবিকের পথে গিয়েছে ১০ সপ্তাহ পরে
তিনি ব্যাখ্যা করে বলেছেন, চিনের উহানে রোগের সংক্রমণ বন্ধ করতে ১০ সপ্তাহ লকডাউন পালন করা হয়েছে। প্রসঙ্গত চিনের উহানে লকডাউন চলে ২৩ জানুয়ারি থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এরপর থেকে আস্তে আস্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিকের পথে যাচ্ছে। ভাইরাসের প্রকৃতির জন্যই এটা হয়েছে। জনসংখ্যার মধ্যে ভাইরাস দ্রুতহারে ছড়াতে থাকে, যদি শারীরিক দূরত্ব মানা না হয়।
টেস্টিং এবং কন্ট্রাক্ট ট্রেসিং প্রয়োজনীয়
তাঁর কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ১০ সপ্তাহ পরে ফের যে এই ভাইরাস সক্রিয় হবে না, তার কী নিশ্চয়তা রয়েছে। উত্তরে রিচার্ড হরটন জানিয়েছেন, করোনা ভাইরাস তারপরে সংক্রমণ ছড়াতে পারবে না। কেননা তখন খুব কম লোকেরই সংক্রমণ থাকবে। সংক্রমণের মাত্রাও খুব কম থাকবে। তবে লকডাউনের কার্যকারিতা বজায় রাখতে টেস্টিং এবং কন্ট্রাক্ট ট্রেসিং প্রয়োজনীয় বলেও জানিয়েছেন তিনি।