এক র্যাঙ্ক এক পেনশন - সার্জিকাল স্ট্রাইক, চার বছরে আর কী সাফল্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের, দেখে নিন
চার বছরে 'এক র্যাঙ্ক এক পেনশন' আর 'সার্জিকাল স্ট্রাইক' এছাড়া বলার মতো কোনও সাফল্য নেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের।
ক্ষমতায় আসার সময় 'এক র্যাঙ্ক এক পেনশন' ছিল নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। চার বছরের কার্যকালে এই বিষয়টির সমাধান করেছে মোদী সরকার। দেশের লক্ষ লক্ষ প্রাক্তন সেনাকর্মী এতে উপকৃত হয়েছেন। এছাড়া গত চার বছরে প্রতিরক্ষা বিষয়ে এনডিএ-র বড় সাফল্য বলতে পাকিস্তানের মাটিতে সার্জিকাল স্ট্রাইক চালানো। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক প্রতিরক্ষা বিষয়ে গত চার বছরে মোদী সরকার কি কি কাজ করেছে।
এক র্যাঙ্ক এক পেনশন
সি.জি.ডি.এ.-র রিপোর্ট অনুযায়ী, ৩১.১২.২০১৭ পর্যন্ত 'এক র্যাঙ্ক এক পেনশন' খাতে, চারটি কিস্তিতে যথাক্রমে ৪১৬১.৪৫ কোটি টাকা, ২৩৮৭.২২ কোটি টাকা, ২৩২০.৭ কোটি টাকা এবং ১৮৫৯.৭২ কোটি টাকা বকেয়া মেটানো হয়েছে। এই চার কিস্তিতে যথাক্রমে ২০,৪৩,৩৫৪ জন, ১৫,৯৪,০৬৩ জন, ১৫,৭১,৭৪৪ জন, এবং ১৩,২৮,৩১৩ জন পেনশনভোগী প্রাক্তন সেনা বা তার পরিবার, লাভবান হয়েছেন। সব মিলিয়ে মোট বকেয়া মেটানো হয়েছে ১০,৭৩৯.০৯ কোটি টাকার।
প্রাক্তন সেনাকর্মীদের জন্য অন্যান্য পদক্ষেপ
২০১৫-১৬ অ্যাকাডেমিক বছর থেকে প্রধানমন্ত্রী বৃত্তি যোজনার অধীনে বৃত্তির সংখ্যা বাড়িয়ে ৪০০০ থেকে ৫৫০০ করা হয়েছে। ২০১৬-র এপ্রিল মাস থেকে সেনা কর্মীদের কন্যাদের বিবাহের ভাতা ১৬,০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০,০০০ টাকা করা হয়েছে। অনলাইনে আবেদন জানানোর জন্য কেন্দ্রীয় সৈনিক বোর্ড ২০১৬-র ১১ মার্চ থেকে ওয়েব পোর্টাল চালু করেছে।
আইএনএস কালভারি
২০১৭-র ১৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নৌবাহিনীর সাবমেরিন আইএনএস কালভারি জাতির উদ্দেশ্যে নিবেদন করেন।
ব্রহ্মস
২০১৭ সালের নভেম্বরে প্রথমবার ভারতীয় বিমানবাহিনীর ফ্রন্টলাইন জঙ্গী বিমান সুখোই ৩০ এমকেআই থেকে ক্ষেপণাস্ত্রটি ফ্লাইট টেস্টে সফল হয়। এটি আপাতত বিশ্বের দ্রুততম ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র।
আকাশ
ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্রটির উৎক্ষেপণও সফল হয়েছে।
ইন্দ্র ২০১৭
২০১৭ সালের অক্টোবরে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে প্রথম ত্রি-বাহিনী সামরিক অনুশীলন হয়েছে। এর নাম ছিল ইন্দ্র ২০১৭।
ফ্ল্যাগ ডে
শহীদদের এবং সেনাকর্মীদের সম্মান জানাতে সশস্ত্র বাহিনীর ফ্ল্যাগ ডে উদযাপন নিয়ে বিশেষ প্রচার চালানো হয়েছে।
নাবিকা সাগর পরিক্রমা
সম্পূর্ণ মহিলা ক্রু বিশিষ্ট ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ আইএনএসভি তারিণী বিশ্ব পরিক্রমা করেছে। ২০১৭-র ১০ সেপ্টেম্বর রওনা দিয়ে ২০১৮ এপ্রিলে তাঁরা দেশে ফিরে আসেন। 'নাবিকা সাগর পরিক্রমা' নামে এই অভিযান মহিলাদের ক্ষমতায়নের কথা মাথায় রেখে করা হয়।
ডিফেন্স ট্রাভেল সিস্টেম
অনলাইনে টিকিট বুক করতে রেলওয়ের সঙ্গে একযোগে এই প্রকল্পটি চালু করা হয়েছে। রেল এবং বিমান দুই ধরণের যাত্রার সুবিধাই আছে এই প্রকল্পে। ২০১৭-র ২৮ ডিসেম্বর অবধি বাহিনীর মোট ১০৬৭৫ টি ইউনিটের মধ্যে ৫৭৫৯ টি ইউনিটকে এই সিস্টেমের আওতায় আনা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১২,১৯,৯৬৯ জন এই সিস্য়েমের সুবিধা পেয়েছেন। গড়ে প্রতি মাসে এই সিস্টেমের মারফত ৫.১ লক্ষ টিকিট বিক্রি হচ্ছে, যার জন্য গড়ে ৭০ কোটি টাকা ব্যয় হয় ।
ইন্টারেক্টিভ পেনশন প্রদান ব্যবস্থা
পেনশনভোগীদের জন্য একটি ওয়েব বেসড ইন্টারেক্টিভ পেনশন প্রদান ব্যবস্থা স্থাপন করা হচ্ছে। এই সিস্টেমে পেনশন প্রোপোজাল গ্রহন করা হবে। এবং এর মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে অর্থ প্রদান করা হবে। এতে প্রতিরক্ষামন্ত্রকের পেনশন সংক্রান্ত অভিযোগ কমবে বলে দাবি করে হচ্ছে।
সিম্পলিফায়েড 'মেক -২'
২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারী প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নির্মলা সিতারমনের সভাপতিত্বে ডিফেন্স অ্যাকুইজিশন কাউন্সিলের বৈঠকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম অধিগ্রহণে শিল্পমহলেরর বৃহত্তর অংশগ্রহণের জন্য একটি সরলীকৃত 'মেক -২' পদ্ধতি কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এই সরলীকৃত 'মেক -২' পদ্ধতিটি বর্তমানে 'ডিফেন্স প্রকিওরমেন্ট প্রসিডিওর (ডিপিপি) -২০১৬'-য় যে 'মেক প্রসিডিওর' রয়েছে তাকে সংশোধন করবে।
রাফাল যুদ্ধবিমান
২০১৬-র ২৩ সেপ্টেম্বর ভারত সরকার ৩৬ টি রাফাল বিমান কেনার জন্য ফ্রান্সের সঙ্গে একটি আন্তঃ-সরকার চুক্তি (আইজিএ) করে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই বিমানগুলি ভারতের হাতে আসা শুরু হবে। সবকটি বিমান পেতে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আইজিএ চুক্তি অনুযায়ী ফ্রান্স শুধুবিমানগুলি দেবেই না, সেই সঙ্গে পারফরমেন্স বেসড লজিস্টিক্স এর মাধ্যমে মেইটেনেন্স সহায়তা, সিমুলেটর এবং অন্যান্য সরঞ্জামও দেবে।
অগ্নি - ৫
২০১৬-র ২৬ ডিসেম্বর অগ্নি-৫ এর পরীক্ষা সফল হয়। এর ফলে ভারতের নিজস্ব প্রতিরক্ষা দক্ষতা এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়েছে।
সার্জিকাল স্ট্রাইকস
২০১৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর, সীমান্ত রক্ষা করতে এবং সীমান্তের ওপাড় থেকে চালানো সন্ত্রাসের মোকাবিলা করতে, ভারতীয় সেনাবাহিনী পাক অধীকৃত কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটিতে সার্জিকাল স্ট্রাইক চালিয়েছিল। তার আগে ১৮ সেপ্টেম্বর উরি-র সেনা ক্যাম্পে সন্ত্রাসবাদী হামলায় বেশ কয়েকজন জওয়ান শহীদ হন। এরই জবাব দিতে ওই হামলা করা হয়।