হিন্দুরা এরকম কাজ করতে পারে না... ছন্দে ফিরছে বিলকিস বানো মামলায় মুক্তি পাওয়া দোষীরা
হিন্দুরা এরকম কাজ করতে পারে না... ছন্দে ফিরছে বিলকিস বানো মামলায় মুক্তি পাওয়া দোষীরা
দাহোদ জেলার রন্ধিকপুর গ্রামে বিলকিস বানোর বাড়ি। বিলকিস বানোর বাড়ির উল্টোদিকে দীপাবলির জন্য একটা বাজির দোকান হয়েছে। সেই অস্থায়ী দোকানের মালিক রাধেশ্যাম শাহ। বিলকিস বানো মামলায় যাবজ্জীবনের সাজা থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি নিজের গ্রামে ফিরে এসেছেন। ছন্দে ফিরছেন জীবন। তিনি বলেন, আমি নির্দোষ, হিন্দুরা কখনও এই ধরনের কাজ করে না।
হিন্দুরা এরকম কাজ করতে পারে না
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিলকিস বানো মামলায় অন্যতম দোষী বলেন, আমি নিদোর্ষ। এরপরেই তিনি মন্তব্য করেন, আপনি কখনও শুনেছেন কাকা ভাইপো একে অপরের সামনে ধর্ষণ করছে, শোনেনি। কারণ হিন্দুরা এই ধরনের কাজ করে না। অন্যদিকে বিলকিস বানো মামলায় অন্যতম দোষীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ ছিল। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বাইরে বেরিয়ে সাক্ষীদের হুমকি দিয়েছিলেন। যদিও তাঁরা জেলের ভিতর ভালো ব্যবহারের জন্য মুক্তি পেয়েছেন। গোবিন্দ নাই বা তাঁর বাবা এই বিষয়ে কোনও কথা বলতে অস্বীকার করেন। তাঁরা সাংবাদিকদের গ্রাম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি নেই।
গ্রাম ছাড়া বিলকিস বানোর পরিবার
চলতি বছরের ১৫ অগাস্ট বিলকিস বানো মামলায় দোষীদের মুক্তি দেওয়া হয়। দোষীদের বিরুদ্ধে বিলকিস বানো সহ একাধিক মহিলাকে গণধর্ষণ ও একই পরিবারের সাতজনকে খুন করার অভিযোগ ওঠে। বিলকিস বানোর বাড়ির আশেপাশেই দোষীদের বাড়ি। প্যারোলে মুক্তি পাওয়ার পর বাইরে বেরিয়ে একাধিকবার সাজাপ্রাপ্তরা সাক্ষীদের হুমকি দিয়েছেন। কিন্তু তারা একেবারে মুক্তি পেয়ে গিয়েছে চলতি বছরের ১৫ অগাস্ট। কারণ হিসেবে জেলে ভালো ব্যবহারের কথা উল্লেখ করেছে গুজরাত সরকারের কমিটি। ঘটনার বিলকিস বানো ও তাঁর পরিবার নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছেন। গ্রাম ছাড়া হয়ে গিয়েছেন। অন্যদিকে, বিলকিস বানোর বাড়ির উল্টোদিকে বাজির দোকান দিয়েছে, রাধেশ্যাম শাহ। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, ২০০২ সালের নির্মম ঘটনার পর থেকেই বিলকিস বানো তাঁদের গ্রামে থাকে না। বিলকিস বানো ও তাঁর পরিবার নিজেদের বাড়িটিকে একটি হিন্দু পরিবারকে ভাড়া দিয়েছেন।
বিলকিস বানোর দোষীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ
রাধেশ্যাম শাহের পাশাপাশি আশিস শাহ বিলকিস মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। তাঁদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিল। প্যারোলে মুক্তি পাওয়ার পর এক মহিলাকে হেনস্তা করার অভিযোগ করেছে আশিষ শাহের বিরুদ্ধে। এই বিষয়ে স্থানীয় থানায় এফআইআর করা রয়েছে। সাক্ষীদের বার বার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ আশিষ শাহের বিরুদ্ধে রয়েছে। আশিষ শাহ সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অন্যদিকে মুক্তি পাওয়া অন্য দোষী রাজুভাই সোনির সোনার দোকান ছিল। যদিও তিনি সাংবাদিকদের সামনে কোনও কথা বলতে অস্বীকার করেন।
বিলকিস বানো মামলা
২০০২ সালে গোধরায় কর সেবকদের পুড়িয়ে মারার পরেই গুজরাত জুড়ে জাঙ্গার পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেই দাঙ্গার সময় বিলকিস বানোর বাড়িতে একদল হিন্দু প্রতিবেশী হামলা করে। বিলকিস বানো ২১ বছরের ছিলেন। তিনি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তাঁর তিন বছরের একটি শিশু ছিল। বিলকিস বানোর পরিবারের মেয়েদের ওই দলটি গণধর্ষণ করে। পাশাপাশি বিলকিস বানো পরিবারের সাত জনকে হত্যা করে। ঘটনায় আদালত ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।
ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় সিতরাং, কোথায় আছড়ে পড়বে, নিশ্চিত করল আবহাওয়া দফতর