তিনটে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে প্রত্যাখান, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন বেঙ্গালুরুর চিকিৎসক
তিনটে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে প্রত্যাখান, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন বেঙ্গালুরুর চিকিৎসক
দেশজুড়ে করোনা ভাইরাস মহামারির বিরুদ্ধে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লড়ছেন যে সব চিকিৎকরা, তাঁরাই করোনায় আক্রান্ত হলে ব্রাত্য হয়ে পড়েন। সেরকমই এক ঘটনা ঘটল বেঙ্গালুরুতে। এখানকার এক ৫০ বছরের কোভিড যোদ্ধা চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হন। কিন্তু তাঁকে ভর্তি নিতে চায়নি শহরের তিনটি বেসরকারি হাসপাতাল। বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরু মেডিক্যাল কলেজ ও রিসার্চ ইনস্টিটিউটে মারা যান ওই চিকিৎসক।
ভর্তি নেয় নিতে অস্বীকার তিনটে হাসপাতাল
জানা গিয়েছে ওই চিকিৎসকের নাম ডাঃ মঞ্জুনাথ এসটি, যিনি রামানগর জেলার কনকপুরায় চিক্কামুমুদাভারি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কোভিড-১৯-এর ডিউটি করছিলেন। সেই সময় তিনি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হন। তিনি পরিবারের দ্বিতীয় সদস্য, যিনি এই মারণ ভাইরাসে মারা গেলেন। দু'দিন আগে তাঁর শ্বশুরও করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। বিবিএমপির মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ নগেন্দ্র কুমার জানিয়েছেন যে তাঁর শ্যালক ডাঃ মঞ্জুনাথের তীব্র জ্বর ও শ্বাসকষ্ট শুরু হয় ২৫ জুন। তিনি বলেন, ‘এটা করোনা সন্দেহর কেস ছিল এবং তিনি টেস্ট রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। আমরা চিকিৎসকরা তাঁকে তিনটে বেসরকারি হাসপাতালের কোথাও বেড দিতে পারিনি। তিনটে হাসপাতালই ভর্তি নিতে অস্বীকার করে কারণ তাঁর কাছে কোভিড টেস্ট রিপোর্ট ছিল না।'
ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে চিকিৎসকের
প্রথম হাসপাতাল ভর্তি নিতে অস্বীকার করায় পরের দুই হাসপাতালও কারণ না জেনেই ভর্তি নিতে অস্বীকার করে। ডাঃ নগেন্দ্র বলেন, ‘অবশেষে আমরান চারজন কুমারস্বামী লেআউটের কাছে চতুর্থ বেসরকারি হাসপাতালের সামনে বসে পড়ি তারপরই ২৫ জুনই তাঁকে ভর্তি নিয়ে নেওয়া হয়। তাঁর অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল কিন্তু আবার অবস্থার অবনতি হতে শুরু করলে আমরা তাঁকে বিএমসিআরআইতে ভর্তি করি ৯ জুলাই। তাঁকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়। চিকিৎসকরা জানান যে তাঁর ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গিয়েছে। এরপর বুধবারই তিনি মারা যান।'
দরকার ছিল ফিজিওথেরাপিস্টের
ডাঃ নগেন্দ্র জানিয়েছেন যে ডাঃ মঞ্জুনাথের ফিজিওথেরাপিস্টের দরকার ছিল। কারণ মঞ্জুনাথের প্রন অবস্থানের প্রয়োজন ছিল (নীচের দিকে বুকের অবস্থান করা)। কিন্তু কোনও ফিজিওথেরাপিস্ট পিপিই কিট পরেও কোভিড আইসিইউতে প্রবেশ করতে রাজি হননি। এমনকী বেসরকারি হাসপাতালের ফিজিওথেরাপিস্টরাও অস্বীকার করেন সহায়তা করতে।
চিকিৎসকের পরিবারে সকলে করোনা পজিটিভ
ডাঃ মঞ্জুনাথের যৌথ পরিবারের সকলেই করোনা পজিটিভ। তাঁর দন্ত চিকিৎসক স্ত্রী ও ১৪ বছরের পুত্র সহ সকলেই এই মারণ রোগের কবলে। ডাঃ নগেন্দ্র বলেন, ‘আমাদের পরিবারকে ভিগতে হচ্ছে কারণ আমরা চিকিৎসক। আমাদের পরিষেবা দিয়ে যেতেই হবে। এখন আমরা মঞ্জুনাথের দেহ আসার অপেক্ষায় রয়েছি।'
প্রতীকী ছবি
'গোড়া কেটে দিয়ে আগায় জল ঢালছেন মমতা, তৃণমূলের সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে কটাক্ষ দিলীপের