ভারতীয় ব্যাঙ্কগুলির অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ বাড়তে পারে, আশঙ্কাবাণী আরবিআই-এর
ভারতীয় ব্যাঙ্কগুলির অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ বাড়তে পারে বলে শতর্কবাণী শোনাল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। দেশের ম্যাক্রো অর্থনীতির বেহাল দশার কারণেই এই পরিমাণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। আরবিআই-এর অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার উপর প্রকাশিত এক রিপোর্টে এই আশঙ্কাবাণী শোনানো হয়।
অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ কত?
এর আগে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অপর এক রিপোর্টে বলা হয়েছিল যে গত দুই বছরে দেশের প্রায় সব ব্যাঙ্কের আর্থিক বৃদ্ধি কমেছে। ব্যাঙ্কের উপর ঋণের বোঝা চেপেছে প্রায় ৮.৭ শতাংশ। এদিকে এই সংখ্যাটাই প্রাইভেট ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে ১৬.৫ শতাংশ। যা ভয়ঙ্কর রকমের বেশি বলে দাবি করেছেন অর্থনীতিবিদরা। পাশাপাশি ঘাটতি দেখা দিয়েছে মূলধনের ক্ষেত্রে। এদিকে অনাদায়ী ঋণ ফেরানো তো দূরের কথা এখনও একাধিক ব্যাঙ্কে প্রায় ৩৭,০০০ কোটি টাকা অনাদায়ী ঋণ জমে গিয়েছে। ব্যাঙ্কগুলির হাল ফেরাতে প্রায় ৫ বার রেপোরেট কমিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তারপরেও অবস্থার কোনও পরিবর্তন চোখে পড়ছে না।
দেশের অর্থনীতির বেহাল দশার কারণ কী?
দীর্ঘদিন ধরে গাড়ি শিল্পে মন্দা, বুনিয়াদি শিল্পে উৎপাদন সংকোচন, নির্মাণ ও পরিকাঠামো শিল্প বিনিয়োগ কমে আসা সহ বিভিন্ন কারণে দেশের অর্থনীতি ধীর গতিতে চলতে থাকে। বাজারে নগদের যোগানও কমে যায়। এছাড়া অতিবৃষ্টির কারণে কৃষি ফলন নষ্ট ও খনন প্রক্রিয়া ব্যহত হয়।
দেশের প্রবৃদ্ধির হার নিম্নগামী রয়েছে
নিম্নগামী গ্রাফ বজায় রেখেই চলতি অর্থবর্ষের জুলাই থেকে সেম্পটেম্বরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে ভারতের প্রবৃদ্ধির হার কমে দাঁড়িয়েছে ৪.৫ শতাংশে। গত আর্থিক ত্রৈমাসিকে এই প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫ শতাংশ। গত বছরে এই ত্রৈমাসিকে ভারতের জিডিপি হার ছিল ৭ শতাংশ। গত ছয় বছরে এটাই জিডিপি হারের নিরিখে সব থেকে কম বৃদ্ধি। পাশাপাশি জানা গিয়েছে প্রথম দুই ত্রৈমাসিকে সরকারের রাজস্ব ঘাটতি ৭.২ লক্ষ কোটি টাকা। যা ইতিমধ্যে সরকারের পূর্ণ আর্থিক বর্ষের বাজেটের হিসাব ছাড়িয়ে গিয়েছে।
কর্পোরেট কর কমিয়েও বদল হয়নি পরিস্থিতির
এর আগে সেম্পটেম্বর মাসে কর্পোরেট কর কমানোর সিদ্ধান্তের পর মনে করা হয়েছিল দেশে উৎপাদন বাড়বে। এর ফলে জিডিপিও উর্ধ্বমুখী হবে বলে মনে করা হয়েছিল। তবে সরকারের সেই পদক্ষেপের পরও আশঙ্কার কথা জানিয়েছিল অর্থনীতিবিদরা। তারা জানিয়েছিল এই সিদ্ধান্তের জেরে সরকারের আর্থিক ঝুঁকির সম্ভাবনা বাড়বে। তবে সেই সময় তারা বলেছিল, কর কমানোয় কর্পোরেট ক্ষেত্রে ঋণ নিয়ে ব্যবসার অগ্রগতি হবে। এদিকে আরবিআইয়েরও বক্তব্য, এই সিদ্ধান্তের জেরে ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার বিষয়ে অনীহা দেখা দিয়েছে সংস্থাগুলির।