For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

৩০ বছর পর আগে ধর্ষণের শিকার হয়েছিল মা, ছেলের চেষ্টায় ধরা পড়ল অপরাধীরা

Array

Google Oneindia Bengali News

ঘটনা ৩০ বছর আগের। মহিলাকে তার ফল ভোগ করতে হয়েছে এই দীর্ঘ সময়। শেষ পর্যন্ত মিলছে শান্তি। মহিলার ছেলেই ধরিয়ে দিল তাঁর মায়ের দুই ধর্ষককে। ১১ অগাস্ট ৪২ বছর বয়সী সবিতা তার আইনজীবীর কাছ এই স্বস্তির খবর পান। জানা যায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ প্রায় ৩০ বছর আগে সবিতাকে বারবার ধর্ষণ করার জন্য দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আর এতে তাদের সাহায্য করেছেন সবিতার ছেলে নিজে।

সবিতা বলেন, "আমি যেমন স্বস্তি অনুভব করছি, তার সঙ্গে দুঃখ, আনন্দ, রাগ সব একসঙ্গে আমার অনুভব করছি।" সবিতা সংবাদ সংস্থা নিউজলন্ড্রিকে বলেন, "আমি তাদের দুজনকে একবার দেখতে চাই এবং তাদের একটা করে কষিয়ে চড় দিতে চাই। ওরা আমার জীবন নষ্ট করে দিয়েছে।" ওই ঘটনার ফলে সবিতা ১৩ বছর বয়সেই সন্তান প্রসব করেছিলেন। ডিএনএ পরীক্ষায় অভিযুক্তদের একজনের সাথে সবিতার সেই সন্তানের মিল ছিল যার ফলে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করতে পারে। ঘটনায় দুই আবার দুজনে ভাই। একজনের নাম মোহাম্মদ রাজি (৪৮) এবং নকী হাসান (৫১) ভাই।

শাহজাহানপুরের সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ এস আনন্দ বলেন, "তার ছেলে ছিল আমাদের সবচেয়ে বড় প্রমাণ। আর ওনার ছেলেই এই ঘটনা নিয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করতে রাজি করেছিল।"

অপরাধ

অপরাধ

১৯৯৪ সালে। সবিতার বয়স তখন ১২ বছর। ক্লাস সেভেনের এর ছাত্রী। শাহজাহানপুর জেলায় তার বোন এবং মামার সাথে থাকতেন। তার বাবা সেনাবাহিনীতে ছিলেন যখন তার মা, অন্য চার বোন এবং দুই ভাই হারদোই গ্রামে থাকতেন। স্কুল শেষে প্রতিদিন সন্ধ্যায় সবিতা সাইকেল চালিয়ে তাদের পাড়ায় যেতেন। আর তখনই একদল দুস্মাষ্কৃতি মাঝে মাঝেই তার সাইকেলের সামনে দাঁড়িয়ে পড়ত এবং সে সাইকেল থেকে পড়ে গেলে হাসত। তারা বলত দেখো, "মোহাল্লা মে নয়ি চিড়িয়াঁ আয়া হ্যায়।" সবিতা বলেন, "আমি তখনও জানতাম না এর অর্থ কী,তবে এখনও সেটা আমার স্মৃতিতে রয়ে গিয়েছে।"এই দলের মধ্যে ছিলেন রাজি এবং হাসান, তখন বয়স ছিল ১৮ এবং ২১ বছর।

এক গ্রীষ্মের বিকেলে, সবিতা বাড়িতে একা ছিলেন। তার বোন একজন শিক্ষক হিসেবে কাজ করতেন। তিনি বলেন, রাজি ও হাসান দেয়াল লাফিয়ে তার বাড়িতে প্রবেশ করে বলে অভিযোগ। তিনি বলেন , "তাদের একজন আমাকে চেপে ধরে, অন্যজন আমার পা বেঁধে দিয়েছিল। তারপর তারা আমাকে প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে ধর্ষণ করে।" সবিতা এও বলেন, "এরপর তারা আমাকে খুলে দেয় এবং আমাকে বলে যে আমি যদি কাউকে বলি, তারা আমার বোনকে মেরে ফেলবে।"

এরপর তিনি যখনই বাড়িতে একা থাকতেন তখনই এই ঘটনা ঘটত। পরবর্তী ছয় মাস ধরে চলে এই অত্যাচার। বোনের কথা ভেবে সবিতা এই অত্যাচারের কথা কাউকে বলেনি। ধর্ষণ শুরু হওয়ার কয়েক মাস পর তার প্রথম পিরিয়ড হয়। তিনি বলেন, "আমি জানতাম না এটা কি ছিল। আমি ভেবেছিলাম যে আমার সাথে যা করা হয়েছে তার কারণেই রক্ত ​​হয়েছে।"

কিন্তু তার প্রথম পিরিয়ডের পর তার কখনও রক্তপাত হয়নি। সে অসুস্থ বোধ করতে শুরু করে, খেতে বা ঘুমাতে পারত না। কয়েক মাস পরে সে স্কুল ছেড়ে দেয়। যখন সে "বারবার অজ্ঞান" হতে শুরু করে, তখন তার বোন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ডাক্তার বলে সে গর্ভবতী। তিনি বলেন, "সবাই হতবাক হয়ে গিয়েছিল। তখন আমি আমার বোনের কাছে সবকিছু স্বীকার করেছিলাম।"

১২ বছর বয়সী মেয়ে তখন তিন মাসের গর্ভবতী। ডাক্তার বলেছিলেন যে গর্ভপাতের করালে তাঁকে "বাঁচতে পারা যাবে না"। তিনি তাদের থানায় মামলা করার কথা বলেন তবে সবিতার পরিবার তা করেনি। পরিবর্তে, সবিতার বোন এবং শ্যালক সেদিন সন্ধ্যায় রাজি এবং হাসানের বাবা-মায়ের কাছে গিয়ে তাদের ঘটনাটি জানায়। তারা এসব বিশ্বাস করতে অস্বীকার করে।

হুমকি

হুমকি

পরে রাতে রাজি ও হাসান একটি দেশীয় পিস্তল নিয়ে তাদের বাড়িতে আসে বলে অভিযোগ। সবিতা বলেব "তারা আমার বোন এবং শ্যালককে মারধর করে। কাউকে জানালে তারা আমাদের সবাইকে মেরে ফেলবে এবং আমাদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। ভয় পেয়ে, তারা তিনজন তাদের ব্যাগ গুছিয়ে পরের দিন ১৬০ কিলোমিটার দূরে রামপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সবিতার বোন কখনই তাদের বাবা-মাকে বলেনি যে ছয় মাস পরে কি হয়েছিল, তাঁর তখন সন্তানের জন্ম দেওয়া আসন্ন ছিল।

তারা সবিতার উপর বিব্রত ছিল। মা বলেছিলেন যে গ্রামে ফিরে না যাওয়াই ভাল কারণ লোকেরা এই গর্ভাবস্থার বিষয়ে জানতে শুরু করে দিয়েছে। সবিতার যখন প্রসব বেদনা শুরু হয় তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৩ বছর।

সবিতা সন্তানকে দেখেনি। তিনি বলেন, "আমি জানতাম না এটা মৃত নাকি জীবিত। আমি জানতাম না এটা ছেলে না মেয়ে। আমার বোন আমাকে বলেছে এখন আমাকে এটা ভুলে যেতে হবে, না হলে কেউ আমাকে বিয়ে করবে না। আমি আমার সন্তান সম্পর্কে একটিও প্রশ্ন করতে পারিনি।"

বিবাহ ও বিচ্ছেদ

বিবাহ ও বিচ্ছেদ

সবিতা এবং তার বোন রামপুরে থাকতেন। তিনি ১৯৯৮ সালে দশম শ্রেণী থেকে স্নাতক হয়ে স্কুলে ফিরে এসেছিলেন। ২০০০ সালে, ১৮ বছর বয়সে তার বাবা-মা তাঁর বিয়ে দিয়ে দেয়। স্বামী তাকে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে দেয়নি। ২০০২ সালে তাঁর সন্তানের জন্ম হয় কিন্তু ২০০৬সালে, তার স্বামী সবিতার গ্রামের একজনের মাধ্যমে তার অতীত সম্পর্কে জানতে পারেন এবং মা ছেলে দুজনকেই পরিত্যাগ করে।

রাজুর ফিরে আসা

রাজুর ফিরে আসা

সবিতা ও তার ছেলে রামপুর ছেড়ে লখনউ চলে যায়। তিনি একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নেন এবং নানা ভাবে রোজগার শুরু করেন। প্রথমে একটি মলে সেলসগার্ল হিসাবে, তারপর সেলাই করা শিখে এবং একটি টেইলারিং ব্যবসা শুরু করেন। তারপর একটি বইয়ের দোকানে কাজ করতেন। তারপর, ২০০৭ সালের এক সকালে তিনি দরজা খুলে দেখেন একটি ১৩ বছর বয়সী ছেলে দাঁড়িয়ে আছে।

সবিতা তাঁর পরিচয় জানতে চান। সে বলেছে সে তাঁর ছেলে। সে বিশ্বাস করতে পারিনি। কান্নায় ভেঙে পরে। তিনি কখনও ভাবেননি যে তাঁর ছেলেকে তিনি আবার দেখতে পাবেন। ছেলেটির নাম রাজু।

রাজুর মায়ের কাছে ফেরার যাত্রা জটিলতায় ভরপুর ছিল। জন্মের পর তাকে সবিতার গ্রামের এক আত্মীয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। কয়েক বছর পরে, তার পালক পিতামাতা এক সন্তানের জন্ম দেন এবং "তার সাথে খারাপ ব্যবহার " শুরু করেন। গ্রামের অন্যান্য শিশুরা তাকে নানাভাবে বিব্রত করত, তাঁকে নিয়ে ঠাট্টা করত। হাসির পাত্রে পরিণত হয়েছিল রাজু।

২০০৬ সালে সবিতা এবং তার স্বামীর বিচ্ছেদ ঘটে। রাজুর বয়স তখন ১৩ বছর। যখন তার জৈবিক মায়ের বিবাহবিচ্ছেদের খবর গ্রামে জানাজানি হয়, তখন তার পালক পিতামাতা তাকে লখনউ যাওয়ার বাসে তুলে দেন, তাকে তার সাথে গিয়ে থাকতে বলে। রাজু যখন লখনউতে আসেন তখন সবিতার বয়স ছিল ২৫ বছর। রাজু স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে।

রাজু বয়স বাড়ার সাথে সাথে সে বারবার সবিতাকে তার বাবার কথা জিজ্ঞেস করে। সে বলেনি। একদিন ছেলে হুমকি দেয় যে না বললে সে আত্মহত্যা করবে। শেষ পর্যন্ত সে ছেলেকে পুরো ঘটনা বলে। ২০১৯ সালে, রাজু তার মাকে পুলিশে অভিযোগ করার জন্য অনুরোধ করে।

২০২০ সালের জুলাই মাসে, সবিতা এবং রাজু একটি বাসে শাহজাহানপুরে যান। সে সদর বাজার থানায় গিয়ে তার ঘটনা বলে। সদর বাজারের পুলিশ এফআইআর নিতে অস্বীকার করে। এরপর সবিতা অ্যাডভোকেট মহাম্মদ মুখতার খানের সাথে দেখা করেন, যিনি ২০২০ সালের আগস্টে একটি মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মামলাটি নিয়ে যান। ফৌজদারি কার্যবিধির 156(3) ধারার অধীনে, যা একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে তদন্তের আদেশ দেওয়ার ক্ষমতা দেয়, আদালত পুলিশের কাছে এফআইআর করার দাবি। ৫ মার্চ, ২০২১ -এ, অপরাধের,২৭ বছর পরে, সবিতাকে ধর্ষণ করার জন্য দুই অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়।

এরপরই শুরু হয় পুলিশি তদন্ত। সেই সময় স্টেশন ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মঙ্গল সিং অভিযুক্ত দুইজনকে খুঁজতে শুরু করেন। তাদের প্রচেষ্টা ফলপ্রসূ হয়ে। এফআইআর দায়ের করার প্রায় ২৫দিন পরে, তারা আবিষ্কার করে যে ভাই রাজি এবং হাসান, শাহজাহানপুরে ব্যবসা চালাচ্ছিল। প্রাথমিক কিছু অসহযোগিতা সত্ত্বেও, রাজি এবং হাসান অবশেষে থানায় নিজেদের হাজির করে। কিন্তু এত পুরানো একটি মামলায়, প্রমাণ সংগ্রহ করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

২০২১ সালের জুনে, পুলিশ রাজু এবং দুই ব্যক্তির কাছ থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে। এপ্রিল ২০২২-এ, একটি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে যে নকী হাসানের ডিএনএ রাজুর সাথে মিলেছে - তারা পিতা ও পুত্র। এরপরেই দুই ভাই পালিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত হায়দরাবাদে তাদের পাওয়া যায়। রাজীকে ৩ অগাস্ট এবং হাসানকে ১০ অগাস্ট গ্রেফতার করা হয়। দুজনই বর্তমানে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রয়েছে। সবিতার আইনজীবী বলেছেন, তারা আশা করছেন পুলিশ তাদের বিরুদ্ধেও গণধর্ষণের অভিযোগ আনবে।

English summary
son helped her mother to find her rapists
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X