'পুরুষ' নন বলল আদালত, ধর্ষণের অভিযোগ থেকেও মুক্তি পেলেন 'সোনার মেয়ে' পিঙ্কি প্রামাণিক
সোনার মেয়ে পিঙ্কির বিরুদ্ধে ধর্ষণ, শারীরিক নির্যাতন, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগ তুলেছিলেন অনামিকা আচার্য। এই সমস্ত অভিযোগই এদিন খারিজ করে দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার।
পিঙ্কির সঙ্গে একই বাড়িতে থাকতেন অনামিকা। ২০১২ সালে অনামিকা পিঙ্কির বিরুদ্ধে ধর্যণের অভিযোগ আনেন। একইসঙ্গে অভিযোগ তোলেন পিঙ্কি মহিলা নন, পুরুষ। এরপরেই বিতর্ক শুরু হয় পিঙ্কির লিঙ্গ নিয়। পিঙ্কি স্ত্রী, পুরুষ নাকি উভলিঙ্গ তা জানতে একটি বেসরকারি নার্সিংহোম পিঙ্কির লিঙ্গ পরীক্ষাও করানো হয়। মেডিক্যাল রিপোর্ট বলে পিঙ্কি পুরুষ। ফলে জেলে নিয়ে যাওয়া হয় পিঙ্কিকে।
পিঙ্কির লিঙ্গ কেলেঙ্কারি নিয়ে পুলিশি ভূমিকায় উত্তাল হয় গোটা দেশ। পুলিশের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ ওঠে। প্রথমত পিঙ্কির লিঙ্গ পরীক্ষার আগেই মহিলা বিভাগে সোনাজয়ীকে রাখা হয় পুরুষ সেলে। দ্বিতীয়ত সরকারি হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে কেন লিঙ্গ পরীক্ষার জন্য পিঙ্কিকে বেসরকারি নার্সিংহোমে পিঙ্কিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অনেকে। তৃতীয়ত পিঙ্কিকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় কেন কোনও মহিলা পুলিশকে রাখা হয়নি। এবং পিঙ্কিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার নাম করে পুরুষ পুলিশ যথেচ্ছভাবে তাঁর শরীরে বিভিন্ন ব্যক্তিগত অঙ্গে হাত লাগিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছিল।
এর পর ২০১৩ সালে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন পিঙ্কি। পিঙ্কির বিরুদ্ধে ৩৭৬, ৪১৭, ৪২০, ৩২৫, ৫০৬ ও ৪৯৩ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এই সব কটি অভিযোগ থেকেই পিঙ্কিকে মুক্ত করল হাইকোর্ট। শুক্রবার হাইকোর্টের রায়ে খুশি পিঙ্কি। ভারতীয় রেলের কর্মী পিঙ্কি জানিয়েছেন, খুব হাল্কা লাগছে। গত ২ বছর ধরে আমি যে মানসিক চাপের মধ্যে ছিলাম তা বলে বোঝাতে পারব না। এখনও আমাকে কর্তব্যরত অবস্থায় দেখে লোকে টিটকিরি মারে। হয়তে আদালতের আজকের রায়ে তা বন্ধ হবে।
তবে এই গোটা ঘটনাটিতে তাঁর বিরুদ্ধে একটি বড় চক্রান্ত বলে ব্যাখ্যা করেছেন পিঙ্কি। জানিয়ে দিয়েছেন, যারা আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছিল তাদের শাস্তি চাই। তাই আবার আদালতে যাব।"