বেজিংকে কড়া বার্তা দিয়েই লাদাখমুখী রাজনাথ সিং! এলএসি ইস্যুতে ফের কোন পথে ভারত-চিন সম্পর্ক?
পূর্ব লাদাখের কাছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর স্থিতিশীল অবস্থা পরিবর্তনের যে কোন একতরফা প্রচেষ্টা মেনে নেওয়া হবে না৷ সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে স্পষ্ট জানিয়ে দিল বিদেশমন্ত্রক৷ বেজিংকে এই কড়া বার্তা দেওযার পরই কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নিল যে লাদাখের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলি পরিদর্শনে গেলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং স্বয়ং। জানা গিয়েছে তাঁর সঙ্গে এই সফরে আছেন সেনাপ্রধান এমএম নারভানে।
রাজনাথের বদলে এর আগে লাদাখে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রসঙ্গত, এর আগে কথা ছিল যে লাদাখের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ৩ জুলাই লাদাখ পরিদর্শনে যাবেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও সেনাপ্রধান মুকুন্দ নারভানে। তবে সেই সফর বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তবে সীমান্ত সমস্যার মধ্যে সবাইকে চমকে দিয়ে সেখানে পৌঁছান স্বয়ক প্রধানমন্ত্রী। এটা হয়ত সেই সময় আশা করেনি বেজিংও।
শান্তি ফেরাতে চতুর্থ বৈঠক
মঙ্গলবার পূর্ব লাদাখের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চতুর্থ দফায় বৈঠক করে ভারত-চিনা সেনা৷ এই মিলিটারি বৈঠকের পর সেনার তরফে বলা হয়, ভারত ও চিন পূর্ব লাদাখ থেকে সম্পূর্ণভাবে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে দায়বদ্ধ৷ কিন্তু, এই প্রক্রিয়াটি জটিল হওয়ায় তা যাচাইয়ের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছে ভারতীয় সেনা৷
সেনা প্রত্যাহারের প্রথম দফার বাস্তবায়ন
সেনার তরফে বলা হয়, ভারতীয় ও চিনা সেনার সিনিয়র কমান্ডাররা সেনা প্রত্যাহারের প্রথম দফার বাস্তবায়নের বিষয়ে এবং সেনাবাহিনীকে সম্পূর্ণ সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপগুলি নিয়েও আলোচনা করেছেন। দুই দেশের কর্পস কমান্ডাররা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার ভারত সীমান্তের ভিতর চুশুলে গতকাল টানা ১৫ ঘণ্টা ধরে আলোচনা করেন৷ মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে বুধবার রাত দু'টো পর্যন্ত এই আলোচনা চলেছিল৷ এই বৈঠকে সেনা প্রত্যাহার প্রক্রিয়ার জটিলতা নিয়ে এবং হাজার হাজার সেনাবাহিনী সরানোর বিষয়েও আলোচনা করা হয়৷
শর্ত মেনে পিছিয়ে যায় ভারতীয় সেনা
এর আগে গত ৩০ জুনের সামরিক বৈঠকের শর্ত মেনে গালওয়ান উপত্যকার ১৪ নম্বর পেট্রোলিং পয়েন্ট, গোগরা ও হট স্প্রিং এলাকা থেকে ১ কিলোমিটারেরও বেশি পিছিয়েছে ভারতীয় সেনা। তবে এরই মধ্যে ভারত কড়া বার্তা দিয়ে বেজিংকে স্পষ্ট জানিয়ে দিল যে লাদাখের আসেপাসের এলাকা থেকে পূর্ণাঙঅগ সেনা প্রত্যাহার করতে হবে বেজিংকে।
তীক্ষ্ণ নজর রাখছে ভারত
তিন দফায় সেনা সরানোর প্রক্রিয়ার উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছে ভারত। কোনও ভাবে যদি চিন সেই চুক্তি লঙ্ঘন করে তাহলে ভারতও থমকে যাবে। সেনা প্রত্যাহারের চুক্তি যাতে কোনও ভাবে লঙ্ঘন না করা হয় সেদিকে নজর রাখছে ভারতীয় সেনা। এর জন্য দিনের পাশাপাশি রাতেও বায়ুসেনার বিমান ও হেলিকপ্টর টহল দিচ্ছে লাদাখের সীমান্ত জুড়ে।
ভারত ও চিনের মধ্যে চাপা উত্তেজনা
টহলদারী সীমান্ত নিয়ে বরাবরই ভারত ও চিনের মধ্যে চাপা উত্তেজনা ছিল। ভারত বিশ্বাস করে 'ফিঙ্গার ১' থেকে 'ফিঙ্গার ৮' পর্যন্ত টহল দেওয়ার অধিকার রয়েছে তাদের এবং চিন মনে করে যে 'ফিঙ্গার ৮' থেকে 'ফিঙ্গার ৪' পর্যন্ত টহল দেওয়ার অধিকার রয়েছে তাদেরই।
১৫ জুনের সংঘর্ষস্থল
১৫ জুন, এই 'ফিঙ্গার ৪' এলাকাতেই উভয় পক্ষের সেনার মধ্যে সহিংস সংঘর্ষ বাঁধে। পরে উভয় পক্ষের সীমানা যেখানে কয়েক হাজার ভারতীয় সৈন্যকে কাঁটাতারের সাথে জড়িত লাঠির মতো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করা হয়েছিল। 'ফিঙ্গার ৪'-এ এই জন্যেই উল্লেখযোগ্য হারে সেনার সংখ্যা বাড়িয়েছিল চিন যাতে ভারতীয় সেনারা আর 'ফিঙ্গার ৮' এর দিক দিয়ে টহল দেওয়ার সুযোগ না পায়।
চিনের জনগণকে ভালোবাসেন, লাদাখ ইস্যুতে চাপানউতোরের মাঝেই ট্রাম্পের মন্তব্যে তোলপাড় বিশ্ব