মমতা-রাহুল দ্বৈরথ গোয়ায়! ২০২২ বিধানসভা নির্বাচনের আগে জোট-সমীকরণ নিয়ে জল্পনা
মমতা-রাহুল দ্বৈরথ গোয়ায়! ২০২২ বিধানসভা নির্বাচনের আগে জোট-সমীকরণ নিয়ে জল্পনা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেস গোয়াকে এবার পাখির চোখ করেছেন। কংগ্রেস নয়, তৃণমূলই বিজেপি শসানের অবসান ঘটাবে বলে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া হয়েছে সম্প্রতি। আর প্রশাস্ত কিশোরের পরিকল্পনামাফিক গোয়ায় তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো পা রাখতে চলছেন ২৮ অক্টোবর। তাঁর সফর চলাকালীনই আবার কংগ্রেসেকর প্রাক্তন প্রধান রাহুল গান্ধী আসছেন গোয়ায়। তার ফলে নয়া সমীকরণ জল্পনা শুরু হয়েছে গোয়া বিধানসভা ভোটের আগে।
গোয়া নির্বাচনে জোট ও সমঝোতাকে কেন্দ্র করেই মমতার সফর
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল কংগ্রেসকে ভেঙে গোয়ায় বড় হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। মমতার সফরে আরও অনেক কংগ্রেস নেতা দল ছাড়তে পারেন এমন জল্পনা যেমন তৈরি হয়েছে, তেমনই গোয়ার আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূলের সমঝোতা নিয়ে আলোচনাও হতে পারে। মোট কথা গোয়া নির্বাচনে জোট ও সমঝোতাকে কেন্দ্র করেই মমতার সফর।
গোয়ায় দলের ভাঙন রোখাই এখন রাহুলের মূল উদ্দেশ্য
ঠিক এই সময়ে রাহুল গান্ধী আসার পিছনে অন্য কোনও সমীকরণ লুকিয়ে রয়েছে কি না তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। কংগ্রসের একাধিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে ৩০ অক্টোবর তিনি পা রাখবেন গোয়ায়। রাজনৈতিক মহল মনে করছে এবার গোয়ায় দলের ভাঙন রোখাই এখন রাহুলের মূল উদ্দেশ্য। মমতার সফর চলাকতালীন তাই রাহুলের গোয়ায় উপস্থিতি তাৎপর্যপূর্ণ।
বিজেপি ভাঙনের খেলায় কিস্তিমাত করে ৫ বছর টিকে ক্ষমতায়
রাহুল গান্ধীর কংগ্রেস ২০১৭ সালে গোয়ায় সর্বাধিক আসন পেয়েও ক্ষমতা দখল করতে পারেনি। বিজেপি ভাঙনের খেলায় কিস্তিমাত করে ৫ বছর টিকে রয়েছে ক্ষমতায়। ৪০ আসনবিশিষ্ট গোয়া বিধানসভায় ২১ ছিল ম্যাজিক ফিগার। কংগ্রেস বৃহত্তম দল হয় ১৭টি আসন পেয়ে। তা সত্ত্বে চারজনকে ম্যানেজ করে ক্ষমতায় ফিরতে পারেনি কংগ্রেস। আর বিজেপি ১৩টি আসনে জিতে অন্য পার্টি ম্যানেজ করে, কংগ্রেসকে ভেঙে সরকার গঠন করে। এখন তাঁদের একারই শক্তি গিয়ে দাঁড়িয়েছে ২৭-এ। আর কংগ্রেস কমে ৫-এ।
কংগ্রেস যখন ভাঙছে রাহুল চ্যালেঞ্জ নিলেন বন্ধু দল তৃণমূলের
এই পরিস্থিতিতে ২০২২-এর বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। আর মাস তিনেক পরেই ভোট। তার আগে এবার ক্ষমতায় ফিরতে মরিয়া কংগ্রেস। কিন্তু তাঁদের কাছে এবার লড়াই আরও কঠিন। বিজেপির চ্যালেঞ্জ তো আছেই, রয়েছে তৃণমূলের হুঙ্কারও। তৃণমূল রাহুলের দলকে ভেঙে ছারখার করে দিচ্ছে। ফলে শক্তিক্ষয় হয়ে চলছে প্রতিনিয়ত। এই পরিস্থিতিতে রাহুল চ্যালেঞ্জ নিলেন বন্ধু দল তৃণমূল কংগ্রেসেরও।
বিজেপি সরকার জনসমর্থন হারিয়েছে, কংগ্রেসকে ফেরাতে চায় গোয়া
কংগ্রেসকে ভেঙে গোয়ায় দলের সংগঠন তৈরি করে তৃণমূল এখন আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে জোট আলোচনা শুরু করতে চলেছে। তখন কংগ্রেস অনেক পিছিয়ে পড়েছে। যদিও কংগ্রেসের দাবি, যতটা গর্জাচ্ছে তৃণমূল, ততটা বর্ষাতে পারবে না। পশ্চিমবঙ্গের প্রভাব গোয়ার মাটিতে ফেলতে পারবে না তৃণমূল। দলের পর্যবেক্ষক হিসেবে কেন্দ্রীয়মন্ত্রী পি চিদম্বরমকে নিয়োগ করেছে কংগ্রেস। তাঁর দাবি, বিজেপি সরকার জনসমর্থন হারিয়ে ফেলেছে। তাঁরা চাইছে কংগ্রেসকে ফেরাতে। আপ বা তৃণমূল এখানে জনমানসে সে অর্থে প্রভাব ফেলতে পারবে না।
গোয়ায় তৃণমূলের ভূমিকার সমালোচনা চিদম্বরমের, ছোট দলকে বার্তা
তিনি গোয়ায় তৃণমূলের ভূমিকা নিয়েও মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল। তাঁরা বিজেপিকে হারিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখতে সমর্থন হয়েছে। সেই সাফল্য দেখিয়ে গোয়াতেও বিজেপিকে হারানোর পরিকল্পনা করছে তারা। এভাবে অন্য দলের নেতাদের দলত্যাগে উৎসাহিত করে তাঁরা ঠিক কী উদ্দেশ্য সাধন করতে চাইছে তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। বিজেপিকে পরাস্ত করে গোয়ায় নতুন সরকার গঠনের জন্য ভালো অবস্থানে রয়েছে কংগ্রেস। ছোট দলগুলি কংগ্রেসকে সমর্থন করতে চাইলে তারা আলোচনার জন্য প্রস্তুত বলে জানান তিনি।
তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতা করতে আগ্রহী গোয়ার আঞ্চলিক দলগুলি
তবে কংগ্রেসের আগে ছোট দলগুলির সঙ্গে সমঝোতার আলোচনা শুরু করেছে তৃণমূল। গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টি বা জিএফপি তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতা করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছে। এই মর্মে জিএফপি-র সভাপতি তথা প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী বিজয় সরদেশাই তৃণমূলের ভোটকৌশলী প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে আলোচনা চালিয়েছেন। বিজয় সরদেশাই জানান, রাজ্যের আমজনতার মনোভাব বুঝেই তাঁরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা ভেস্তে যাওয়ায় নেপথ্য কারিগর তৃণমূলে
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের বিধানসভা ভোটের আগে আসন সমঝোতা নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে কয়েকদফা আলোচনা হয়েছিল জিএফপির। কিন্তু তা ফলপ্রসূ হয়নি। সেই আঙ্গিকে এবার তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতার করার পরিকল্পনা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা ভেস্তে যাওয়ায় এককভাবে লড়েছিল জিএফপি। কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা ভেস্তে যাওয়ার জন্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তৎকালীন কংগ্রেস নেতা লুইজিনহো ফালেইরোকে দুষেছিলেন সরদেশাই। তিনি এখন রাজ্যে তৃণমূলের প্রধান মুখ।
কলকাতায় সংক্রমণ বাড়াচ্ছে উদ্বেগ, রাজ্যকে চিঠি কেন্দ্রের! তিনদিনের কার্যত লকডাউন শহরের একপ্রান্তে