রাজস্থানের ঝড় সামলে যোগ্যতা প্রমাণ রাহুল গান্ধীর, সভাপতি পদের দ্বিতীয় ইনিংস কি শুরু শীঘ্রই?
মধ্যপ্রদেশের পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেননি রাহুল গান্ধী। সেবার রাহুলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দল ছেড়েছিলেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। তবে রাজস্থানের মরুঝড় শান্ত করতে সমর্থ হলেন রাহুল গান্ধী। আর তাতেই মনে করা হচ্ছে যে দলের রাশ ধরার জন্যে নিজের যোগ্যতা প্রমাণের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ রাহুল গান্ধী।
রাহুলের রাজস্থানের পরিস্থিতি সামাল
রাজস্থানের পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে রাহুল যে কাজগুলে সব থেকে ভালো ভাবে করেছেন, তা হল, নিজের ঘনিষ্ঠদের উপর দায়িত্ব দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছেন তিনি। রণদীপ সুরজেওয়ালা থেকে অজয় মাকেন, এঁরা সকলেই রাহুল ঘটনিষ্ঠ বলে পরিচিত। এদিকে কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক পদ থেকে অবিণাশ পাণ্ডেকে সরিয়ে অজয় মাকেনকে বসানো এক বড় ইঙ্গিত।
পর্যবেক্ষকের পদ থেকে সরানো হয় গেহলটের কাছের মানুষকে
দলে ফিরে আসার জন্যে সচিন পাইলটের অন্যতম দাবি ছিল যাতে অবিণাশকে কংগ্রেসের পর্যবেক্ষকের পদ থেকে সরানো হয়। কারণ অবিণাশ অশওক গেহলট পন্থী। এবং পাইলটের দাবি মেনে তাই করা হয়েছে। এবং অবিণাশের জায়গায় বসানো অজয় মাকেন রাহুল গান্ধীর ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। আর কমিটি তৈরি করে রাজস্থান পরিস্থিতি সামাল দিয়ে রাহুল বুঝিয়ে দিলেন যে সংগঠন ধরে রাখতে তিনি জানেন। আর তাই মনে করা হচ্ছে দলের শীর্ষ পদে রাহুলের ফেরা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
রাহুলকে ফেরানোর দাবি
কয়েকদিন আগেই রাহুল গান্ধীকে ফের কংগ্রেস শীর্ষে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়ে শশী বলেছিলেন, 'যদি রাহুল গান্ধী কংগ্রেস সভাপতির পদে ফিরে আসতে তৈরি থাকেন তাহলে তাঁকে শুধু তাঁর পদত্যাগ পত্রটা প্রত্যাহার করতে হবে। আমার মনে হয়ে সকল কংগ্রেস কর্মী থেকে শুরু করে কার্জকরী সমিতির সদস্যরাও রাহুলকেই ফিরে আসতে দেখতে চান। কারণ ২০১৭ সালে তিনি নির্বাচিত হয়ে কংগ্রেস সভাপতি হয়েছিলেন।'
কংগ্রেসের তরুণ বনাম প্রবীণ দ্বন্দ্ব
লোকসভা ভোটে কংগ্রেস গো হারা হারার পর সভাপতি পদ থেকে পদত্যা করেন রাহুল গান্ধী। কোনওভাবেই তিনি ফিরতে রাজি হচ্ছিলেন না। অশোক গেহলট থেকে কমলনাথ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা তাঁর কাছে এই নিয়ে আবেদন নিবেদন করেছেন। কিন্তু কিছুতেই দলের নেতৃত্বের দায়িত্ব নিতে চান না তিনি এমনই জানিয়েছেন। তবে বর্ষীয়ান যে নেতারা রাহুলকে দলের শীর্ষ স্থানে ফিরে আসার আবেদন জানিয়েছেন তাঁদের সঙ্গে রাহুলের তরুণ ব্রিগেডের মনোমালিন্য প্রকাশ্যে।
সনিয়া গান্ধীর উপরেই ভরসা রাখতে হয়েছে দলকে
কংগ্রেসের নেতৃত্ব দেওয়ার মতো বিকল্প কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। গান্ধী পরিবার ছাড়া কাউকে সভাপতি-র পদে বসাতে নারাজ সিংহভাগ কংগ্রেস নেতা। কিন্তু রাহুল রাজি না হওয়ায় সেই সনিয়া গান্ধীর উপরেই ভরসা রাখতে হয়েছে দলকে। তবে রাজস্থানের পরীক্ষায় পাশ করায় এবার রাহুল ফের দলের রাশ ধরতে পারেন বলে মত বিশেষজ্ঞদের। কারণ রাজস্থানের ক্ষেত্রে বকলমে রাহুল পার্টি প্রেসিডেন্টের মতো কাজ করেই পরিস্থিতি সামাল দেন।
রাহুলের দ্বিতীয় ইনিংস
এবং দলীয় সভাপতি হিসাবে রাহুলের প্রথম ইনিংসের ফেল হওয়ার পিছনে অনেকে এই কারণটা তুলে ধরেছিলেন যে, রাহুলের আশেপাশে থাকা নেতারা আদতে রাহুল ঘনিষ্ঠ না হওয়ায় রাহুল নিজের ইচ্ছে মতো দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি। কিন্তু এবার পরিস্থিতি বদলেছে। সনিয়া ও প্রিয়াঙ্কার মদতে রাহুল ধীরে ধীরে দলের পদে নিজের লোকোদের বসাচ্ছেন। আর তাই কংগ্রেস সভাপতি হিসাবে রাহুলের দ্বিতীয় ইনিংসের সূচনা এবার হতে পারে যেকোনও সময়। অপেক্ষা শুধু সনিয়ার ডিক্লেরেশনের।