অধীর-মান্নানদের ডেকে জনে জনে কথা রাহুলের, প্রদেশ নেতাদের মন বুঝতে অভিনব পন্থা
লোকসভা ভোটের আগে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের মন বুঝতে বৈঠকে বসলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। তিনি একে একে সমস্ত নেতার সঙ্গে কথা বলছেন। জানতে চাইছেন তাঁদের মনে কথা।
লোকসভা ভোটের আগে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের মন বুঝতে বৈঠকে বসলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। তিনি একে একে সমস্ত নেতার সঙ্গে কথা বলছেন। জানতে চাইছেন তাঁদের মনে কথা। পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস নেতৃত্ব কাকে চাইছেন, কার সঙ্গে জোটে যেতে চান তাঁরা এবং কী করলে কংগ্রেসে ফের হারানো গৌরব ফিরতে পারে, তা জানতেই এই উদ্যোগ রাহুল গান্ধীর।
২০১৯-এক লোকসভা ভোটকে পাখির চোখ করেছে কংগ্রেস। সেই লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজ্যের সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছেন তিনি। শুধু দলীয় নেতৃত্ব নয়, অন্য আঞ্চলিক দলের সঙ্গেও তিনি নির্বাচনী সমাঝোতাও গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে সেই নির্বাচনী সমাঝোতা গড়ে তোলার আগে রাহুল গান্ধী প্রদেশ নেতৃত্বের মন বুঝতে তৎপর।
[আরও পড়ুন:যাদবপুরে বিক্ষোভে অনড় ছাত্রছাত্রীরা! উপাচার্যের পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন বিভিন্ন মহলে]
২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটে প্রদেশ কংগ্রেসের কঙ্কালসার চেহারাটা প্রকট হয়ে গিয়েছিল। এই অবস্থায় কংগ্রেসের হাল ফেরাতে সভাপতি রাহুল গান্ধী রাজ্য কংগ্রেসের হারানো গৌরব ফেরাতে পর্যবেক্ষক করে পাঠিয়েছেন গৌরব গগৈকে। তাঁর রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই রাহুল প্রদেশ নেতৃত্বকে তলব করেন।
তবে শুধু প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী নন, ডেকে পাঠানো হয় রাজ্যের সমস্ত শীর্ষ নেতৃত্বকে। সেইমতো তিনি জনে জনে প্রত্যেকের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন। কী করলে কংগ্রেসের ভালো হবে তিনি জানতে চান। প্রত্যেকেই যাতে মনের ভাব সরাসরি রাহুলের সঙ্গে আদানপ্রদান করতে পারেন, সেইজন্য মুখোমুখি একক-বৈঠকের ব্যবস্থা করা হয়।
রাহুল গান্ধী যেমন কথা বলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সঙ্গে, কথা বলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নানের সঙ্গেও। তেমনই গুরুত্ব দিয়ে শোনেন মালদহের দুই সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী ও মৌসম বেনজির নুরের কথাও। সকলের সঙ্গ কথা বলার পরই তিনি পশ্চিমবঙ্গের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কার সঙ্গে চলবে কংগ্রেস, সে ব্যাপারটিও স্পষ্ট করবেন কংগ্রেস সভাপতি। একইসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে বার্তা দেবেন রাহুল গান্ধী। প্রদেশ কংগ্রেসের সঙ্গে বৈঠকে রাহুল গান্ধী এদিন দলের সাংগঠনিক বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন।
সম্প্রতি পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে কংগ্রেসের। খাতায়-কলমে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল হওয়া সত্ত্বেও কংগ্রেসের আপাত অবস্থায় হয়েছে চতুর্থ বা পঞ্চম স্থানে। বহু ক্ষেত্রে নির্দলও তাঁদের হারিয়ে দিয়েছে। এই অবস্থায় কংগ্রেসের কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দিতে তৎপর হয়ে উঠেছে শাসক তৃণমূল। কংগ্রেসকে ভেঙে নিঃশেষ করে দিতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস।
মুর্শিদাবাদে অধীর চৌধুরীর গড়ের পতন হয়েছে, এবার তৃণমূলের নিশানা গনি-মিথ ভেঙে খানখান করে দেওয়া। আর উত্তর দিনাজপুরের প্রিয়রঞ্জন গড়ে তো আগেই ঘাসফুল ফুটেছে। এই অবস্থায় অধীর চৌধুরী মতো নেতাও দিশেহারা। তাঁর পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গিয়েছে। আবার কংগ্রেস এবার কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে হটাতে বদ্ধপরিকর। এই পরিস্থিতিতে রাহুল গান্ধী কী অবস্থান নেন, কী নির্দেশ দেন প্রদেশ নেতৃত্বকে, সেদিকেই নজর রাজনৈতিক মহলের।
[আরও পড়ুন:ফের কলেজে ঢুঁ মারলেন মুখ্যমন্ত্রী! কথা অভিভাবকদের সঙ্গে]