উত্তর প্রদেশে ৮০ তে ৮০ আসনেই লড়বে কংগ্রেস, ফেব্রুয়ারি থেকে প্রচারের সম্ভাবনা রাহুলের
উত্তর প্রদেশে লোকসভা নির্বাচন নিয়ে তাদের প্রাথমিক স্ট্র্য়াটেজি ঘোষণা করে দিয়েছে কংগ্রেস। এখন যা খবর তাতে ফেব্রুয়ারি থেকে এই রাজ্যে ভোটপ্রচার শুরু করে দিতে পারেন রাহুল গান্ধী।
উত্তর প্রদেশে লোকসভা নির্বাচন নিয়ে তাদের প্রাথমিক স্ট্র্য়াটেজি ঘোষণা করে দিয়েছে কংগ্রেস। এখন যা খবর তাতে ফেব্রুয়ারি থেকে এই রাজ্যে ভোটপ্রচার শুরু করে দিতে পারেন রাহুল গান্ধী। রবিবার কংগ্রেসের উত্তর প্রদেশের নেতা এবং গুলাম নবি আজাদের মধ্যে এক দীর্ঘ বৈঠক হয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন উত্তর প্রদেশের কংগ্রেসের সভাপতি রাজ বব্বর। বৈঠক শেষে ঘোষণা করা হয়েছে এই রাজ্যে ৮০টি আসনের ৮০টি-তেই লড়াই করবে কংগ্রেস। পরে জানা যায় এই রাজ্যে পরের মাস থেকেই নির্বাচনী প্রচার শুরু করে দিতে চাইছেন রাহুল গান্ধী।
হিন্দি বলয়ের রাজ্যগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লোকসভা আসন উত্তর প্রদেশে। এই রাজ্য়ের ভোটের অঙ্ক কেন্দ্রে কোন সরকার হবে তার ভাগ্য-কে অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত করে। ইতিমধ্যেই এই রাজ্যে সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টি তাদের জোটের কথা ঘোষণা করে দিয়েছে। মায়াবতী ও অখিলেশ যাদব শনিবার লখনউ-এ সাংবাদিক সম্মেলন করে বিজেপি-র ঘুম কেড়ে নেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন। কিন্তু, বিজেপি বিরোধী এই জোটে স্থান হয়নি কংগ্রেসের। শুধুমাত্র রায়বরেলি ও আমেথি লোকসভা আসন, যা গান্ধী পরিবারের নির্বাচনী খাসতালুক বলে পরিচিত, সেই দুটি এবং আরও ২টি আসন ছাড়া মায়াবতী ও অখিলেশের জোট সব আসনেই প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রাহুল গান্ধী দুবাই থেকে এই জোট নিয়ে বার্তা দেন। জানান, মায়াবতী ও অখিলেশের জোটের প্রতি তাঁর গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে। তাঁরা নিজেদের মতো করে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাকে স্বাগত। উত্তর প্রদেশে কংগ্রেস তার মতো করেই লড়াই করবে বলেও এই বার্তায় জানান রাহুল। কংগ্রেস সভাপতির এই বার্তার পরই উত্তর প্রদেশ কংগ্রেস ও কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির মধ্যে বৈঠক শুরু হয়। আর বৈঠকে থেকে বেরিয়েই গুলাম নবি আজাদ সাফ জানান, 'উত্তর প্রদেশে সবকটি আসনে লড়াই করবে কংগ্রেস।' তিনি আরও জানিয়ে বলেন, 'জোট আমরা ভাঙিনি। তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে তাঁরা আমাদের সঙ্গে জোট বাঁধবেন না। তাহলে আমরা আর কী বা করতে পারি...আমরা আমাদের নিজেদের মতো করে লড়াই করব এবং ৮০টি আসনেই প্রার্থী দেব।'
মায়াবতী ও অখিলেশের জোটে যেমন কংগ্রেস নেই, তেমনি এখনও নেই অজিত সিং-এর রাষ্ট্রীয় লোকদল। তাহলে কি উত্তর প্রদেশে রাষ্ট্রীয় লোকদলের সঙ্গে গাঁটছাড়া হতে পারে কংগ্রেসের? এমন প্রশ্নের উত্তরে গুলাম নবি আজাদ বলেন, 'আমরা শুরু থেকেই জোটের কথা বলে আসছি। যে সব দল বিজেপি-কে হারাতে চায় তাদেরকেও আমরা স্বাগত জানিয়েছিলাম। এখনও যদি কোনও দল আমাদের সঙ্গে জোট বাঁধতে চায়, তাহলে আমরা মনে করব যে তাঁরা বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়াই করতে চায়। সেক্ষেত্রে নিশ্চয় তখন নতুন করে ভেবে দেখা হবে।'
এই সাংবাদিক বৈঠকের পরই জানা যায় উত্তর প্রদেশে মোট ১৩টি নির্বাচনী জনসভা করবেন রাহুল গান্ধী। ৬টি লোকসভা পিছু একটি করে জনসভা। আর এই জনসভা ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি শুরু করে দিতে চান বলে কংগ্রেস সূত্রে খবর। এই সময় সংসদ অধিবেশনে ছুটি ঘোষণা হয়ে যাবে। আর এই অবসরেই নির্বাচনী প্রচারে ঝাঁপাতে চাইছেন রাহুল গান্ধী। পশ্চিম উত্তর প্রদেশ দিয়ে রাহুল তাঁর প্রচার শুরু করতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে সাহারনপুর বা মোরাদাবাদের মধ্য়ে কোনও এক স্থান থেকে রাহুল গান্ধী তাঁর প্রচার শুরু করবেন।
এদিকে, যেখানে বিজেপি বিরোধী জোটে নিয়ে গত কয়েক বছর ধরেই আলোচনা চলছে, সেখানে মায়াবতী ও অখিলেশ কংগ্রেস-কে ছাড়াই জোট করে নেওয়াতে বেশকিছু প্রশ্ন উঠছে। যার মধ্যে সর্বাগ্রে রয়েছে বিজেপি বিরোধী জোট দ্বিবিভক্ত হয়ে যাওয়াতে ভোটের ভাগাভাগি-তে আখেরে কে লাভ কুড়োবে। এই কারণে, কংগ্রেস ঠিক করেছে যেখানে মায়াবতী ও অখিলেশের জোট শক্তিশালী সেখানে কমজোরি প্রার্থী দেবে কংগ্রেস। যেখানে বিজেপি-র উচ্চবর্ণের প্রার্থী রয়েছে সেখানে সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করবে তারা। প্রয়োজন অনুযায়ী বুথ স্তর ও স্থানীয় স্তরে বিএসপি-সপা জোটের সঙ্গে অলিখিত সমঝোতাও করার ইঙ্গিত দিয়ে রাখা হয়েছে কংগ্রেসের তরফে।