করোনা ভাইরাসের জেরে বিশ্ব অর্থনীতিতে ধস, ঘুরে দাঁড়ানোর উপায় বাতলে দিলেন রঘুরাম রাজন
বিশ্ববাজারে বড় প্রভাব ফেলেছে করোনা ভাইরাস। চিন ছাড়িয়ে ইতিমধ্যেই করোনা ভাইরাসের থাবা বসেছে ইরানে। ইউরোপের দেশগুলিতেও সংক্রমণ বাড়ছে করোনা ভাইরাসের। ইতালিতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েকজনের। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ব বাজারের গতিবিধি নিম্নমুখী। এর জেরেই বৃহস্পতিবার ইউরোপ ও আমেরিকার শেয়ার বাজারে দেখা যায় বড় পতন।
প্রায় ১১০০ পয়েন্ট পড়ে যায় সেনসেক্স
এদিকে করোনা ভাইরাসের জেরে বিশ্ব বাজারের পতনের প্রভাব পড়েছে ভারতের শেয়ার বাজারেও। শুক্রবার শেয়ার বাজারে লেনদেন চালু হলেই প্রায় ১১০০ পয়েন্ট পড়ে যায় সেনসেক্স। গত চার মাসের মধ্যে যা সব থেকে কম। এহেন পরিস্থিতি বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞ থেকে সাধারণ মানুষ। এই পরিস্থিতিতে করোনা ভআইরাসের প্রভাব থেকে বিশ্ব বাজার ও অর্থনীতিকে বাঁচানোর উপায় জানালেন আরবিআই-এর প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন।
'করোনা ভাইরাস আটকানোর দিকে মননিবেশ করুক সরকারগুলি'
এই বিষয়ে রঘুরাম বলেন, 'এই মুহুর্তে আমি বলব যে সরকারগুলি সর্বোত্তম কাজ হল মহামারীটির বিরুদ্ধে লড়াই করা। পরবর্তী সময়ে অর্থনীতির পতনের সম্ভাবনার সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করা এখন অর্থহীন। লোকেরা এই ধারণাটি রাখতে চায় যে এই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার। মানুষ যত মনে বল পাবে, যত এই ভাইরাস নিয়ে ভয় কাটিয়ে উঠতে পারবে, তত শীঘ্র অর্থনীতি সঠিক পথে যেতে শুরু করবে। করোনা ভাইরাসের জেরে অর্থনীতি যেই ধাক্কা খাবে তা নিয়ে প্রচুর আলোচনা চলবে। বিশ্বায়নের প্রক্রিয়া এতে বিঘ্নিত হবে। তবে আমাদেরকে পর্যাপ্ত সাহস যোগাতে হবে বিনিয়োগকারীদের মনে। তবেই এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।'
ইউরোপীয় এবং মার্কিন স্টক মার্কেটগুলিতে পতন
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় এবং মার্কিন স্টক মার্কেটগুলিতে আবার সূচকে পতন হয়। বিশেষজ্ঞদের মত, চিনের বাইরে করোনা ছড়িয়ে পড়ার খবর আসতেই এই পতন হয়েছে। প্রসঙ্গত, চিনের পর করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত দেশগুলির মধ্যে অন্যতম ইরান। সেদেশে এখনও পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে এই ভাইরাসের সংক্রমণে। করোনায় আক্রান্ত হয়েছে সেদেশের ভাইস প্রেসিডেন্টও।
৪ মাসের মধ্যে সব থেকে নিচে সেনসেক্স
এদিকে বিশ্ব বাজারের এই প্রভাবের জেরে ৪ মাসের মধ্যে সব থেকে বড় পতন দেখে দালাল স্ট্রিট। সকালে বাজার খুলেতই পড়তে থাকে সূচক। ১০৮৩.৮৫ শতাংশ পতন হয়ে সেনসেক্স দাঁড়ায় ৩৮,৬৬১.৮১-এ। পাশাপাশি লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় নিফ্টির পতন হয় ৩১২ পয়েন্ট। নিফ্টি দাঁড়ায় ১১,৩২১.৮০ পয়েন্টে। এই গত পাঁচ দিন ধরে লাগাতার শেয়ার বাজারে পতন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মত বিশ্ব বাজারের মন্দার জেরেই এই সূচক পতনের রেশ থাকছে।
এশিয়া প্যাসেফিক অঞ্চলের অর্থনীতিতে প্রভাবের আশঙ্কা
অর্থনীতিবিদদের একাংশের মতে, এশিয়া প্যাসেফিক অঞ্চলের অর্থনীতি রীতিমতো ঝুঁকির মুখে পড়েছে করোনা ভাইরাস আরও ছড়িয়ে পড়ায়৷ পর্যটন শিল্পের পাশাপাশি এই ভাইরাসের জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে চিনের আমদানি রফতানিও। এর জেরে এই অঞ্চলের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বিস্তর। যদি আগামী কয়েক সপ্তাহে চিনের উহান শহরে এই মহামারী তাড়াতাড়ি নিয়ন্ত্রণ না করা যায় তবে বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধস নামবে বলে আশঙ্কা অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞদের৷