রাফালে নিয়ে ক্যাগ এর রিপোর্ট এলেও হিন্দু পত্রিকা নিজেদের অবস্থান অনড়
রাফালে নিয়ে ৩৬টি বিমানের যে চুক্তি নরেন্দ্র মোদী সরকার করেছে তা ড্যাসল্ট অ্যাভিয়েশনের সঙ্গে ১২৬টি বিমানের চুক্তির চেয়ে ভালো হয়নি।
হিন্দু পত্রিকায় এন রাম লিখেছেন, তিনজন সিনিয়র প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের আধিকারিক বলছেন, রাফালে নিয়ে ৩৬টি বিমানের যে চুক্তি নরেন্দ্র মোদী সরকার করেছে তা ড্যাসল্ট অ্যাভিয়েশনের সঙ্গে ১২৬টি বিমানের চুক্তির চেয়ে ভালো হয়নি। এই তিনজন ডোমেন এক্সপার্ট ছিলেন সেই সাত সদস্যের ভারতীয় দলের যাঁরা রাফালে চুক্তিতে দমদামকারী ভারতীয় দলে ছিলেন। এঁরাও এই দাবি করেছেন।
পাশাপাশি এটাও দাবি করা হয়েছে যে ৩৬টির মধ্যে প্রথম কোয়াড্রনের যে ১৮টি বিমান ডেলিভারি দেওয়ার সময় দেওয়া হয়েছে, সেটাও আগের বারের চেয়ে বিলম্বিত হয়েছে। অর্থাৎ দামের দিক থেকে তো বটেই, সময়ের দিক থেকেও মোদী সরকার সুবিধা করতে পারেনি বলে হিন্দু রিপোর্টে এন রাম লিখছেন।
[আরও পড়ুন:ইউপিএ-র চেয়ে এনডিএ আমলের রাফালে চুক্তি সস্তা, রিপোর্ট পেশ ক্যাগ এর ]
অথচ দাম কম ও দ্রুত রাফালে বিমান ডেলিভারির কথা কেন্দ্র সরকার দাবি করে এসেছে। এছাড়া এই তিনজন কেন্দ্রীয় আধিকারিক ভারত সরকারের 'লেটার অব কমফর্ট' নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এই তিনজন হলেন এমপি সিং পরামর্শদাতা (দাম), এআর সুলে ফিনান্সিয়াল ম্যানেজার (এয়ার) ও রাজীব বর্মা জয়েন্ট সেক্রেটারি অ্যান্ড অ্যাকুইজিশন ম্যানেজার (এয়ার)।
২০১৬ সালের ১ জুন নিজেদের আপত্তি তাঁরা দরদাম করা দলের চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন। আট পাতার চিঠি লেখেন তাঁরা। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ২৩ তারিখ ভারত-ফ্রান্স চুক্তি সাক্ষর হয়। ফলে অন্তত তিনমাস আগে এই চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের দাবি, শেষ অবধি ফ্রান্স সরকার যে দাম দিয়েছিল তা আগের বারের চেয়ে বিশেষ সুবিধার ছিল না।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে এপ্রিল মাসে নরেন্দ্র মোদীর ফ্রান্স সফরের সময় যৌথভাবে এই চুক্তি হবে বলে স্থির হয়। ৩৬টি রাফালে বিমান ফ্রান্স সরকারের কাছ থেকে কিনবে ভারত, এমনটাই জানা যায়। এজন্য দুই সরকারের মধ্যে চুক্তি হয়। ফরাসি সরকারের তরফে ড্যাসল্ট অ্যাভিয়েশন এই বিমান সরবরাহ করবে বলে জানা যায়। পরে রিলায়েন্স তাতে অফসেট পার্টনার হিসাবে যোগ দেয়।
এই নিয়ে এতদিন বিবাদের পর এদিন সংসদে ক্যাগ রিপোর্ট পেশ হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে নরেন্দ্র মোদী সরকার ফ্রান্স সরকারের সঙ্গে যে রাফালে চুক্তি করেছে তা ২০০৭ সালে করা ইউপিএ সরকারের আমলের চুক্তির চেয়ে ২.৮৬ শতাংশ সস্তা। রাজ্যসভায় যে রিপোর্ট ক্যাগ এর তরফে পেশ করা হয়েছে তাতে ৩৬টি রাফালে বিমান কিনতে কত টাকা খরচ হয়েছে তার সামগ্রিক উল্লেখ নেই। তবে কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের রিপোর্টে দাম পরীক্ষণের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিন ১৪১ পাতার যে ক্যাগ রিপোর্ট পেশ হয়েছে তাতে বলা হয়েছে জেটের ফ্লাই অ্যাওয়ে প্রাইস একই রয়েছে। তবে সামগ্রিকভাবে ২.৮৬ শতাংশ দাম কমেছে বলে জানানো হয়েছে। যদিও হিন্দু পত্রিকা ফের একবার রাফালে নিয়ে কেন্দ্রের ভিন্নমুখী অবস্থান নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করেছে।