রাম মন্দিরের ভূমিপুজো শেষ হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ডিং কবিগুরুর 'দীনদান'
রাম মন্দিরের ভূমিপুজো শেষ হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ডিং কবিগুরুর 'দীনদান'
এ কাল হোক বা সেকাল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সবসময়ই প্রাসঙ্গিক। তাঁর লেখা কবিতার সঙ্গে যেন অদ্ভুতভাবে মিল খুঁজে পাওয়া যায় বর্তমান সময়ের। সেরকমই একটি কবিতা হল 'দীনদান’। যা ৫ অগাস্ট থেকে ক্রমাগত সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ট্রেন্ড হয়ে উঠেছে। অনেক নেটিজেনই এই কবিতার বাংলা ও ইংরাজি অনুবাদ লিখে পোস্ট করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
রাম মন্দির ও করোনা ভাইরাস
৫ অগাস্ট বুধবার দেশের ঐতিহাসিক দিন বলে চিহ্নিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিনই অযোধ্যায় রাম মন্দিরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন তিনি। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে এই দিনটি এসেছে। বুধবার রীতি-রেওয়াজ আড়ম্বরের সঙ্গে পালন করা হয় রাম মন্দিরের ভূমি পুজো। তবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন যখন করা হয়েছে তখন গোটা বিশ্ব দাঁড়িয়ে রয়েছে মহামারির মধ্যিখানে। বুধবারই রাম মন্দিরের ভিত্তি প্রস্তরের দিনই ভারতে কোভিড-১৯-এ মৃত্যুর সংখ্যা পৌঁছায় ৪০ হাজারে, বিশ্বের মধ্যে যা পঞ্চম স্থানে। এছাড়াও এদিনই একদিনে রেকর্ড মৃত্যু হয় ৯১৮ জনের, যা প্রথমবার ৯০০ অতিক্রম করল মৃত্যুর ক্ষেত্রে।
১২০ বছর আগে লেখা হয় কবিতাটি
রাম মন্দিরের জাঁক জমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের সঙ্গে অনেকেই মিল খুঁজে পেয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা ‘দীনদান'-এর মধ্যে। কলকাতার প্রেসিডেন্সী ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী বনজ্যোৎস্না লাহিড়ি প্রথম এই কবিতাটি ফেসবুকে পোস্ট করে লেখেন যে ঠিক ১২০ বছর (বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী) আগে ৫ অগাস্ট এদিনই এই কবিতাটি লেখা হয়েছিল। প্রসঙ্গত, রবীন্দ্রনাথ এই কবিতাটি লিখেছিলেন ১৩০৭ সালের, ২০ শ্রাবণ, যা এ বছরের ৫ অগাস্ট।
কবিতার বিষয়বস্তু
কবিতায় এক ঋষি রাজাকে বলছেন যে তিনি ২০ লক্ষ স্বর্ণমুদ্রা দিয়ে যে মন্দিরটি তৈরি করেছেন, সেখানে ইশ্বর নেই। রাজা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ ঋষিকে নাস্তিক অ্যাখা দিয়ে জানান যে রত্নসিংহাসনে রতনবিগ্রহ, সেটা ফাঁকা। ঋষি তখন রাজার প্রশ্নের উত্তরে জানান যে ফাঁকা নয়, তা রাজদম্ভে পূর্ণ। ঋষি তখন রাজাকে জানান যে একই বছরে মন্দির তৈরিতে তাঁর এত ধন-রাশি ব্যয় করা ভুল সময় ছিল, কারণ ওই সময় তাঁর দেশের লোকেরা এক বিপর্যয়ের শিকার হয়েছিলেন এবং তাঁর দরজায় সাহায্য চাইতে এসেছিলেন। কিন্তু তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ঋষি রও জানিয়েছেন যে রাজা তাঁর প্রজাদের আশ্রয় দিতে পারেন না, তিনি ভগবানকে কী আশ্রয় দেবেন?
সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ড
এই কবিতাকে অনুসরণ করে অনেকেই করোনা ভাইরাসের সময়ের সঙ্গে এই কবিতার বক্তব্যের মিল খুঁজে পান। বহু নেটিজেনই জানিয়েছেন যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেইসময়কার কবিতা আজকের যুগেও যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে তাই এখন ‘দীনদান' কবিতার কিছু অংশ ট্রেন্ড হিসাবে দেখা গিয়েছে। তবে রবীন্দ্রনাথের কবিতা সবসময়ই যুগপোযোগী তা আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল।
রাম মন্দিরের জজ্ঞের আগুনে পুড়ছে পাকিস্তান! সাম্প্রদায়িকতা থেকে দূরে থাকতে বলল ভারত