মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে কাকে পছন্দ, কোন দলই বা এগিয়ে, জনমত সমীক্ষায় পাঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচন
মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে কাকে পছন্দ, কোন দলই বা এগিয়ে, জনমত সমীক্ষায় পাঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচন
পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যে পাঞ্জাব এক অন্যতম রাজ্য। গোয়া, উত্তরাখণ্ডের সঙ্গে এ রাজ্যেও ভোট হবে এক দফায়। তবে সন্ত রবিদাস জয়ন্তীর কারণে পাঞ্জাবে ভোট পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। ১৪ ফেব্রুয়ারির বদলে ২০ ফেব্রুয়ারি ভোট হবে এই রাজ্যে। এই মাঝা প্রদেশের ভোট নিয়ে ভারতের সবচেয়ে বড় জনমত সমীক্ষা করেছে দেশের এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম। এই সমীক্ষা অনুযায়ী পাঞ্জাববাসীদের মুখ্যমন্ত্রী মুখ হিসাবে প্রথম পছন্দ চরণজিৎ সিং চান্নি এবং এরপরই দ্বিতীয় পছন্দ হিসাবে নাম উঠে এসেছে আম আদমি পার্টির ভগমন্ত মানের।
মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে প্রথম পছন্দ চরণজিৎ চান্নি
এই জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী, পাঞ্জাবের ৩৫ শতাংশ মানুষ তাঁদের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে চরণজিৎ সিং চান্নিকে চান। অন্যদিকে উত্তরের এই রাজ্যের ২৩ শতাংশ মানুষের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে পছন্দ ভগমন্ত মানকে এবং রাজ্যের ২২ শতাংশ মানুষ চান সাদের (শিরোমণি অকালি দল) সুখবীর সিং বাদলকে।
বিপুল দলিত ভোট পেতে পারেন চরণজিৎ চান্নি
প্রসঙ্গত, পাঞ্জাবের রাজনৈতিক ইতিহাসে এই প্রথম কোনও দলিত-শিখ বসেছেন মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে। কৃষি আইন প্রত্যাহার, স্বর্ণমন্দির অপবিত্রতা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ঘাটতি সহ একাধিক রাজনৈতিক উত্থান-পতন হওয়া সত্ত্বেও মাত্র তিনমাস মুখ্যমন্ত্রীর দফতর সামলানো এই কংগ্রেস নেতা অবিশ্বাস্য সমর্থন পেয়েছে পাঞ্জাববাসীর পক্ষ থেকে। জনমত সমীক্ষায় মনে করা হচ্ছে যে চরণজিৎ চান্নি পাঞ্জাবের প্রথম দলিথ মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার কারণে দলিত ভোটব্যাঙ্কের বড় অংশের ভোট তাঁর পক্ষে আসবে। যদিও এর আগেই চরণজিৎ চান্নি অভিযোগ তুলেছিলেন যে তিনি যাতে ভোটে দাঁড়াতে না পারেন তার জন্য কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে কাজে লাগাচ্ছে বিজেপি।
দ্বিতীয় পছন্দ আপের ভগমন্ত মান
এরপর চলে আসা যাক পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মুখের দ্বিতীয় পছন্দের দিকে। আম আদমি পার্টি বা আপ প্রার্থী ভগমন্ত মান এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মুখ হিসাবে তালিকায় দ্বিতীয় নম্বরে রয়েছেন। যা গতবারের নির্বাচনের তুলনায় অরবিন্দ কেজরিওয়ালের শিবিরের জন্য আশ্চর্যজনক ১০ শতাংশ লাভ হিসাবে দেখা যেতে পারে। ২০১৪ সাল থেকেই সঙ্গরুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে জিতে আসছেন তিনি। সেকারণে সেই লোকসভা কেন্দ্রের ধুরি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করা হয়েছে তাঁকে। প্রসঙ্গত, গত বিধানসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মুখের নাম ঘোষণা না করেই লড়েছিল আপ। তাতেই বিপুল সাফল্য এসেছিল। পাঞ্জাবে প্রধান বিরোধী দলের আসনে বসেছিল আম আদমি পার্টি। আবারও তাই একই ছক কষে ময়দানে নেমেছেন আপ সুপ্রিমো।
অপছন্দের তালিকায় কারা রয়েছেন
পাঞ্জাব লোক কংগ্রেস থেকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং মাত্র ৭ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তাঁকে দেখার জন্য। অমরিন্দরের পরেই রয়েছেন নভজ্যোত সিং সিধু, তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চান রাজ্যের ৫ শতাংশ ভোটার।
কোন দল এগিয়ে–পিছিয়ে
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী, যদি দলভিত্তিক ঐকমত্য বিবেচনায় নেওয়া হয় তবে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস পার্টি ২০২২ সালে পাঞ্জাবে ১২-১৩টি আসন হারাবে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে, শিরোমণি আকালি দল, যারা কৃষি আইন কার্যকর হওয়ার পরে বিজেপির সঙ্গে জোট ছেড়েছে, তারা আসন্ন নির্বাচনে ৯-১০টি আসনের বিশাল লাভের সাক্ষী হতে পারে। একইভাবে, আম আদমি পার্টিও ২০১৭ সালের তুলনায় এ বছর বেশি ক্ষমতা নিয়ে নিজেদের অবস্থানে থাকতে পারে বলে মনে করছে জনমত সমীক্ষা। এর মতে, আপ এ বছর পাঞ্জাব বিধানসভায় ৫-৬টি আসনের বেশি আসন পাবে বলে আশা করছে।