শতদ্রু–যমুনা লিঙ্ক ক্যানেল তৈরি হলে জ্বলবে পাঞ্জাব, হুঁশিয়ারি ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংয়ের
শতদ্রু–যমুনা লিঙ্ক ক্যানেল তৈরি হলে জ্বলবে পাঞ্জাব, হুঁশিয়ারি ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংয়ের
হরিয়ানার সঙ্গে জলবন্টন ইস্যুতে সরব হলেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং। তিনি মঙ্গলবার রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন যে তিনি শতদ্রু–যমুনা লিঙ্ক ক্যানেলের (এসওয়াইএল) ঘোর বিরোধী এবং হরিয়ানার সঙ্গে জলবন্টন নিয়ে কেন্দ্র যদি চাপ দেয় তবে পাঞ্জাব জ্বলবে। মঙ্গলবার এই বিষয় নিয়ে ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং ভিডিও কনফারেন্সে বৈঠক করেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর ও কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াতের সঙ্গে। পাঞ্জাব মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন যে শতদ্রু–যমুনা লিঙ্ক ক্যানেল অত্যন্ত স্পর্শকাতর একটি বিষয় যা জাতীয় সুরক্ষা বিঘ্নিত করতে পারে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই এই বৈঠক
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই এই বৈঠকটি ডাকা হয়, যেখানে শীর্ষ আদালত গত ২৮ জুলাই দীর্ঘদিনের এই ইস্যু নিয়ে দুই রাজ্যের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে বলেছিল। হরিয়ানা ও রাজস্থানের সঙ্গে জলবন্টন করতে নারাজ পাঞ্জাব, বরং পাঞ্জাবের পক্ষ থেকে বলা হয় যে এতে রেহাই দেওয়ার কিছু নেই। পাঞ্জাব সরকারের বিবৃতি অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে শেখাওয়াতকে বলেন, ‘জাতীয় সুরক্ষার দিকে নজর রেখে এই বিষয়টি নিয়ে ভাবা উচিত।' মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘শতদ্রু-যমুনা লিঙ্ক করার যদি সিদ্ধান্ত নিয়ে নেওয়াই হয় তবে পাঞ্জাবে অশান্তি শুরু হয়ে যাবে এবং তা জাতীয় সুরক্ষা সংক্রান্ত সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। যার প্রভাব হরিয়ানা ও রাজস্থানে গিয়েও পড়বে।'
অমরিন্দর সিংয়ের আশঙ্কা, সুযোগ নিতে পারে পাকিস্তান
শেখাওয়াত ও খট্টর দিল্লি থেকে এই বৈঠকে যোগ দেন। পরে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন যে দুই মুখ্যমন্ত্রী ফের এই নিয়ে বৈঠকে বসবেন। অমরিন্দর সিং জানিয়েছেন, জাতীয় সুরক্ষার বিষয় এই শতদ্রু-যমুনা লিঙ্ক, পাঞ্জাব সব দিক থেকে ঝুঁকির মধ্যে থেকে যাবে। তিনি সতর্ক করে জানিয়েছেন, পাকিস্তান ক্রমাগত ঝামেলা পাকানোর চেষ্টা করে চলেছে এবং তারা নিষিদ্ধ শিখ ফর জাস্টিস (এসএফজে)-এর মাধ্যমে রাজ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জলবন্টন এই ইস্যুকে নিয়ে ফের রাজ্য অস্থির হয়ে উঠতে পারে।
চণ্ডীগড়ে একই ইস্যু নিয়ে দুই মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক হবে
অমরিন্দর সিং এই বৈঠকটিকে ‘মৈত্রী ও সৌহার্দ্যপূর্ণ' বলে ব্যাখা করেছেন। অন্যদিকে খট্টর আশা করেছিলেন ধসক-পুরনো এই ইস্যুটি এই বৈঠকেই হয়ত সমাধান সূত্র মিলতে পারে। খট্টর বলেন, ‘শতদ্রু-যমুনা লিঙ্ক হওয়া উচিত বলে আমরা আমাদের অবস্থানে স্থির ছিলাম। সুপ্রিম কোর্টও একই কথা বলেছে। বৈঠকে স্থির হয়েছে এই সমস্যা নিয়ে চণ্ডীগড়ে ফের একবার বৈঠক হবে দুই মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে। তবে এখনও তারিখ ও সময় নির্ধারণ হয়নি। তারপরই তারা কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের কাছে যাবেন।'
দুই রাজ্যে ঝামেলার সৃষ্টি ১৯৮২ সাল থেকে
শতদ্রু-যমুনা লিঙ্ক নিয়ে দুই রাজ্যের মধ্যে ঝামেলার কারণে পাঞ্জাবের দিকের খালের কাজ এখনও অসম্পূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ১৯৮২ সালে এই খাল নির্মাণ শুরু হয়েছিল। এই খালের কাজ শুরু হতেই শিরোমণি অকালি দল ব্যাপক অশান্তির সৃষ্টি করে পাঞ্জাবে। বিভিন্নভাবে এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হলেও, তা কোনওভাবেই সম্ভব হয়নি। সেই সময় থেকেই যমুনা নদীর জলবন্টন নিয়ে দুই রাজ্যের মধ্য বিবাদ অব্যাহত। অন্যদিকে, পাঞ্জাব ইরাবতী-বিয়াস নদীর জলের পরিমাণ পুনর্নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে এবং হরিয়ানা তার সাড়ে ৩ মিলিয়ন একর-ফুট (এমএএফ) অংশ পাওয়ার জন্য এসওয়াইএল খালটি সমাপ্ত করার চেষ্টা করছে।
'সীমান্ত বিবাদ মেটানোই জিনপিংয়ের মূল লক্ষ্য’, সংঘাতের আবহে সাফাই চিনা বিদেশ মন্ত্রকের