মৃত ছেলের শুক্রানু থেকে ঠাকুমা হলেন পুনের মহিলা, চিকিৎসা বিজ্ঞানের কামালে হইচই
বিয়ে না করেও যমজ সন্তানের বাবা হয়েছেন মৃত যুবক। আর তাঁর মা হয়েছেন ঠাকুমা।
যুবক সন্তান হারানোর কষ্ট যে কতটা কঠিন তা ভুক্তভোগী ছাড়া কেউ বুঝতে পারেন না। পুনের এক মহিলারও সেই একই অবস্থা হয়েছিল। অসুস্থ যুবক ছেলে দুইবছর আগে ক্যানসারে ভুগে মারাও গিয়েছেন। তবে তাঁর মা-কে দিয়ে গিয়েছেন নতুন উপহার, এক অন্য স্মৃতি। বিয়ে না করেও যমজ সন্তানের বাবা হয়েছেন মৃত যুবক। আর তাঁর মা হয়েছেন ঠাকুমা।
সারোগেসির মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে এই ঘটনা। অসুস্থ ছেলের শুক্রানু জমিয়ে রেখে তা নিজের গর্ভে ধারণ করতে চেয়েছিলেন মহিলা। তবে বয়সের কারণে পারেননি। তবে যুবকের তুতো বোন সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন। দাদার শেষ স্মৃতি হিসাবে গর্ভে ধারণ করেন সন্তান। এই অবিশ্বাস্য ঘটনায় সারা দেশে সাড়া পড়ে গিয়েছে।
ঘটনার যেমন এক মানবিক দিক রয়েছে। তা বড়ই করুণ ও আবেগমথিত। তেমনই বিজ্ঞানের দিক থেকে দেখতে গেলে সারোগেসি এখন কতটা সরল হয়ে গিয়েছে তা বেশ চমকপ্রদ বিষয়। এই সারোগেসির মাধ্যমেই পুনের সহয়াদ্রী হাসপাতালে সোমবার একটি ছেলে ও একটি মেয়ের জন্ম হয়েছে।
মৃত যুবকের নাম প্রথমেশ পাটিল। পেশায় শিক্ষিকা রাজশ্রী পাটিলের ছেলে তিনি। প্রথমেশেরই ক্যানসার ধরা পড়ে। ব্রেন টিউমার হয়েছিল ২০১০ সালে ও পরে তিনি মারা যান। তার আগেই সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শে প্রথমেশ শুক্রানু জমিয়ে রাখেন।
ছেলের খবর জানতে পেরে ২০১৩ সালে তাঁকে মুম্বই ফিরিয়ে এনে চিকিৎসা শুরু করেন রাজশ্রীদেবী। প্রথমে চিকিৎসায় সাড়া দিলেও পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় ২০১৬ সালে সেপ্টেম্বরে প্রথমেশের মৃত্যু হয়।
সেই ঘটনার পর রাজশ্রীদেবী জার্মানির হাসপাতালে যোগাযোগ করেন। সেখানে প্রথমেশের শুক্রানু জমানো ছিল। সেটি ভারতে নিয়ে আসা হয়। রাজশ্রীদেবী সহয়াদ্রী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন যাতে আইভিএফ পদ্ধতিতে ছেলের শুক্রানু ব্যবহার করে সন্তানের জন্ম দেওয়া যায়।
হাসপাতালের চিকিৎসক মহিলার মানসিক দৃঢ়তা দেখে অবাক হয়ে যান। পুত্রহারা মা-কে তাই সবরকম সাহায্য করতে ঝাঁপিয়ে পড়ে হাসপাতাল। তারপর বিজ্ঞানের উন্নতির যুগে এক নতুন দৃষ্টান্তের সৃষ্টি হল ভারতের মাটিতে। পুত্রহারা মা ফিরে পেলেন ছেলেকে নাতির রূপে। সঙ্গে আর একটি নাতনিও পেয়েছেন তিনি।