৪৭২ মেয়ের বিয়ে দিয়ে গর্বিত বাবা!
আহমেদাবাদ, ১৯ জুন : কে বলে, মেয়েরা বাবাদের কাছে বোঝা হয়। অন্তত ভাবনগরের শিল্পপতি মহেশ সাবানীর কাছে তা নয়। ফাদার্স ডে উপলক্ষে ৪৭২জন বিবাহিত মেয়ের থেকে অভিনন্দন পেয়ে আরও গর্বিত মহেশবাবু।
এই ৪৭২ জন মেয়ের সঙ্গে হয়তো রক্তের সম্পর্ক নেই মহেশবাবুর। কিন্তু পিতৃহারা এই মেয়েদের কাছে কিন্তু বাবা বলতে একমাত্র তিনি। তাদের দায়িত্ব নেওয়া থেকে শুরু করে বিয়ের ব্যবস্থা করা পর্যন্ত সবকিছুই করেছেন ভাবনগরের এই দিলদরিয়া।
আজ থেকে ১০ বছর আগে, যখন মহেশবাবুর দাদা মারা যান তখন তাঁর বয়স ৩৭ বছর। মৃত দাদার দুই মেয়ের বিয়েতে 'কন্যাদান' করেছিলেন তিনি। আর তখনই তিনি অনুভব করেন আরও কত পিতৃহারা কন্যারা রয়েছে তাঁর নিজের শহরেই। ২০০৮ সাল থেকে শুরু হয় মহেশবাবুর নতুন ভূমিকা।
বাবা না থাকায় যে মেয়েরা অসুবিধার মধ্য়ে পড়ে, বিয়ে হচ্ছে না, তাদের পাশে এসে দাঁড়াম মহেশবাবু। তাদের বিয়ে দেওয়া তাদের দায়িত্ব পালন করার অঙ্গীকার নেন তিনি। এর পর থেকেই বার্ষিক বিয়ের ব্যবস্থা করতে শুরু করেন মহেশবাবু।
ভাবনগরের রাপরদা গ্রামের মানুষ তিনি। তাঁর বাবা বল্লভভাই ৪০ বছর আগে শহরে এসে কাজ করতে শুরু করেন। প্রথমে হিরা পালিশের কাজ করতেন তিনি। তারপর ক্রমেই তিনি নিজের একটি ছোট দোকান খোলেন। বল্লবভাইয়ের পরিবার এখন গুজরাতের বিত্তশালী পরিবার। প্রত্যেক মেয়ের বিয়ের জন্য ৪ লক্ষ টাকা খরচ করার সামর্থ রাখেন মহেশবাবু এবং খরচও করেন।
মহেশবাবুর কথায়, "যে মহিলারা স্বামীকে হারায় তাদের ক্ষেত্রে একা হাতে মেয়ের বিয়ে দেওয়াটা খুবই কঠিন চ্যালেঞ্জ।" মেয়েদের বিয়েতে সোনা- রূপোর গয়না দেওয়া ছাড়াও কাপড়, বাসন এমনকি ইলেকট্রনিক সামগ্রীও দেন মহেশবাবু। তবে এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য, মেয়েদের বিয়ের ক্ষেত্রে জাতপাত ধর্মের কোনও ভেদাভেদনেই মহেশবাবুর নজরে। জাতপাতধর্ম নির্বিশেষে তিনি মেয়েদের বিয়ের ব্যবস্থা করেন।
কন্যাভ্রূণ হত্যা, মেয়ে হওয়ায় বধূ নির্যাতন এসব খবরের মাঝে মহেশবাবুর মতো মানুষ সত্যিই নতুন অক্সিজেন, নয়া অনুপ্রেরণা।