অ-গান্ধী প্রেসিডেন্ট পেতে চলেছে জাতীয় কংগ্রেস! একনজরে সম্ভাব্যদের তালিকা
কংগ্রেস সভাপতি পদে রাহুল গান্ধী ফিরে আসা নিয়ে যেরকম ধন্দ রয়েছে, সেরমই একটি ক্ষীণ সম্ভাবনা রয়েছে যে কংগ্রেসের গদিতে বসতে পারেন প্রিয়াঙ্কা। তবে সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেন প্রিয়াঙ্কা নিজেই। অবশ্য সেটি শুধু মাত্র মিডিয়াকে জবাব দিতেই কি, তা বোঝা মুশকিল। কারণ বর্তমানে কংগ্রেসে গান্ধীদের একছত্র আধিপত্ব বিরাজ করে। এবং এটি পরিবারতন্ত্রের সামিল বলে অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন মহলে।

কংগ্রেসের সভাপতি হতে পারেন কোনও অগান্ধী নেতা?
এমনকি গান্ধীদের এই ভাবে কংগ্রেসের ক্ষমতার রাশ ধরে থাকা মেনে নিতে পারছেন না দলেরই বহু নেতা। জল্পনা, উস্কানি, কানাঘুষোর মধ্যেই কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ ফাটল আরও দীর্ঘায়িত হওয়ার সম্ভাবনা দেখ দিয়েছে। এই আবহে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী রাহুলের সুরে সুর মিলিয়ে জানিয়ে দিলেন, তিনি চান না যে কংগ্রেসের মাথায় কোনও গান্ধী বসুক। প্রসঙ্গত, রাহুল যখন গতবছর পদ ছেড়েছিলেন, তখন তিনি এই কথাটাই বলেছিলেন। তবে সকথা যদি মানতেই হয়, তবে কংগ্রেসের সভাপতি হতে পারেন কোন অগান্ধী নেতারা?

সুশীল কুমার শিন্ডে
কংগ্রেস প্রেসিডেন্টের জন্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুশীল কুমার শিন্ডে তার অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হবেন বলে মত বিশেষজ্ঞদের। গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সুশীলকে পদে বসিয়ে রীতিমতো নিজেদের হাতেই ক্ষমতা রাখতে পারেন গান্ধী পরিবার। ২০০২ সালে সুশীল কংগ্রেসের হয়ে দেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হয়েছিলেন। প্রাক্তন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী শিন্ডে অন্ধ্রপ্রদেশের রাজ্যপালও ছিলেন। যদিও ২০১৪ ও ২০১৯ সালে পরপর দুবার লোকসভা নির্বাচনে হেরে যান তিনি।

অশোক গেহলট
বর্তমানে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকা এই বর্ষীয়ান নেতার কারণে কংগ্রেসে বড় ভাঙন হতে পারত। আবার একদিক দিয়ে দেখতে গেলে গেহলটের হাত ধরেই কংগ্রেসের ভাঙন আটকানো সম্ভব হয়েছে এবং রাজস্থানে এখনও কংগ্রেসের সরকার দাঁড়িয়ে রয়েছে। ২০১৭ সালে গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনের সময় কংগ্রেসের হয়ে ব্যপক প্রচার চালিয়ে নজর কেরেছিলেন অশোক। যদিও বর্তমান পরিস্থিতিতে রাহুল গান্ধীর নজরে মার্কস হারিয়েছেন এই বর্ষীয়ান নেতা। তবে তৃণমূল স্তর থেকে রাজনীতি করা এই নেতাকে কংগ্রেসের গদিতে বসিয়ে চমক দিতেই পারে হাইকমান্ড।

সচিন পাইলট
টিম গান্ধীর অন্যতম বড় নাম। কয়েকদিন ধরে অশোক গেহলটের সঙ্গে ক্রমাগত রেষারেষির জেরে এক পর্যায়ে মনে করা হয়েছিল কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে যাবেন সচিন। তবে গান্ধীদের সঙ্গে দেখা করার পর ফের দলের সঙ্গে ফিরে এসেছেন সচিন। এই অবস্থায় জানা গিয়েছে, বেশ কিছু শর্ত সামনে রেখেছেন সচিন। এদিকে সচিনের উপর এই বিশ্বাস রাখতে কি পারবে হাইকমান্ড? উঠছে এই প্রশ্ন। তবে যদি বিজেপিকে রুখতে দলে নতুন জোয়ার আনতে হয়, তবে সচিনের থেকে ভালো কেউ এই পদে বসতে পারেন না।

মল্লিকার্জুন খার্গে
দলীয় হাইকমান্ডের খুব ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত এই বর্ষীয়ান নেতা। যেকোনও জায়গায় কোনও রাজনৈতিক ঝামেলা মেটাতে একবাক্যে তার উপরেই ভরসা রাখে দল। গত লোকসভায় কংগ্রেস সাংসদীয় দলের পরধান ছিলেন মল্লিকার্জুন। যদিও ২০১৯ সালে নিজের লোকসভা আসনে হারেন খার্গে। তবে তাঁর রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলবে না।

শশী থারুর
ভারতে তরুণদের অন্যতম আইকন হয়ে উঠতে পারেন এই দক্ষিণী কংগ্রেস সাংসদ। প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী তথা শিক্ষামন্ত্রী তরুণদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়, যা কাজে লাগিয়ে বিজেপির পালের হাওয়া কাড়তে পারে কংগ্রেস। দলেক কেরল ইউনিট শশীর হাতের তালুতে। এর জেরেই গল লোকসভা নির্বাচনে সারা দেশে ভরাডুবি হলেও কংগ্রেস কেরলে ২০টির মধ্যে ১৯টি আসন জিতেছিল। তবে শশী গ্রামীণ ভোট বেসকে কংগ্রেসের কাছে টানতে পারবেন না বলে অনেকের ধারণা।

গুলাম নবি আজাদ
কংগ্রেসের মধ্যে এবং বাইরে আজাদ একজন শ্রদ্ধাভাজন রাজনৈতিক। রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা পদে রয়েছেন আজাদ। তবে দেশের বর্তমান পরিস্থিতির নিরিখে কংগ্রেস হয়ত দলের সভাপতি পদে একজন মুসলিমকে চাইবে না।

ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং
যে দুটি রাজ্যে কংগ্রেস গত লোকসভায় ভালো করেছিল তার মধ্যে একটি হল পাঞ্জাব। এই রাজ্যের মোট ১৩টি লোকসভা আসনের মধ্যে কংগ্রেসের ঝুলিতে গিয়েছিল ৮টি।

মনমোহন সিং
এছাড়া প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে এই দায়িত্বে বসানো হতে পারে। যদিও প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীনও তিনি এই পদে ছিলেন না। সেই সময় কংগ্রেস সভানেত্রী তথা ইউপিএ চেয়ারপার্সন ছিলেন সনিয়া গান্ধী। আবার রাহুল গান্ধীর সঙ্গেও খুব একটা ভালো সম্পর্ক ছিল না মনমোহন সিংয়ের।

পি চিদাম্বরম
একে অ্যান্টনি, আহমেদ প্যাটেল বা পি চিদাম্বরমের মতো গান্ধী পরিবার ঘনিষ্ঠ নেতাদেরও এই পদে বসানো হতে পারে। যদিও চিদাম্বরম বা আহমেদ প্যাটেলের নির্বাচনী সংগঠন তৈরি করার ক্ষমতি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে দলের অন্দরেই।
চিন-মার্কিন যুদ্ধ আসতে আর বেশি দেরি নেই? রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর তাবড় বার্তা